আপনার কলমে...
১৭ বৈশাখ ১৪১৯ মঙ্গলবার ১ মে ২০১২


শিবলোকের পথে
থায় বলে ‘মা ডাকলে আসতে তো হবেই’। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে বাবা আগে ডাকলেন। আমাদের মানে— ডানলপের সুদাম বিশ্বাস, ইছাপুরের সমীর মারিক, বিধাননগরের প্রতাপচন্দ্র দত্ত, দেবব্রত চক্রবর্তী ওরফে শংকরদা আর আমি।

যাত্রার শুরুটা মোটেই ভাল ছিল না। টিকিট ছিল যুবা এক্সপ্রেসে, দিল্লি অবধি। কিন্তু আগের দিন জানতে পারলাম কালকা মেল দুর্ঘটনায় পড়ায় যুবা এক্সপ্রেস বাতিল হয়েছে। কী আর করা! আকাশ পথে দিল্লি রওনা হলাম ১৪ তারিখের পরিবর্তে ১৫ তারিখ। দুপুর ১২টায় বিমান ওড়ার কথা। বিপত্তি তাতেও। সকাল থেকেই বৃষ্টি পড়ছে। ১২টার বিমান ছাড়ল বিকেল ৩টেয়। দিল্লি পৌঁছলাম বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। এ বার গন্তব্য জম্মু। নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে রাত আটটা পঁয়তাল্লিশে সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেস। ট্রেন ঠিক সময়েই ছাড়ল। সারা দিনের ধকল আর ট্রেনের দুলুনিতে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়লাম সবাই। পর দিন সকাল ৬টায় পৌঁছলাম জম্মু।

তুষার তীর্থ অমরনাথ ধাম (ছবি: ইন্টারনেট)
আমরা চলেছি ভোলে বাবার সন্ধানে, যেখানে উনি স্বয়ম্ভূ— তুষার তীর্থ অমরনাথ দর্শনে। অমরনাথ যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীর ব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া যায়। এখানে বলে রাখা ভাল, অমরনাথ যাওয়ার রাস্তা দু’টি— একটি পহেলগাঁও দিয়ে, অন্যটি বালতাল দিয়ে। আমাদের পাস ‘নুন ওয়ান বেস ক্যাম্প’-এর। যেতে হবে পহেলগাঁও দিয়ে। পহেলগাঁও থেকে অমরনাথ গুহার দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার। আর জম্মু থেকে পহেলগাঁওয়ের দূরত্ব ৩১৫ কিলোমিটার। জম্মু স্টেশনের বাইরে থেকে ছোট বাস আর গাড়ি পাওয়া যায়। গাড়িতে সিট প্রতি ভাড়া ৫৫০ টাকা। আমরা ছাড়া আরও তিন জন অমরনাথের যাত্রী পাওয়া গেল, তাঁরা এসেছেন পঞ্জাব থেকে। গাড়ি ছাড়ল সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ। জাতীয় সড়ক ১এ-এর চড়াই উতরাই পথ ধরে এগোতে থাকলাম। পথের অনেক জায়গাতেই ভক্তপ্রাণ হিন্দুরা অমরনাথ যাত্রা উপলক্ষে ভাণ্ডারা বা লঙ্গরখানা বানিয়েছেন। সকাল ও দুপুরের খাওয়া সেখানেই সেরে নিলাম। উধমপুর, ধাভা, পাটনি টপ, রামবন, বানিহাল, কাজিগুন্ড, অনন্তনাগ পেরিয়ে পহেলগাঁও, অর্থাত্ ‘প্রথম গ্রাম’ পৌঁছলাম বিকেল ছ’টা নাগাদ।

