জাতপাতের রাজনীতি উস্কে দিয়ে পাল্টা আক্রমণে স্পিকার

২৬ ফেব্রুয়ারি
লালুপ্রসাদের তোলা অভিযোগের স্পষ্ট কোনও জবাব দিতে পারলেন না বিধানসভার স্পিকার উদয়নারায়ণ চৌধুরী। আরজেডির ১৩ জন বিধায়কের সঙ্গে কথা না-বলে তড়িঘড়ি তিনি তাঁদের দলছুট গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করলেন কেন, তা নিয়ে জবাব এড়িয়ে গিয়ে স্পিকার জাতপাতের রাজনীতিকে উস্কে দিতে চাইলেন। বিহারের রাজ্য-রাজনীতিতে এখন সব থেকে বিতর্কিত উদয় চৌধুরীর অভিযোগ, তিনি ‘দুর্বল’ মহাদলিত জাতির মানুষ বলেই তাঁকে ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। বাড়িতে ইট-পাটকেল ছোড়া হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, “আমাকে খুন করার চেষ্টা হচ্ছে।”
আজ সার্কুলার রোডে, তাঁর সরকারি বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন স্পিকার। সেখানে তিনি বলেন, “আমি যা করেছি, তা নিয়ম মেনেই করেছি।” তাঁর ব্যাখ্যা, “সমাজের নিয়ম হল, সংখ্যাগরিষ্ঠের মত মেনে নেওয়া। সে ক্ষেত্রে আরজেডির ২২ জন বিধায়কের ১৩ জনই আমাকে লিখিত ভাবে জানিয়ে যখন বলছেন, তাঁরা জেডিইউকে সমর্থন দিতে দল ত্যাগ করছেন, তখন তা মেনে নেওয়া ছাড়া অন্য কী উপায় ছিল? ওই দলের নেতা তথা মুখ্য সচেতক সম্রাট চৌধুরীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তারপরেই এই অর্ন্তবর্তী সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
প্রশ্ন ওঠে, এমন একটি চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে স্পিকারের কি আলাদা আলাদা ভাবে প্রত্যেক বিধায়কের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল না? তিনি বলেন, “বিধানসভার স্পিকার দলের নেতার সঙ্গে কথা বলে থাকেন। এ ক্ষেত্রেও আমি তাই করেছি।” প্রসঙ্গত, ১৩ জন বিতর্কিত বিধায়কের মধ্যে ৯ জন অভিযোগ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। স্পিকারের জবাব, “আমার এই সিদ্ধান্ত সঠিক কি না, তা নিয়ে আমি সংবিধান এবং সংসদীয় রীতিনীতি আরও পর্যালোচনা করার পরই মন্তব্য করব।” গত কাল ৯ জন বিধায়ক স্পিকারকে চিঠি দিয়ে আরজেডি-তে থাকার কথাই জানিয়েছেন। সে বিষয়ে স্পিকারের অভিমত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “তাঁদের ব্যাপারে আমি পরে সিদ্ধান্ত জানাব।” অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে কোনও তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত স্পিকার নেবেন না। স্পিকারের ‘রুলিং’ কবে দেবেন, তা নিয়ে কোনও সময়সীমাও উদয়বাবু জানাননি।
কাল লালু প্রসাদ যখন বিধায়কদের নিয়ে বিধানসভা ভবনে যাচ্ছেন, সেই সময় উত্তেজিত কিছু সমর্থক স্পিকারের বাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। স্পিকারের বক্তব্য, “এই ঘটনায় আমি খুবই মর্মাহত। আমাকে খুন করার চেষ্টা হয়েছে। আমার পরিবার বা ছেলেমেয়েরও ক্ষতি হতে পারত।” তাঁর আক্ষেপ, “সামাজিক কারণেও এই ঘটনায় আমি উদ্বিগ্ন। তবে উদয়নারায়ণ চৌধুরীকে ভয় দেখানো হলেও, এই সাংবিধানিক পদকে ভয় দেখানো যাবে না।” লালুপ্রসাদ কাল তাঁর বিরুদ্ধে আরজেডির প্রাক্তন সাংসদ রাজেশ কুমারকে খুনের অভিযোগ তুলেছিলেন। তা নিয়ে এ দিন উদয়বাবু বলেন, “প্রমাণ নিয়ে কথা বলতে হবে। আমি যদি এমন কাজ করে থাকি, তার প্রমাণও তা হলে নিশ্চয়ই আছে।” স্পিকার বলেন, “এঁরা ভাবেন, মহাদলিতরা কিছু জানেন না। সংবিধান সর্ম্পকে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের কোনও ধারনা নেই বলেই ওঁরা মনে করেন। আমাকে ভয় দেখিয়ে সিদ্ধান্ত তুলে নেওয়ার খেলায় নেমেছেন দেশের এক বড় নেতা।”
একই সুর শোনা গিয়েছে জেডিইউ-এর গলাতেও। দলের মুখপাত্র সঞ্জয় সিংহ বলেন, “কাল যদি স্পিকার বিধানসভায় তাঁর ঘরে থাকতেন, তা হলে তাঁকে হত্যা করা হতো। আরজেডি বিধানসভায় গুণ্ডাবাহিনী নিয়ে গিয়েছিলেন।” খাদ্যমন্ত্রী শ্যাম রজক বলেন, “স্পিকারকে অপমান এবং হত্যার চক্রান্তে আরজেডি মহাদলিতকে সম্প্রদায়কেই অপমান করেছেন। এই নিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রচারে যাব।”
তবে বিরোধী দলনেতা, আরজেডি-র আব্দুল বারি সিদ্দিকি স্পিকারের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “সাংবিধানিক পদের লোককে অপমান করা অন্যায়। কেউ যদি এটা করে থাকে, তার বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর মহাদলিত, দলিত এবং গরিব মানুষই আরজেডির সম্পদ। এই নিয়ে রাজনীতি করে খুব লাভ হবে না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.