জেলার দাবি ২
রাজনীতির পারদ চড়ছে জেলার দাবিতে

রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১২ সালের ১৭ মে জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের দফতরে সর্বদলীয় বৈঠক হয়। আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলা ঘোষণা করার প্রস্তুতিতেই মহাকরণের নির্দেশে ওই বৈঠক হয়। সর্বদল বৈঠকে পৃথক জেলা ঘোষণার সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করে রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট পাঠানো হয়।
এরপরে ৬ জুলাই ২০১২ রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ মহাকরণ থেকে জলপাইগুড়ি জেলা ভেঙে আলিপুরদুয়ার মহকুমাকে পৃথক জেলা করা হবে বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দেন। সে খবর পেয়ে মহকুমা জুড়ে উৎসব শুরু হয়ে যায়। বাম সরকারের সময়ে বহু আন্দোলন করেও যে দাবি পূরণ হয়নি সেই দাবি পূরণের সম্ভাবনা জিইয়ে উঠতেই মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে যায় আলিপুরদুয়ার।
প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়, মহকুমার ৬টি ব্লক নিয়ে নতুন জেলা গঠিত হবে। যদিও এর পরে দেড় বছর পার হয়ে গিয়েছে। জেলা নিয়ে ডান-বাম রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে শুরু হয়েছে দাবি-পাল্টা দাবি, অভিযোগ পর্ব। ঘোষণার পরেও জেলা নিয়ে প্রশাসনিক উদ্যোগ শুরু না হওয়ায় স্থানীয় তৃণমূল নেতারা যেমন অস্বস্তিতে, তেমনই লোকসভা ভোটের আগে শাসক দল তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলতে বিরোধীরাও জেলার দাবি নিয়েই আক্রমণের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
আলিপুরদুয়ারের পাঁচ দফার আরএসপি বিধায়ক নির্মল দাস অবশ্য বাম সরকারের দায়ও স্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “আগের বাম সরকারের টালবাহানায় জেলা ঘোষণা করা হয়নি। মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতার দূরত্ব যা, আর এখানে কুমারগ্রাম থেকে জলপাইগুড়ি জেলা শহরের দূরত্ব একই। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী এলাকা প্রশাসনিক কাজকর্ম এত দূর থেকে ঠিক মত করা সম্ভব নয়। সে কারণেই বারবার জেলার দাবি করেছি।” একই সঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, “তৃণমূল তো ক্ষমতায় আসার আগে থেকে ফি বার নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়ে দায় সারছে। মানুষ আর কত দিন অপেক্ষা করবে?” আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়ের অভিযোগ, “ভোটে জিততেই বারবার জেলা করার কথা বলে তৃণমূল। ওই প্রতিশ্রুতি আর কত দিন পর বাস্তবায়িত হবে তা বুঝতে পারছি না। রাজনৈতিক কারণ ছাড়া এখানে তো অন্য কোনও কারণ দেখতে পারছি না। এর পর আন্দোলন শুরু হবে।”
সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিধানসভা ভোটের আগে যে কথা তৃণমূল বলেছিল তা এখনও করে দেখাতে পারেনি। সামনে আরেকটা নির্বাচন আসছে। সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে এর জবাবদিহি করতে হবে।”
যদিও, বিরোধী দলের নেতাদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেছেন, “একটা বড় জেলাকে টুকরো করার সিদ্ধান্ত আমাদের সরকার নিয়েছে। তবে জেলা করার কিছু প্রস্তুতিরও প্রয়োজন হয়। আগে জেলা ও দায়রা আদালতের পরিকাঠামো তৈরি করতে হয়। সে কারণে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। পরিকাঠামো তৈরি করতে সময় লাগে। তার পরেই নতুন জেলার স্বীকৃতি মিলবে। এ নিয়ে রাজনীতি করার কোনও প্রশ্নই নেই। তবে গত ৩৪ বছর বাম জমানায় কেন জেলা ঘোষণা হয়নি তার জবাবও দিতে হবে।”

(শেষ)





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.