কথিত আছে, পার্বতীকে জীবন ও অমর হওয়ার রহস্য শোনানোর জন্য শিব এমন এক জায়গা খুঁজছিলেন যেখানে অন্য কেউ সে কথা শুনতে না পায়। অবশেষে অমরনাথ গুহাকেই বেছেছিলেন সেই কাজের জন্য। পহেলগাঁওতে রেখে গিয়েছিলেন নন্দীকে। জটার চাঁদকে রেখে গিয়েছিলেন চন্দনওয়াড়িতে।


গুহার প্রবেশপথ
অনেক যাত্রী পহেলগাঁওয়ের ক্যাম্পে থাকেন। আমরা ছিলাম জম্মু ও কাশ্মীর পর্যটনের ডর্মিটরিতে। জন প্রতি ২০০ টাকা বেড ভাড়া। গরম জলের ব্যবস্থাও আছে সেখানে। একটু জিরিয়ে গেলাম ‘নুন ওয়ান বেস ক্যাম্পে’। এখান থেকে হেলিকপ্টার ছাড়ে পঞ্চতরণি পর্যন্ত। বিনা পয়সায় নিরামিষ খাবার পাওয়া যায় এই ক্যাম্পে। আর আতিথেয়তার কোনও ত্রুটি নেই। তবে বেশি না খাওয়াই ভাল। পর দিন উঠতে হবে ১৩৫০০ ফুট চড়াইয়ে— পিসু টপ।

আমাদের পহেলগাঁও আসার বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। ডর্মিটরিতে ভারত সেবাশ্রমের এক মহারাজ ও আরও অনেক যাত্রী ছিলেন। ওঁরা বললেন “আমরা চার দিন ধরে অমরনাথ দর্শনের চেষ্টা করছি, কিন্তু আবহাওয়া খারাপের জন্য হেলিকপ্টার উড়তে পারছে না। আগামীকাল শেষ চেষ্টা করব, না হলে কলকাতা ফিরে যেতে হবে।” আমরা অবশ্য হেলিকপ্টারে যাচ্ছি না।

পহেলগাঁওয়ের প্রাকৃতিক শোভা চোখে আরাম দেয়— লিডার এবং আরু নদী আর উঁচু পর্বত যেন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করছে। আর আছে বিভিন্ন বাহারি ফুল।

আজ ১৭ তারিখ। আকাশ ঝকঝকে পরিষ্কার। ভোর পাঁটটার মধ্যে স্নান সেরে আমাদের যাত্রা শুরু হল। ছ’টার মধ্যে পৌঁছতে হবে চন্দনওয়াড়ি— পহেলগাঁও থেকে দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। ছোট গাড়ি যায় সেখানে। লিডার নদীকে সঙ্গে নিয়ে বাহারি ফুলের অপরূপ শোভা দেখতে দেখতে চন্দনওয়াড়ি (৯৫০০ ফুট) পৌঁছলাম সকাল ছ’টা চল্লিশ নাগাদ। চন্দনওয়াড়ি বেস ক্যাম্পে কর্তব্যরত এক জওয়ানকে যাত্রার পাস দেখিয়ে আমাদের ট্রেকিং শুরু হল। পাঁচজনই লাঠি কিনলাম, ১৫-২৫ টাকা দাম— আমাদের আগামি চার দিনের সঙ্গী। দলে যোগ দিল বসির, যে আমাদের ব্যাগ বয়ে নিয়ে যাবে।


পিসু টপের পথে
চন্দনওয়াড়ি থেকে প্রথমে যেতে হবে ৩ কিলোমিটার দূরত্বের পিসু টপ-এ। উচ্চতা ১৩,৫০০ ফুট। প্রচণ্ড চড়াই। আর আগের রাতে বৃষ্টি হয়েছে বলে ততোধিক পিচ্ছিল পথ। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পৌঁছলাম পিসুটপ। পিসুটপের নামের আড়ালে পুরাণের গল্প হল— ভগবান শিবের প্রথম দর্শনের জন্য দেবতা ও অসুরদের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। ভোলানাথের আশীর্বাদে দেবতারা এত অসুর নিধন করেন যে মৃতদেহ জমে পর্বত হয়ে যায়। এটাই পিসু টপ। এখানেও ভাণ্ডারা আছে। সামান্য কিছু খেয়ে আবার চলা শুরু।

