ভিন রাজ্যে আলু পাঠাতে বিশেষ ব্যবস্থা
লুচাষিদের স্বস্তি দিতে কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সিঙ্গুরের আলু কোয়ম্বত্তুর বা ভুসোয়ালে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে সরকার। এর ফলে চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের উপযুক্ত দাম পাবেন। পাশপাশি ভিন্ রাজ্য থেকে পেঁয়াজ, আদা, কলা ও নানা ধরনের ফল এনে রাজ্যের মানুষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। বিষয়টি নিয়ে কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল হর্টিকালচার বোর্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিজয় কুমারের।
কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপবাবু বলেন, “নানা কারণে আমাদের রাজ্যের আলু ও সব্জি চাষিরা উৎপাদিত পণ্যের দাম পান না। আমরা সমস্ত কিছু নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আশা করি, আগামী মরসুম থেকেই চাষিরা তার সুফল পাবেন।” ন্যাশনাল হর্টিকালচার বোর্ড, কন্টেনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (কনকর) ও রেল মন্ত্রকের সঙ্গে এক হয়ে কাজ শুরু করছে রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতর। ন্যাশনাল হর্টিকালচার বোর্ড ও কন্টেনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া ইতিমধ্যেই তৈরি করেছে ‘ইনসুলেটেড’ এবং ‘ভেনটিলেটেড’ পরিবহণ কন্টেনার। যার মাধ্যমে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অনায়াসে পাঠানো যেতে পারে আলু, পেঁয়াজ, আদা, কলা-সহ সব ধরনের সব্জি ও ফল।
গত ৩০ জুলাই খড়্গপুরের নিমপুরার ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ সেন্টার থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে একটি কন্টেনারে কোয়ম্বত্তুুরে আলু পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে আদা নিয়ে ইতিমধ্যেই কন্টেনারটি কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। ন্যাশনাল হর্টিকালটার বোর্ডের সিনিয়র সহকারী ডিরেক্টর এ কে দাস বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আমরা ৯৮টি কন্টেনার তৈরি করছি। লরিতে চাপিয়ে আলু নিয়ে যেতে খরচ বেশি পড়ে। পচনের সম্ভাবনাও থাকে। রেলের সাহায্যে এই কন্টেনারগুলি দূরবর্তী স্থানে নিয়ে যাওয়া যাবে। প্রতিটি কন্টেনারে ১৮ টন আলু নিয়ে যাওয়া যাবে।” রাজ্যের আলুচাষিদের অবস্থা কেমন?
সারা দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের পরেই আলু উৎপাদনে স্থান রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের। রাজ্যে প্রায় ৯০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়। এ বছর প্রায় ৫০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু হিমঘরে রাখা হয়েছিল। ইতিমধ্যে তার ৩০ শতাংশ বাজারে পৌঁছে গিয়েছে। বাকি ৭০ শতাংশ আলু হিমঘরে রয়েছে। সাধারণত ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত আলু হিমঘর থেকে বের করে দিতে হয়। আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, সরকারি উদ্যোগ ছাড়া আগামী চার মাসের মধ্যে হিমঘরে রাখা সমস্ত আলু বিক্রি করা সম্ভব নয়। কেননা, অগস্ট মাসে সব চেয়ে বেশি আলু বিক্রি হয়ে থাকে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে অন্য সব্জি বাজারে চলে এলে আলুর বিক্রি অনেকটা কমে যায়। এ ছাড়া অগস্ট মাসে রমজান চলছে। তার ফলেও বিক্রিতে প্রভাব পড়বে। যদি কন্টেনারে করে ভিন রাজ্যে আলু পাঠানো যায় তা হলে চাষিরা লাভের মুখ দেখবেন।
রাজ্যের হিমঘর মালিকেরা ও আলুচাষিরা অবশ্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। আলুচাষি সংগ্রাম সমিতির রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত চৌধুরী বলেন, “আলুচাষিদের অবস্থা খুব খারাপ। আমরা কন্টেনারে ভিন রাজ্যে আলু পাঠানোর বিষয়টি শুনেছি। এই ব্যবস্থা চালু না করলে সমস্যা হবে।” পশ্চিমবঙ্গ কোল্ড চেন অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে রমেশ হাজরা বলেন, “সরকার ভিন রাজ্যে আলু পাঠানোর ব্যবস্থা না করলে পরিস্থিতি খারাপ হবে। চাষিরা দাম পাবেন না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.