বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে মিড-ডে-মিলের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা। শৌচাগার ব্যবহারের অযোগ্য। এমনই অভিযোগে স্কুল ঘরে তালা ঝুলিয়ে ঘণ্টা দু’য়েক শিক্ষকদের আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাল পড়ুয়া এবং অভিভাবকরা। রান্নাঘরেও তালা দিয়ে রাধুনিদের আটকে রাখা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিদ্যালয় পরিদর্শক, যুগ্ম বিডিও এবং পুলিশকর্মীরা। মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটে দেগঙ্গা ব্লকের দেউলিয়া জুনিয়র বেসিক স্কুলে। শেষে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা নিরস্ত হন।
ঘটনার পরে প্রধান শিক্ষক প্রদীপ রায় বলেন, “বিক্ষোভকারীদের দাবি অত্যন্ত সঙ্গত। বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং শৌচাগারের জন্য একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।” |
পড়ুয়াদের বিক্ষোভে সামিল অভিভাবকেরাও। —নিজস্ব চিত্র। |
বিদ্যালয় এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ২৮৩। শিক্ষক-শিক্ষিকা ৯ জন। অভিযোগ, দুর্গন্ধে ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে শৌচাগারে ঢোকা দায় হয়ে পড়ে। বিদ্যালয়ের কলের জল খাওয়ার অযোগ্য। রান্নার জন্য রাস্তার পাইপ লাইনের জলের উপর নির্ভর করতে হয়। অভিভাবকদের অভিযোগ, ওই জলের রান্না খেয়ে ছেলেমেয়েদের প্রায়ই শরীর খারাপ হচ্ছে। অথচ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বার বার তা জানানো হলেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। গ্রামবাসীদের ধৈর্যের বাঁধ ক্রমেই ভাঙছিল। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ রীতিমতো পোস্টার হাতে স্কুলে ঢোকেন অভিভাবক এবং পড়ুয়ারা। শুরু হয় বিক্ষোভ।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে যুগ্ম বিডিও কৌশিক পরামানিক, বিদ্যালয় পরিদর্শক কালীপদ সানা ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরাও গ্রামবাসীদের প্রশ্নের মুখে পড়ে যান। গ্রামবাসী শুকদেব বিশ্বাস, নিপা পাল, শিপ্রা বিশ্বাস বলেন, “ওই নোংরা জলে রান্না করা খাবার শিশুদের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক। শোচাগারের দশাও বেহাল। স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই পরিস্থিতি বদল হচ্ছে না।” সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি যুগ্ম বিডিও। তিনি বলেন, “বিদ্যালয়ে শীঘ্রই একটি গভীর নলকূপ বসানোর ব্যবস্থা করা হবে।” তবে অভিভাবকদের অনেকে জানিয়ে গেলেন, যত দিন না প্রতিশ্রুতি কাজে পরিণত হচ্ছে, তত দিন তাঁরা ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাবেন না। |