পিসু টপ থেকে শেষনাগের দূরত্ব ১১ কিলোমিটার, উচ্চতা ১১৭৩০ ফুট। । চড়াই উতরাই পথে পড়ে জোজিবাল, নাগরা কোটি। তার পর শেষনাগ। পৌঁছতে বিকেল সাড়ে চারটে বাজল। রাত্রি বাস এখানেই। শংকরদা আগে এসে একটা ক্যাম্প ঠিক করেছে, জন প্রতি ২২৫ টাকা। আমাদের ক্যাম্পে ১০ জন থাকার ব্যবস্থা আছে। সকলেই প্রচণ্ড ক্লান্ত। শেষনাগের প্রাকৃতিক শোভা বর্ণনা করার ভাষা আমার জানা নেই। শেষনাগ পর্বতের সাতটি চূড়া— এমন ভাবে আছে, দেখলে মনে হবে হিন্দু পুরাণের সাত মাথাওয়ালা সাপ। নীচে ঘন নীল জলের হ্রদ। আর পেছন দিকে হিমবাহ। ভগবান শিব গলার সাপকে এখানে রেখে দিয়ে গিয়েছিলেন। গুরুপূর্ণিমা গেছে দু’দিন আগে। বাইরের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের প্রায় ২ ডিগ্রি নীচে। তাও ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে চাঁদের আলোয় শেষনাগ দর্শনের লোভ সামলাতে পারলাম না। ভাণ্ডারাতে সামান্য কিছু খাওয়া হল। এখানে অক্সিজেন কম থাকার জন্য রাতে শ্বসকষ্ট হতে পারে, তাই প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

১৮ তারিখ ভোর ৬টায় শেষনাগের মায়াবী মায়া কাটিয়ে আবার হাঁটা শুরু। আজ আরও চড়াই পথ। পেরোব গণেশ টপ বা মহাগুনা পাস, উচ্চতা ১৪৫০০ ফুট। শেষনাগ থেকে দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। ৫ মিনিট উঠছি তো ১০ মিনিট বিশ্রাম নিচ্ছি! মাঝে মাঝে ছোট হিমবাহ, নদ, ঝরনা পেরিয়ে প্রায় ১১টা নাগাদ পৌঁছলাম মহাগুনা পাস। এর পর পাবিবাল। এখানে ভাণ্ডারাতে কিছু খাওয়াদাওয়া করে আবার হাঁটা। গন্তব্য পঞ্চতরণি। মহাগুনা পাস থেকে পঞ্চতরণির দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। পাবিবাল থেকে পঞ্চতরণি উতরাই বেশি।


মহাগুনা পাস
পঞ্চতরণি যখন পৌঁছলাম তখন বিকাল ৫টা। রাস্তাতে বৃষ্টি পেয়েছি। শংকরদা আর সুদাম আগেই এসে গেছে। সমীরদা আর আমি একসঙ্গে ঢুকলাম। এর পরে প্রতাপদা এল। কিন্তু বসির উধাও। বৃষ্টি একটু থামলে শংকরদা তাকে খুঁজতে বেরোল। কিন্তু একাই ফিরে এল। অবশেষে বসির নিজেই ক্যাম্পে এল প্রায় ঘণ্টা দুই পর। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম আমরা। ক্যাম্পে একটু জিরিয়ে যেখান থেকে হেলিকপ্টার ছাড়ে, সেখানে গেলাম। হেলিকপ্টার পঞ্চতরণি পর্যন্ত আসে। বাকি পথ কিন্তু হাঁটা।

ভৈরব পর্বতের নীচে, ১২৭২৯ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত পঞ্চতরণি— পাঁচ নদী এখান দিয়ে প্রবাহমান। পাঁচটি প্রধান পার্থিব বস্তু— পৃথিবী, জল, বায়ু, আকাশ ও আগুন— যার মধ্যে জীব ও জীবনের রহস্য লুকিয়ে আছে— পঞ্চতরণিতে সেই পাঁচটি বস্তু ত্যাগ করেছিলেন মহাদেব। ভোলে বাবা তো নিজেই নিজের স্রষ্টা!

