ন্যাশনালে তদন্ত কমিটি
এক রোগীর ইঞ্জেকশন ‘ভুল’ করে অন্যকে, মৃত্যু
বাঁ পা ভাঙলে ডান পায়ে প্লাস্টার করার রসিকতা সর্বজনবিদিত। এ ক্ষেত্রে অবশ্য রসিকতা নয়, সত্যিই সাপেকাটা রোগীর ইঞ্জেকশন শ্বাসকষ্টের রোগীকে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এই ‘ভুল’-এর জেরেই বুধবার রোগীর মৃত্যু ঘটেছে বলেও অভিযোগ। ঘটনার তদন্ত করতে তড়িঘড়ি তিন সদস্যের কমিটি গড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ময়না-তদন্তও হয়। রাতেই তার রিপোর্ট স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে তাঁরা সরকারি ভাবে কিছু বলবেন না।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, তদন্ত রিপোর্টে ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হলেও তার জেরে মৃত্যুর বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই ইঞ্জেকশনের জেরে কোনও ভাবেই রোগীর মৃত্যু হতে পারে না। মৃত্যু হয়েছে সেপ্টিসেমিক শক-এ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বোড়ালের বাসিন্দা প্রাণকৃষ্ণ সরকার (৫০) মঙ্গলবার গভীর রাতে সেপ্টিসেমিয়া নিয়ে ন্যাশনালের রামমোহন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। এম আর বাঙুর হাসপাতাল থেকে তাঁকে ন্যাশনালে রেফার করা হয়েছিল। চিকিৎসকদের দাবি, প্রাণকৃষ্ণবাবুর শারীরিক অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক ছিল। ওই রাতেই সাপেকাটা রোগী অজিত নস্করও ন্যাশনালের একই ওয়ার্ডে ভর্তি হন। অভিযোগ, কর্তব্যরত নার্স অজিতবাবুর জন্য বরাদ্দ ইঞ্জেকশনটি প্রাণকৃষ্ণবাবুকে দিয়ে দেন এবং তার পরেই প্রাণকৃষ্ণবাবুর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়, খিঁচুনিও হয়। এ দিন সকালে তাঁর মৃত্যু হলে ভুল ইঞ্জেকশনের জেরে মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন প্রাণকৃষ্ণবাবুর পরিবারের লোকেরা। তাঁর ছেলে পিনাকী সরকার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। দুপুরে এই ঘটনা ঘিরে হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায়। বিশাল পুলিশবাহিনী হাসপাতালে যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সুবীর বন্দ্যোপাধায়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে বলে ঘোষণা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রাণকৃষ্ণবাবুর পরিবারের লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ময়না-তদন্তের ব্যবস্থা করে। সুপার পার্থ প্রধান আশ্বাস দেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা হবে। তিনি বলেন, “ওই ওয়ার্ডের মেঝেতে ২৫ জন রোগী ছিলেন। আমরা কোনও রোগীকে ফেরাই না। কিন্তু রোগীর ভিড় উপচে পড়লে হাসপাতালে নানারকম সমস্যা হয়। যদিও এটা কোনও মারাত্মক ভুলের যুক্তি হতে পারে না। ভুল করলে শাস্তি হবেই।” কর্তৃপক্ষ জানান, মেঝেতে প্রাণকৃষ্ণবাবুর ঠিক পাশেই অজিতবাবু ছিলেন। তাঁদের পাশে আরও এক সঙ্কটাপন্ন রোগী ছিলেন। তিন জনকে পরীক্ষা করেই চিকিৎসকেরা নানা রকমের ওষুধ এবং ইঞ্জেকশন প্রেসক্রাইব করেন। কর্তৃপক্ষের যুক্তি, তাড়াহুড়ো করতে গিয়েই হয়তো এই ভুলটি ঘটেছে। এর পরে মেঝেতে রোগীভর্তি আদৌ করা হবে কি না, সে বিষয়েও তাঁরা নতুন করে ভাবনাচিন্তা করবেন বলে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.