|
কালীপূজার মরশুমে কলিকাতার বাজারে বিভিন্ন প্রকার নিষিদ্ধ বাজি পট্কা প্রভৃতি প্রকাশ্যভাবে বিক্রয়ের ধূম লাগিয়াছে বলিয়া অভিযোগ পাওয়া গিয়াছে। পুলিশ কর্তৃপক্ষও ঐ সম্পর্কে চিন্তিত হইয়া পড়িয়াছেন বলিয়া জানা যায়।
প্রকাশ, কলিকাতার পুলিশ কমিশনার শ্রীউপানন্দ মুখার্জি মঙ্গলবার বিকালে লালবাজারে এক বৈঠক আহ্বান করেন এবং উহাতে আসন্ন কালীপূজা নির্বিঘ্নে উদ্যাপনের ব্যাপারে পুলিশ ও সরকারী মহলের দায়িত্ব সম্পর্কে আলোচনা হয়। নিষিদ্ধ বাজি বিক্রয় করার উপায় লইয়াও ঐ বৈঠকে আলোচনা হয় বলিয়া জানা গিয়াছে।
আরও জানা গিয়াছে যে, কলিকাতার পুলিশ ইতিমধ্যেই প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি, বিস্ফোরক দ্রব্য প্রভৃতি বাজেয়াপ্ত করিয়াছে। ঐ সম্পর্কে আইন ভঙ্গের অভিযোগে কিছু লোককে গ্রেপ্তার করা হইয়াছে। ভুঁইপট্কা, ছুঁচো-বাজি, হাওই, চটপটি প্রভৃতি কমপক্ষে নয় দশ রকম বিপজ্জনক বাজি প্রস্তুত ও বিক্রয় করা সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ।
মঙ্গলবার লালবাজারে ঐ বৈঠকে ডি সি হেড কোয়াটার্স, ডি সি ডি ডি, বিস্ফোরক সংক্রান্ত ইন্সপেক্টর, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সি আই ডি বিভাগের স্পেশাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট, রেল পুলিশের মুখপাত্র, হাওড়া ও চব্বিশ পরগণা জেলার এস-পি প্রভৃতি যোগ দেন।
কলিকাতা পুলিশ কর্তৃক কতিপয় বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ
কলিকাতার পুলিশ কমিশনার নিম্নলিখিত শ্রেণীর বাজি তৈরি, সংরক্ষণ এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ করিয়া এক বিজ্ঞপ্তি প্রচার করিয়াছেন:
(১) হাতবোমা, আগুনে-পটকা, ভুঁই-পটকা, বোমা, আছাড়-বাজি প্রভৃতি যেগুলি আর্সেনিক সালফাইড এবং পটাশিয়াম কলোরেট মিশ্রণে প্রস্তুত।
(২) ছুঁচো বাজি।
(৩) উড়ন তুবড়ি,
(৪) চটপটি,
(৫) হাতবোমা ইহা ১.৫ আউন্স অপেক্ষা অধিক ওজনের এবং লম্বায় ১.৫ এবং ২.২৫ ইঞ্চি ব্যাসবিশিষ্ট, দড়িযুক্ত এবং কাগজে মোড়া বিস্ফোরক যেগুলিকে সাধারণতঃ এ্যাটম বোমা বলা হয়।
কলিকাতায় এবং শহরতলী রাস্তায় কোনপ্রকার বাজী প্রদর্শন করা নিষিদ্ধ হইয়াছে। যে ব্যক্তি এই সকল বিধিলঙ্ঘন করিবে, তাহাকে গ্রেপ্তার করা এবং অভিযুক্ত করা হইবে।
লাউডস্পীকার ও মাইক্রোফোনোর ব্যবহারের উপর বাধানিষেধ
পূজামণ্ডপ হইতে সংগীত প্রচারের উদ্দেশ্যে লাউডস্পীকার ও মাইক্রোফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করিতে কালীপূজার সংগঠকদের অনুরোধ করা হইতেছে। পূজা সংগঠকগণের সহিত যোগাযোগ স্থাপন করিতে এবং এই সকল নিষেধাজ্ঞা কার্যে পরিণত করিতে তাঁহাদের সহযোগিতা লাভের জন্য স্থানীয় আধিকারিকগণকে নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে। পূজামণ্ডপের বাহিরে মাইক্রোফোন অথবা লাউডস্পীকার স্থাপন করিবার কোন অনুমতি দেওয়া হইবে না। ডিভিসনের ডেপুটি কমিশনারগণ কালীপূজার দিন ১৯ শে অক্টোবর (১৯৬০) সকাল ৬টা হইতে বেলা ১০টা এবং বৈকাল ৬টা হইতে রাত্রি ১০টা পর্যন্ত পূজামণ্ডপের ভিতরে লাউডস্পীকার ব্যবহারের অনুমতি দিয়াছেন। ২০ শে অক্টোবর বিসর্জনের দিন সকাল ৬টা হইতে বেলা ১০টা পর্যন্ত লাউডস্পীকার ব্যবহারে অনুমতি দেওয়া হইয়াছে। যে সকল ব্যক্তি এইরূপ অনুমতি পাইয়াছেন, আশা করা যায় তাঁহারা নিম্নস্বর পর্যায়ে এবং অধিক সময়ের ব্যবধানে অনুষ্ঠানোপযোগীভাবে উহা বাজাইবেন এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে বাজাইবেন না।
|
|