রাতেই বৃষ্টি নামল। ভোরের দিকে বাড়ল তার বেগ। অতএব সামনে যাওয়ার অনুমতি নেই। প্রস্তুত হয়েও ক্যাম্পে বসে রইলাম। অবশেষে সকাল ৮টা নাগাদ বৃষ্টি থামার পর সবুজ সংকেত পাওয়া গেল। কাদা মিশ্রিত জমাট বরফ আর সঙ্গে কে আগে যাবে তার প্রতিযোগিতা। সরু মানে, তস্য সরু পথ। শামুকের গতিতে এগোচ্ছি সবাই। অমরাবতী ও পঞ্চতরণি নদীর সঙ্গম পৌঁছলাম বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ। পঞ্চতরণি থেকে তিন কিলোমিটার দূরত্ব। পুণ্যার্জনের জন্য অনেক তীর্থযাত্রী এখানে বরফ জলে স্নান করেন। সঙ্গম থেকে পবিত্র গুহার পাদদেশ পর্যন্ত দূরত্ব আরও তিন কিলোমিটার। পুরো রাস্তাটাই হিমবাহের উপর দিয়ে। সঙ্গম থেকেই গুহা দেখা যায়।

হিমবাহের ওপর দিয়ে পথ চলা
হিমবাহের উপর আস্তে আস্তে হেঁটে অবশেষে গুহার পাদদেশে পৌঁছলাম। এর পর পর্বতের গা কেটে সিঁড়ি ভেঙে পবিত্র অমরনাথ গুহার স্বয়ম্ভূ শিবের দর্শন। গুহায় প্রবেশের আগে দোকান থেকে পুজোর সরঞ্জাম কিনে সেখানেই ক্যামেরা, মোবাইল রেখে দিয়ে এসেছি। গুহায় প্রবেশের আগে সুদামের সঙ্গে দেখা হল। বাকিদের দেখা নেই। দুপুর সাড়ে বারোটা, ভেতরে ঢুকলাম দু’জন। প্রায় ৭ ফুট উঁচু বরফের শিবলিঙ্গ। রেলিং দিয়ে ঘেরা। পাশে ছোট দু’টি বরফের অবয়ব। অনেকে বলেন একটা মা পার্বতীর ও অপরটি গণেশের। আমার যাত্রা সার্থক। এই বছর ২৯ জুলাই যে দিন প্রথম যাত্রা আরম্ভ হয়েছিল শিব লিঙ্গের উচ্চতা ছিল তখন ১৪ ফুট। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ঠেলায় প্রকৃতির সবই যেন কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে! দর্শন করে নামছি, দেখলাম দু’টি পায়রা উড়ে বেড়াচ্ছে। শিব-পার্বতীর কথা শুনে ফেলেছিল বলে এরা নাকি অমর!

দর্শন করে একে একে যখন সকলে একত্রিত হলাম তখন সাড়ে চারটে। ঠিক হল আজকেই ফেরার জন্য রওনা দেব। চা খেয়ে বেরোব, আবার বৃষ্টি নামল। ঠিক করলাম শিবলোকেই আজকের রাতটা কাটিয়ে দেব। এখন অনেকটা নিশ্চিন্ত লাগছে। ভাবতেই পারছি না সত্যিই দর্শন হল অমরনাথ!

