এখন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মিড-ডে মিল চালু আছে। রাজ্য সরকার চাইছে, দশম শ্রেণি পর্যন্ত দুপুরের খাবার দেওয়া হোক। এই আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখছেন। বুধবার বিধানসভায় এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এ দিন বিধানসভায় শিক্ষা দফতরের ব্যয়-বরাদ্দ অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব আনেন শিক্ষামন্ত্রী। রাজ্যের সর্বত্র মিড-ডে মিল ঠিকমতো চলছে না বলে অভিযোগ জানান বিরোধীরা। জবাবে ব্রাত্যবাবু বলেন, “আরও বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে যাতে এই প্রকল্পের আওতায় আনা যায়, সেই জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাব এসেছিল। মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গেই তা অনুমোদন করেন।” এর পরেই কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীকে চিঠি লিখে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মিড-ডে মিল চালু করার প্রস্তাব পাঠানোর কথা জানানো হয়। পাঠ্যক্রমের বোঝায় ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছে। তাই পরীক্ষা ব্যবস্থারও সংস্কার জরুরি বলে জানান বামফ্রন্টের বিধায়ক প্রাক্তন মন্ত্রী প্রবোধচন্দ্র সিংহ। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “দফতরের পক্ষ থেকে সিলেবাস কমিটিকে কয়েকটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে পাঠ্যক্রমের বোঝা কমানো, পরীক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার, পূনর্মূল্যায়ন ইত্যাদি রয়েছে।” ব্রাত্যবাবু জানান, ইউনিট টেস্ট বছরে এক বা দু’বার করা যায় কি না, সেটাও দেখতে বলা হয়েছে শিক্ষা দফতরের প্রস্তাবে। সিলেবাস কমিটি এই সবই খতিয়ে দেখছেন বলে শিক্ষামন্ত্রী জানান। বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেওয়া এবং ফলাফল যথাসময়ে প্রকাশ করার সব ব্যবস্থাই হয়েছে।
|
কথা ছিল, বুধবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যের জমিনীতি ছাড়পত্র পাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হল না। রাজ্যের জমিনীতির খসড়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি মন্ত্রিগোষ্ঠী কী রিপোর্ট দিয়েছে, তা তাঁর জানা নেই বলে এ দিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে উল্লেখ করেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। এর পরেই ঠিক হয়, মানসবাবুর মতামত জেনে পরের মন্ত্রিসভার বৈঠকে জমিনীতি চূড়ান্ত করা হবে। ক্ষমতায় এসে রাজ্য সরকার একটি নতুন জমিনীতি তৈরি করবে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো জমিনীতির খসড়া তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ ও প্রাক্তন আমলা দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রবীণ আইনজীবী সোমেন্দ্রচন্দ্র বসুকে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে কমিটি তাদের সুপারিশ জমা দেয়। কমিটির সুপারিশ খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট তৈরি করার জন্য শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মাথায় রেখে সাত সদস্যের মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি করেন মুখ্যমন্ত্রী। মানসবাবুকেও সেই গোষ্ঠীর সদস্য করা হয়। কিন্তু মন্ত্রিগোষ্ঠী জমিনীতির সুপারিশ চূড়ান্ত করার দিন মানসবাবু বৈঠকে ছিলেন না। ফলে রিপোর্ট নিয়ে তিনি কিছু জানতেন না। এ দিনের বৈঠকে জমিনীতি চূড়ান্ত করার জন্য আলোচনার সময় মানসবাবু মন্ত্রিগোষ্ঠীর রিপোর্ট তাঁকে জানানোর কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী সেটা মেনে নেন। ঠিক হয়, মন্ত্রিসভার আগামী বৈঠকে জমিনীতি চূড়ান্ত করার আগে মানসবাবুর মতামত নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “মন্ত্রিগোষ্ঠী রিপোর্ট জমা দিয়েছে। কিন্তু কমিটির এক জন এই নিয়ে আলোচনা চেয়েছেন। আমি তাঁর সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলে নেব। জমিনীতি ঠিকই আছে। আগামী বৈঠকেই তা অনুমোদন পেয়ে যাবে।” |