নীলপাড়া রেঞ্জ অফিসার হত্যা-মামলা
পুনর্তদন্তে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ স্ত্রী
দু’দশক বাদে স্বামীর খুনিদের বিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন মৃত রেঞ্জ অফিসার পার্থসারথি রায়ের স্ত্রী দীপ্তি দেবী। সাঁইবাড়ি গণহত্যা মামলা ও দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও কল্লোল সুর খুনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তাই আশার আলো দেখছেন নীলপাড়ার নিহত রেঞ্জ অফিসারের পরিবার। পার্থবাবুর ৮৯ বছরের বাবা গদাধরবাবুও ছেলের খুনিদের শাস্তির দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “পার্থবাবুর স্ত্রীর আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী দেখছেন। এ নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে।” ওই খুনের মামলাটি জয়গাঁ থানায় দায়ের হয়। দু’সপ্তাহ আগে আগে মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী-সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে চিঠির অনুলিপি পাঠানোয় মহকুমা পুলিশ আধিকারিকদের কাছে উচ্চ মহল থেকে বিশদে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। আলিপুরদুয়ার মহকুমা পুলিশ অফিসার ডেভিড লেপচা মামলার ব্যাপারে নতুন করে খোঁজখবর করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি মন্তব্য করতে চাননি। যে এলাকায় মামলা দায়ের হয়, সেই জয়গাঁ থানার এক অফিসার জানান, ২২ জন গ্রেফতার হয়। ১ বছর বাদে ১২ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। পার্থবাবু ছিলেন নীলপাড়া রেঞ্জের দায়িত্বে। কাঠ চুরি তো বটেই, চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধেও লাগাতার অবিযান চালান তিনি। জলপাইগুড়ির হোটেল থেকে গণ্ডারের খড়্গ সহ চোরাশিকারিদের গ্রেফতার। কাঠ মাফিয়া-সহ চোরাশিকারিদের দৌরাত্ম্য কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য বন দফতরের তরফে তাঁকে পুরস্কৃত করা হয়। পার্থবাবুর উদ্যোগেই ওই রেঞ্জের একটি চা বাগান থেকে বন থেকে কেটে নেওয়া বহু কাঠ উদ্ধার হয়। তার জেরে তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয় বলে দীপ্তি দেবীর অভিযোগ। ১৯৯০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকালে চা বাগানের এক শ্রমিক জঙ্গলে গিয়ে চিতাবাঘের হানায় মারা যান। তখন পার্থবাবুকে বাগান থেকে খবর দেওয়া হয়। তিনি চিতাবাঘের হামলার ঘটনা জলদাপাড়া রেঞ্জে ঘটেছে বলে জানিয়ে যেতে চাননি। কিছুক্ষণের মধ্যেই নীলপাড়া রেঞ্জ অফিসে হামলা হয়। চা শ্রমিকদের ভিড়ের মধ্যে থাকা দুষ্কৃতীরা লাঠিসোটা, ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালালে পার্থবাবু জখম হন। হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পরে পার্থবাবুর স্ত্রী দীপ্তি দেবী ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা ও বন দফতরে চাকরি পান। বর্তমানে তিনি কৃষ্ণনগরের বন দফতরে করণিক পদে কর্মরতা। তাঁর বক্তব্য, “আমার চোখের সামনে স্বামীকে খুন করা হয়। আজও আদালত থেকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আমাকে ডাকা হয়নি। মামলার বর্তমান অবস্থা জানি না। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ফের তদন্ত শুরুর আর্জি জানিয়েছি।” তাঁর অভিযোগ, আরএসপি-র স্থানীয় এক নেতার প্রভাবে দোষীরা সাজা পাচ্ছে না। সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পুনরায় তদন্ত চেয়ে আবেদন করেছি।” পার্থবাবুকে খুনের অভিযোগে সাধারণ আধপেটা খাওয়া নিরপরাধ শ্রমিক যাতে হয়রান না-হন, সে দিকে খেয়াল রাখার জন্যও মমতাকে অনুরোধ করেন তিনি। নাগরিক মঞ্চের তরফে পার্থসারথি রায় হত্যার ঘটনায় ফের তদন্ত চেয়েছেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত বলেন, “আশা করি মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।” আরএসপি-এর জলপাইগুড়ি জেলার সম্পাদক সুনীল বণিক অবশ্য দাবি করেন, “ঘটনার দিন বাগানের বহু চা শ্রমিক রেঞ্জ অফিস ঘেরাওয়ে ছিলেন। আমাদের টানা ঠিক নয়। নতুন করে তদন্ত কেউ চাইলে হতেই পারে। কিছু বলার নেই।”
Previous Story Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.