আমরা নামব বালতাল দিয়ে। দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। রাস্তার কিলোমিটার ভাগ খানিকটা এ রকম—
পবিত্র গুহা থেকে সঙ্গম ৩ কিলোমিটার
সঙ্গম থেকে বারারি মার্গ ৪ কিলোমিটার
বারারি মার্গ থেকে ডোমেল ৫ কিলোমিটার
ডোমেল থেকে বালতাল ২ কিলোমিটার

সঙ্গম থেকে বারারি মার্গের পথ বেশ চড়াই। তার পরের ১০ কিলোমিটার শুধুই নীচে নামা। সকাল ছ’টায় শুরু করে বালতাল এলাম ১২টা নাগাদ। বালতালের রাস্তায় চন্দনওয়াড়ি-শেষনাগ-পঞ্চতরণির মতো প্রাকৃতিক শোভা নেই। যাঁদের হাতে সময় কম এবং শুধু তীর্থ করতেই যাবেন তাঁরা ঘোড়া নিয়ে বালতাল দিয়ে অমরনাথ দর্শন করে একই দিনে ফিরে আসতে পারেন। বালতাল হয়েই কার্গিল, দ্রাস, লে-লাদাখের রাস্তা গেছে।

এর পর শোনমার্গ হয়ে শ্রীনগর যাব। শ্রীনগরে তিন দিন কাটিয়ে মায়ের দর্শন করে ফেরা। মাতাজি আছেন ত্রিকূট পাহাড়ে। শ্রীনগর থেকে কাটরা ২৮৩ কিলোমিটার। শ্রীনগর থেকে সকাল ৭টায় একটা গাড়ি করে কাটরা পৌঁছলাম বিকাল ৬টায়। কাটরার হোটেলে মালপত্র রেখে যাত্রা ‘পর্চি’ জোগাড় করলাম কাটরা বাস স্ট্যান্ড থেকে। ত্রিকূট পাহাড়ে অবস্থিত মাতা বৈষ্ণবীদেবীর মন্দির, ৬৬১৯ ফুট উচ্চতায়। সিমেন্ট বাঁধানো রাস্তা। রাস্তায় পড়বে বানগঙ্গা-চরণ পাদুকা-আধা কুয়ারি-হিম কোটি-সাঞ্জি চটি, তার পরে ‘ভবন’। যেখানে মা আছেন।

মাঝ রাতে হাঁটা আরম্ভ করে ভবনে পৌঁছলাম সকাল ৬টা। সকালের আরতির সময় ৬-৮টা। তাই মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ। অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। পুজো দিয়ে বেরোলাম প্রায় ১০টা নাগাদ। এ যাত্রায় বাবা ও মা দু’জনেরই দেখা মিলল। কতটা পুণ্য করেছি সে তো মা লক্ষ্মীই বলবেন (আমি ব্যবসা করি যে!)। কিন্তু আমার অন্তরের আত্মা যে শান্তি পেয়েছে সে কথা হলফ করে বলতে পারি।

এ বার ফেরার পালা। আমাদের জম্মু থেকে ট্রেনের টিকিট ছিল না, বাসে কাটরা থেকে এলাম দিল্লি। ফিরব নয়াদিল্লি-শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেস ধরে।

পরের বার যাব হেমকুণ্ড সাহিব, নন্দন কানন, তুঙ্গনাথ। ফেরার দিন থেকেই যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু।

এক কথায়: গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ঠেলায় প্রকৃতির
সবই যেন কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে!
 
কলকাতার বিধাননগরের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে ব্যবসায়ী। সুযোগ পেলেই পিঠে ব্যাগ চাপিয়ে বেরিয়ে পড়েন হিমালয়ের উদ্দেশ্যে। প্রকৃতির ভারসাম্য যে ক্রমশই খারাপের দিকে যাচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিশ্ব-উষ্ণায়নের ফলে যে হিমবাহ গলে যাচ্ছে, তাতে হিমালয়ের টান কী থাকবে পরের প্রজন্মে!

ছবি: লেখক

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


রোজের আনন্দবাজারএ বারের সংখ্যা পুরনো সংস্করণ