দু’দিন পরে ডিভিসি-র সেচখালে তলিয়ে যাওয়ায় ছাত্রের দেহ মিলল। বুধবার কলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৭) দেহটি উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে ডিভিসির ট্রাফিক সেতুর নীচে কাঠের খুঁটি পাথরের খাঁজে আটকে ছিল দেহটি।
সোমবার কাঞ্চননগরের কাছে ডিভিসির সেচখালে স্নান করতে যায় বর্ধমানের দুই স্কুলের চার পড়ুয়া। ভরা স্রোতে জলে ঝাঁপ দিতেই হাবুডুবু খেতে থাকে দু’জন। বাকিদের চিৎকার শুনে এলাকার দুই যুবক ছুটে আসেন। এক ছাত্রকে বাঁচাতে পারলেও অর্ঘ্যের খোঁজ পাননি তাঁরা। মঙ্গলবার অর্ঘ্যের পরিবার পুলিশের তরফে পুরোপুরি সাহায্য মিলছে না বলে অভিযোগ করা হয়। তখন এক পুলিশকর্তা জানান, জেলায় কোনও ডুবুরি নেই। কলকাতা থেকে ডুবুরি আনিয়ে নামানো হবে।
বুধবার সকাল থেকেই কলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যেরা মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে কাঞ্চননগরের কাছে ডিভিসি সেচখালে ডুব দিতে শুরু করেন। একটানা ১৫-২০ মিনিট ধরে জলের গভীরে গিয়ে ছাত্রটির খোঁজ চালান তাঁরা। অপারেশন শুরু হয় সকাল এগারোটা নাগাদ। |
উদ্ধার কাজে হাত লাগান স্থানীয় কিছু যুবকও। তবে দুপুর গড়িয়ে গেলেও দেহ মিলছিল না। এমনকী দেড়টা নাগাদ দেহ খুঁজে না পেয়ে দলটি হাল ছেড়ে দিয়ে ফিরে আসতে চাইছিল। কিন্তু বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুরোধে তাঁরা ঘটনাস্থলের কিছুটা দুরে নতুন করে অপারেশন শুরু করেন। এরপরেই খোঁজ মেলে অর্ঘ্যের দেহের। দেহটি উদ্ধার করার পরে ওই দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাকি চার ছাত্রকে জেরা করতে শুরু করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ।
এ দিকে ওই ছাত্রের দেহ উদ্ধারে সহযোগিতার প্রশ্নে পুলিশ ও মহকুমা প্রশাসনের মধ্যে চাপান উতোর শুরু হয়েছে। আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “আমরা বারবার বর্ধমান মহকুমা প্রশাসনের কাছে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যদের কাজের জন্য একটি নৌকা চাইছিলাম। কিন্তু নৌকা না মেলায় দেহ উদ্ধার করতে বেশ দেরি হয়ে যায়।” মহকুমাশাসক উত্তর স্বপনকুমার কুণ্ডুর অবশ্য জবাব, “ওই ছাত্রের দেহ উদ্ধার কাজের সমস্তই তো আমাদের উদ্যোগে হয়েছে। আমরাই তো কলকাতা থেকে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট দলটিকে আনিয়েছি। ওই সেচখালের জল বন্ধ করিয়ে উদ্ধার কাজ শুরুও করিয়েছি। তবে নৌকা দেওয়া হয়নি। কারণ, ডিভিসির মূল প্রবাহ বন্ধ থাকার পরে বড় নৌকা নামার মত জল ওখানে থাকবে না। সেক্ষেত্রে নৌকা নদীগর্ভে ঠেকে যেত।” |