কেন্দুয়া পঞ্চায়েত
সিপিএম সদস্যের ‘সাহায্যে’ প্রধান পদে জয়ী তৃণমূল
সিউড়ি ২ ব্লকের কেন্দুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হলেন তৃণমূলের নবরঞ্জন ঘোষ। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে রাজনৈতিক কারণে একাধিকবার ক্ষমতার ভারসাম্য বদলেছে এই পঞ্চায়েতে। গত তিন বছরে এই নিয়ে তিন জন প্রধান পেল কেন্দুয়া পঞ্চায়েত। শুক্রবার প্রধান নির্বাচনে নবরঞ্জনবাবু ৮-৪ ব্যবধানে জয়ী হন বলে জানিয়েছেন সিউড়ি ২-এর বিডিও কোয়েলি দাস।
কেন্দুয়া পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৩। কংগ্রেস ৩টি, তৃণমূল ৩টি, সিপিএম ৬টি এবং সিপিএম সমর্থিত নির্দল ১টি আসন পেয়েছিল। সিপিএম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করে। গত বছর মার্চে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিপিএম প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন বিরোধী জোট। অনাস্থার পক্ষে সিপিএমের এক সদস্য এবং সিপিএম সমর্থিত নির্দল সদস্য ভোট দেওয়ায় হেরে যান পঞ্চায়েত প্রধান। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ওই বছর ৩০ এপ্রিল প্রধান নির্বাচিত হন কংগ্রেসের আনারুল হক। কিন্তু তাঁর প্রধান পদ বেশিদিন স্থায়ী হল না।
বছর ঘুরতেই চলতি ৩০ মে আনারুলের বিরুদ্ধে আনেন তৃণমূলের তিন সদস্য। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন সিপিএমের ২, কংগ্রেসের ১ এবং একমাত্র নির্দল সদস্য। এ ক্ষেত্রেও প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেনিয়মের। আনারুল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছিলেন, “তৃণমূল চাইছে কংগ্রেস ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাক।” গত ১৪ জুন আস্থা ভোটে হেরে যান আনারুল। অনাস্থা আনা সাত সদস্যই তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দেন। এ দিন ছিল নতুন প্রধান নির্বাচন। তাতে আনারুল যোগ না দিলেও সিপিএম ছিল। সিপিএমের হয়ে এ দিন প্রধান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন পঞ্চায়েত সদস্য অমল দাস। ৮-৪ ব্যবধানে তিনি হেরে যান। নতুন প্রধান হন নবরঞ্জনবাবু। এমনকী কংগ্রেসের উপ-প্রধানও এ দিন নবরঞ্জনবাবুর পক্ষেই ভোট দিয়েছেন।
এ দিকে তৃণমূল প্রধানকে নির্বাচিত করার পিছনে দলেরই দুই সদস্য এবং দল সমর্থিত এক নির্দল সদস্যের ‘সক্রিয়’ ভূমিকা থাকায় অস্বস্তিতে পড়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলের সিউড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “পঞ্চায়েতে আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। কিন্তু নানা প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের সদস্যদের ভাঙিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতির খেলায় নেমেছে তৃণমূল। আর কংগ্রেস এখানে তৃণমূলের সহযোগী ছিল। এখন প্রধান পদ খুইয়ে আনারুল বলছেন, তৃণমূল তাঁদের দলকে শেষ করে দিতে চাইছে।” দেবাশিসবাবুর আরও বক্তব্য, “প্রধান নির্বাচনে আমরা হেরেছি ঠিকই। কিন্তু হারজিতের চেয়েও বড় ব্যাপার হল, এলাকার মানুষের প্রতি আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে। সেই দায়বদ্ধতা এবং গণতন্ত্রকে সম্মান জানাতেই এ দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হয়েছে।”
সিউড়ি ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি নুরুল ইসলামের দাবি, “জোট শরিককে শেষ করে দিতে নয়, বরং বিদায়ী প্রধানকে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও উনি নানা বিষয়ে বেনিয়ম করছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে তাঁকে সরাতে হয়েছে। উপপ্রধান-সহ কংগ্রেসের দুই সদস্য আমাদের পক্ষে ভোট দেওয়ায় প্রমাণিত হল, আনারুল হকের সঙ্গে কেউ নেই।” সিপিএম ‘প্রলোভন’ দেওয়ার যে অভিযোগ তুলেছে, তা উড়িয়ে দিয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, “তৃণমূল এমন ঘৃণ্য রাজনীতি করে না। সিপিএমই করে। দীর্ঘ ৩৪ বছর ওরা এ রাজ্যে ক্ষমতা দখল করে ছিল। এখন ক্ষমতা হারিয়ে দিশাহারা হয়ে প্রলাপ বকছে।”
Previous Story Purulia Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.