|
|
|
|
শীঘ্রই কাজ শুরু শালবনিতে, দাবি সজ্জনের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্য সরকারের ‘সক্রিয় ভূমিকার’ সুবাদে শালবনিতে তাদের ইস্পাত প্রকল্পের কাজ খুব শীঘ্রই পুরোদমে শুরু করে দেওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করলেন খোদ সজ্জন জিন্দল। জমি-জট এবং আর্থিক মন্দার জেরে এই প্রকল্প ঘিরে যে সংশয় তৈরি হয়েছিল, তা উড়িয়ে দিয়ে বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, বিনিয়োগের তালিকায় ১ কোটি টন ইস্পাত উৎপাদনের এই প্রকল্পকেই অগ্রাধিকারের জায়গায় রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, রাজ্যের গত কয়েক দশকের ইতিহাসে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের পরে এটিই একমাত্র প্রকল্প, যা ৫ হাজার কোটি টাকার লগ্নির সীমা ছাড়াবে সম্প্রতি জিন্দল প্রকল্পের জমি ঘিরে আইনি জট কাটাতে উদ্যোগী হয়েছেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন মোট ৪৩৩৪ একর জমি। এর মধ্যে ২৯৪ একর সরাসরি কিনেছে সংস্থাটি। সমস্যার সূত্রপাত এই ২৯৪ একর ঘিরেই। জমির ঊধ্বর্র্সীমা আইন অনুযায়ী শিল্পের জন্য বাড়তি জমি রাখতে ১৪ ওয়াই ধারায় আবেদন করে ভূমি দফতরের অনুমোদন নিতে হয়। ভূমি দফতর জানিয়েছে ২৯৪ একর জমি কেনার আগে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেয়নি সংস্থা। ফলে জমির লিজ চুক্তিও আটকে যায়। শিল্পমহলের অনেকেরই আশঙ্কা ছিল জমি ঘিরে এই জটিলতার কারণে রাজ্যের বৃহত্তম লগ্নির প্রকল্পটি থমকে যাবে। সেই বিতর্কের অবসান ঘটেছে। গত সপ্তাহে একটি শুনানির মাধ্যমে জট কাটার রাস্তা তৈরি হয়েছে। এই প্রকল্প ঘিরে সংশয় অবশ্য দেখা দিয়েছিল আরও আগে, ২০০৯ সালে। আর্থিক মন্দার কারণে। মন্দা ও ইস্পাতের পড়তি চাহিদার কারণে ব্যাঙ্ক ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ফলে প্রকল্পের জন্য টাকার জোগাড় করা যাবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে শিল্প মহলে।
প্রকল্প ঘিরে বিতর্ক ও সংশয় দূর করতেই যে তিনি এই লিখিত বিবৃতি দিচ্ছেন, তা স্পষ্টই জানান সজ্জন। বিবৃতিতে জমি সংক্রান্ত সমস্যার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন তিনি। লিখেছেন, জমি সমস্যার সমাধান ও জল বরাদ্দের মতো বিষয়ের দিকে নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, পরিবেশ-সহ অন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র, কয়লা ব্লক, রেলের অনুমোদন সবই পাওয়া গিয়েছে। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে আমাদের। আশা এ ভাবেই সরকারি সহায়তা পাব। এবং কিছু দিনের মধ্যেই প্রকল্পের টাকা জোগাড়ের প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু করা যাবে।”
প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে পার্থবাবুও জানান, দ্রুততার সঙ্গে জমি সমস্যার সমাধান করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বর্তমান আইন মেনেই তা করা হবে। তিনি জানান, জমি জট কেটে গেলেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে প্রকল্পের অনুমোদন সংক্রান্ত অন্যান্য কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
সব মিলিয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকা লগ্নি হবে এই প্রকল্পে। জিন্দলের দাবি, প্রথম পর্যায়ে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। এই পর্বে ৩০ লক্ষ টন ইস্পাত উৎপাদনের পাশাপাশি তৈরি হবে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্প।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জমি পাওয়ার তিন বছরের মধ্যে কারখানা তৈরির কাজ শেষ হবে। চালু হবে ব্যবসায়িক উৎপাদন। চলতি মাসের গোড়ায় শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে এ কথাই ফের জানিয়েছিলেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। এ দিন লিখিত বিবৃতিতেও সজ্জন দাবি করেছেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ হবে। এবং এই প্রকল্প ঘিরে বিপুল পরিমাণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির কথাও বলেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে পার্থবাবু জানান স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত যাবতীয় প্রতিশ্রুতি চুক্তির অঙ্গ হওয়া উচিত। |
|
|
|
|
|