কটূক্তি, দুর্ব্যবহার, মারধর তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। সেই অটোচালকদেরই অন্য মুখ দেখা গেল সোমবার, মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিনে। কোনও ভাড়া না-নিয়েই তাঁরা পরীক্ষার্থী আর তাদের অভিভাবকদের পৌঁছে দিলেন বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে। জানালেন, শুধু এ দিন নয়, পরীক্ষার অন্যান্য দিনেও তাঁরা এ ভাবেই ওই সব ছাত্রছাত্রীর পাশে দাঁড়াবেন।
জীবনে যারা প্রথম বড় পরীক্ষায় বসছে, তাদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এত দিন কিছু কিছু বাসের ব্যবস্থা হতো। এ দিন দেখা গেল, অটোর সামনে সাদা কাগজে লেখা রয়েছে: ‘মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য’, ‘পরীক্ষা স্পেশ্যাল অটো’। অনেকে ভেবেছিলেন, সহজে অটো ভরিয়ে পকেট ভরানোরই নতুন ফিকির এটা। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মোটেই তা নয়। অভিভাবক-সহ পরীক্ষার্থীদের বিনা ভাড়ায় গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে ওই সব অটো। বাগুইআটি থেকে উল্টোডাঙা, সাতগাছি, জগৎপুর, হাতিয়ারা, রাজারহাট-সহ অন্তত ১২টি রুটের অটোচালকেরা এ দিন এই পরিষেবা দিয়ে দৃষ্টান্ত হলেন। |
তৃণমূল পরিচালিত ইউনিয়ন আইএনটিটিইউসি-র তরফে বাবাই বিশ্বাস বলেন, “এ দিন বাগুইআটি থেকে প্রতিটি রুটে ৩০টি করে অটো রাখা হয়েছিল পরীক্ষার্থী আর তাদের অভিভাবকদের জন্য। এই পরিষেবা মিলবে পুরো পরীক্ষা পর্বেই।”
শুধু অটোরিকশা নয়। ওই ইউনিয়নের তরফে জানানো হয়, বাগুইআটি-বি বা দী বাগ রুটের মিনি বাস ও বাগুইআটি হাওড়ার ৪৪ নম্বর বাস এবং ৩০সি বাসও পরীক্ষা চলাকালীন মাধামিক পরীক্ষার্থীদের বিনা ভাড়ায় গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে। এই পরিষেবা পেয়ে পরীক্ষার্থীরাও খুশি। এক পরীক্ষার্থী জানায়, বাগুইআটি বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে তারা দেখে, বাসে খুব ভিড়। অটোতেও লম্বা লাইন। কী ভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছবে, চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল তারা। তার পরেই তারা জানতে পারে, তাদের জন্য কিছু স্পেশ্যাল অটোর ব্যবস্থা হয়েছে। ওই সব অটোই তাদের নির্ঝঞ্ঝাটে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছে। এক অভিভাবক বললেন, “পরীক্ষার চাপের মধ্যে কী ভাবে নির্দিষ্ট সময়ে হলে পৌঁছনো যাবে, ছাত্রছাত্রীরা তা নিয়ে চিন্তায় থাকত। অটোচালকেরা পরীক্ষার্থী আর আমাদের সেই দুর্ভাবনা থেকে মুক্তি দিয়েছেন।” |