দমকলকেন্দ্র হয়নি, এগরায় ছাই ৩৫টি দোকান
মকে রয়েছে এগরা মহকুমায় দমকল কেন্দ্র তৈরির কাজ। মহকুমার কোথাও আগুন লাগলে এখনও ভরসা ৩০ কিলোমিটার দূরের কাঁথি দমকলকেন্দ্র। তাই কাছে দমকলকেন্দ্র না থাকায় রবিবার রাতে এগরা শহরে বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল প্রায় ৩৫টি দোকান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে এগরা শহরের এগরা থানা সংলগ্ন হাইস্কুলের মাঠ যাওয়ার রাস্তার পাশের দোকানে আগুন লাগে। স্থানীয় বাসিন্দারা এ দিন রাত ১০টা নাগাদ স্থানীয় একটি তুলোর দোকানে প্রথম আগুন দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে দমকলে খবর দেওয়া হয়। আগুন দ্রুত আশেপাশের চাল, ভূসিমাল, স্টেশনারি দোকানে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এগরা থানার পুলিশ। এ দিন রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ দমকল এসে পৌঁছয়। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন প্রায় দু’ঘণ্টায় চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে এলাকার প্রায় ৩৫টি দোকান। আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মামুদ হোসেন বলেন, “আগুনে প্রায় ৩৫টি দোকানের ক্ষতি হয়েছে। আর্থিক অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।”
এভাবেই পড়ে এগরার দমকলকেন্দ্র। ছবি: কৌশিক মিশ্র।
আগুন লাগার খবর পেয়ে এগরার তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাস ঘটনাস্থলে যান। বিধায়ককে ঘিরে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর লোকেরা বিক্ষোভ দেখায়। সমরেশবাবুর অভিযোগ, “দলের কয়েকজন জয়ন্ত সাউয়ের নেতৃত্বে আমার সঙ্গে অভদ্র আচরণ করে।” যদিও জয়ন্ত সাউ বলেন, “আমি শুভেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারীর নির্দেশে আগুন নেভানোর কাজে ব্যস্ত ছিলাম। বিধায়কের সঙ্গে অভদ্র আচরণের বিষয়ে কিছু জানিনা।” কাঁথি দমকল কেন্দ্রের স্টেশন অফিসার এ কে মানি বলেন, “আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দু’টি ইঞ্জিন রওনা দেয়। রাস্তা খারাপ হওয়ার দরুণ ঘটনাস্থলে পৌঁছতে দেরি হয়। তিনি জানান, ওই দোকানগুলিতে দাহ্য পদার্থ ও গ্যাস সিলিন্ডার মজুত থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া জলের সমস্যার জন্যও আগুন নেভাতে দেরি হয়।
২০০৫ সালে এগরা ২ ব্লকের বিশরপুর গ্রামে দমকলকেন্দ্রের শিলান্যাস করেন এগরার প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তণ মন্ত্রী প্রবোধ সিংহ। সমরেশবাবুর অভিযোগ, “শিলান্যাস হলেও অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় সেই সময় দমকল কেন্দ্রের কাজ শুরুই করা যায়নি। ২০০৯ সালের পর থেকে দমকল কেন্দ্রের কাজ শুরু হলেও বিগত বাম সরকারের আমলে বরাদ্দ ঠিকমতো না মেলায় কাজ ফের থমকে যায়। তবে রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার ফের কাজ শুরু হয়েছে।” প্রশ্ন হল, তা সত্ত্বেও দমকলকেন্দ্র চালু করা গেল না কেন? তিনি বলেন, “দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার গড়িমসিই দমকলকেন্দ্রের কাজে ঢিলেমির জন্য দায়ী। দমকলকেন্দ্রের বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি অগ্নি নির্বাপন দফতর থেকে নতুন বরাদ্দ আসায় ফের দ্রুত কাজ শুরু হবে।” যদিও পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয় পাল বলেন, “বছর চারেক আগে ওই দমকলকেন্দ্রের কাজ অর্ধেক শেষ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা কাজ বন্ধ করে দেয়। ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও হয়েছে। তবে
কেন্দ্রের বাকি কাজের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তা পেলেই ফের কাজ শুরু হবে।”
প্রসঙ্গত, পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাবে কাঁথির দমকলকেন্দ্রটির অবস্থাও বেহাল। কাঁথি ও এগরা মহকুমার ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র এলাকা অর্থাৎ দু’টি পুরসভা, ১৩টি ব্লক ও দশটি থানা এলাকায় কোথাও আগুন লাগলে কাঁথির দমকলবাহিনীকেই ছুটে যেতে হয়। এত বড় এলাকার অগ্নিনির্বাপনের দায়িত্ব কাঁধে থাকলেও কর্মী সমস্যায় ধুঁকছে দমকলকেন্দ্রটি। বিগত বাম আমলে দিঘার রামনগর থানার নিমতলায় ও এগরা মহকুমায় দমকল কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। এগরার মহকুমাশাসক অসীমকুমার বিশ্বাস বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ অমূলক নয়। এটা ঠিকই, এগরায় দমকলকেন্দ্র থাকলে আগুন নেভাতে অনেক সুবিধা হত। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.