সন্তানের জন্ম দিয়ে পরীক্ষায় বসল মা
কটা বছর নষ্ট হতে দিতে রাজি নয় বাঁকুড়ার জয়পুর থানার শুকজোড়া গ্রামের কেয়া সর্দার। বুধবার সন্তানের জন্ম দেওয়ার সাড়ে তিন ঘণ্টা পরেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসল সে। কোতুলপুর গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার পরে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কেয়া বলে, “প্রশ্ন খুব শক্ত হয়নি। কিন্তু মন পড়েছিল ছেলের দিকে। তবু ভালই লিখেছি। বাকি পরীক্ষাগুলোও দেব।”
পরিবার সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে কেয়ার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। পরিজনেরা তাকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। সকাল ৮টা ২০ মিনিটে সে সন্তানের জন্ম দেয়। জয়পুরের টানাদিঘি হাইস্কুলের ওই ছাত্রীর পরীক্ষা গ্রহণ কেন্দ্র হয়েছে জয়পুরের রাজগ্রাম গার্লস হাইস্কুলে। স্বাভাবিক প্রসবের পরে জ্ঞান ফিরতেই কেয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই পরীক্ষা দিতে চায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই পরীক্ষায় বসার আবেদন জানায়।
মায়ের পরীক্ষা। ছবি: শুভ্র মিত্র।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বাঁকুড়ার পরীক্ষা আহ্বায়ক পতিতপাবন রায় বলেন, “ওই আবেদনের ভিত্তিতে একজন পরীক্ষক ও পুলিশ পাঠিয়ে ওই ছাত্রীর পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।”
এ দিন দুপুরে ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় ঠাকুমা ও দিদিমার কোলে ঘুরছে শিশুটি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের শয্যায় কোনওরকমে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে কেয়া। চিকিৎসক অরুণকুমার দাস বলেন, “কেয়ার মনে জোর রয়েছে। শিশু ও সে দু’জনেই সুস্থ রয়েছে।” কেয়ার মা রেণুকা সর্দার ও শাশুড়ি তিলক রায় বলেন, “কেয়া বলত যে ভাবেই হোক পরীক্ষা দেব। ওর মনের জোর দেখে আমরাই অবাক হয়ে গিয়েছি।” কেয়ার সম্পর্কিত শ্বশুর দীনবন্ধু মণ্ডল বলেন, “গতবছর কার্তিকের সঙ্গে কেয়ার বিয়ে হয়। স্বামী চাষবাস নিয়ে থাকে। তবে কেয়ার ইচ্ছা আরও পড়াশোনা করবে।” হাসপাতালে পরীক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজগ্রাম গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা সংহিতা ঘাটোয়ারি। তিনি বলেন, “ঠিক বেলা ১২টায় প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছিলাম। দুপুর ৩ টের আগেই সে উত্তরপত্র জমা দিয়েছে। সন্তানের জন্ম দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার তফাতে পরীক্ষায় বসেও ওর চোখে ক্লান্তি দেখিনি।”

পরীক্ষাকেন্দ্রে গন্ধ বিভ্রাট
দু’দিন আগেই গন্ধটা অনেকের নাকে এসেছিল। কিন্তু বুধবার সেই দুর্গন্ধে স্কুলের মধ্যে পরীক্ষা দেওয়া কার্যত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরেও যে কিছু পচে যাওয়ার দুর্গন্ধ ঘুরপাক খাচ্ছিল। বুধবার মানবাজারের রাধামাধব বিদ্যায়তনের ঘটনা। স্কুল কর্তৃপক্ষ খোঁজাখুঁজি করে দেখে স্কুলের পাঁচিলের পাশে একটি কুকুরের দেহ পড়ে রয়েছে। পচন ধরায় তাতেই পরীক্ষার্থীদের ওই হাল। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক চণ্ডীদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই দেহটি তখনই সরানোর লোক পাওয়া যায়নি। তাই বালি এনে কুকুরের দেহটি চাপা দেওয়া হয়। তাতেই চাপা পড়ে দুর্গন্ধ। কিছুটা স্বস্তি পায় পরীক্ষার্থীরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.