জখম হাতির চিকিৎসা শুরু হয়নি
হাতিদের সাঁড়াশি হামলায় বিক্ষোভ বিষ্ণুপুরে
খম হাতির পায়ের ক্ষত বাড়লেও হাতিটির চিকিৎসা শুরু করতে পারল না বন দফতর। পিছনের ডান পায়ে ক্ষত নিয়েই ‘রেসিডেন্ট’ হাতিটি ঠায় বাঁকাদহ রেঞ্জের বাড়িশোলের জঙ্গলের একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। বুধবারও সেই ক্ষত থেকে পূঁজ-রক্ত গড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। ফুলে উঠেছে ক্ষতের চারপাশ। তা সত্বেও বন দফতর হাতিটির চিকিৎসা শুরু না করায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে, দলমার হাতির পাল ও ‘রেসিডেন্ট’ হাতিদের সাঁড়াশি হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দারা এ দিন সকালে বাঁকাদহ রেঞ্জ অফিস ও পিয়ারডোবা বিট অফিসে বিক্ষোভ দেখান। মড়ার গ্রামে বাসিন্দাদের বিক্ষোভে পড়েন বাঁকাদহের বিট অফিসার। ডিএফও (বিষ্ণুপুর) কুমার বিমল জখম হাতিটির চিকিৎসার প্রসঙ্গে বলেন, “বন্যপ্রাণ বিভাগের কর্তাদের জখম হাতিটির বিষয়ে জানিয়েছি। চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত তাঁরাই নেবেন। কবে চিকিৎসা শুরু হবে তা বলতে পারবো না।”
বাঁকাদহ রেঞ্জের বারিশোলের জঙ্গল থেকে বৈতল-জয়রামবাটী রাস্তায় দাঁতালের দল। ছবি: শুভ্র মিত্র।
জখম হাতিটির খবর সোমবার সকালে বন দফতর জানতে পারে। এর পরে, বুধবার বিকেল পর্যন্ত হাতিটির চিকিৎসা শুরু করতে পারেনি বন দফতর। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হাতিটি একই জায়গায় কয়েক দিন ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনেকে হাতিটিকে দেখতে ভিড় করছেন। হাতিটি কাউকে তাড়া করছে না। তবুও বন কর্মীরা হাতিটির চিকিৎসা করছেন না। বাঁকাদহের রেঞ্জ অফিসার বলাই ঘোষ বলেন, “হাতিটির ক্ষত থেকে পূঁজ ও রক্ত বেরোচ্ছে। ক্ষতের চারপাশ ফুলেও গিয়েছে। মাছি উড়ছে। আমরা হাতিটির উপর নজর রেখেছি।” স্থানীয় মহুর চৌধুরী, গোলাপ শেখদের ক্ষোভ, “আমরা মারকুটে হাতিদের গুলি করার মারার দাবি তুললে বন দফতরের কর্তাদের তখন হাতিদের জন্য দরদ উথলে ওঠে। আর এখন একটা গুরুতর জখম হাতি বিনা চিকিৎসায় দিনের পর দিন পড়ে রয়েছে। অথচ, বন দফতরের কর্তাদের কোনও হুঁশ নেই।” তাঁদের আশঙ্কা, এভাবে, বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকলে হাতিটি মারা যাবে। তাঁদের মতে, অন্য হাতির সঙ্গে লড়াই করে, নাকি কোনও চোরা শিকারির গুলিতে হাতিটি জখম হয়েছে- তা খতিয়ে দেখা দরকার। ডিএফও (বিষ্ণুপুর) অবশ্য জানিয়েছেন, চিকিৎসকরাই ক্ষতের কারণ জানাতে পারবেন।
অন্য দিকে, দলমা থেকে ঢুকে পড়া ৩৫টি হাতি মঙ্গলবার রাতে বিষ্ণুপুরের বাড়িশোল, কলাবাগান, হুলমারা প্রভৃতি গ্রামে হামলা চালায়। স্থানীয় বাসিন্দা জিতেন কুণ্ডু, আজিজুর রহমানদের ক্ষোভ, “জমির ধান, সব্জি মাচা কিছুই আস্ত রাখেনি হাতির দলটি। ওদের তাড়ানোর জন্য বনকর্মীদেরও দেখা মেলেনি। ক্ষতিগ্রস্তরা হাতির দলকে তাড়ানোর দাবিতে ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে এ দিন বাঁকাদহ রেঞ্জ অফিসে বিক্ষোভ দেখান।‘রেসিডেন্ট’ হাতিদের হামলাও বন্ধ নেই। পরপর সোম ও মঙ্গলবার দুই রাতে পিয়ারডোবার একটি আটাকলের ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর করে এবং আটা, গম খেয়ে-ছড়িয়ে নষ্ট করে একটি ‘রেসিডেন্ট’ হাতি। পিয়ারডোবার বিট অফিসেও এ দিন বিক্ষোভ চলে। সেই রাতেই ওই এলাকার মড়ার গ্রামে একটি গোলদারি দোকানে ঢুকে জিনিসপত্র তছনছ করে একটি ‘রেসিডেন্ট’ হাতি। বুধবার সকালে সেখানে বাঁকাদহের বিট অফিসার প্রশান্ত ঘর তদন্তে গেলে স্থানীয়রা তাঁকে ঘেরাও করে কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। বাঁকাদহের বিট অফিসার বলাই ঘোষ বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনেই ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।” তাঁর আশ্বাস, “দলমার হাতিদের ওপর নজর রয়েছে। তবে, স্থানীয়দেরও রাতে সতর্ক থাকা দরকার।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.