দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছোট ট্রাকে এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল চিৎপুরে।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সকালে চিৎপুর থানা এলাকার খগেন চ্যাটার্জি স্ট্রিটের কয়েক জন বাসিন্দা এবং এক নিরাপত্তারক্ষী চিৎপুর থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে রামমুরাল গুপ্ত নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে ওই এলাকারই বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, সে ওই ট্রাকের চালক।
পুলিশ জানিয়েছে, খগেন চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাসিন্দা রাজেশ যোশী অভিযোগ করেছেন, এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ তিনি দেখেন তাঁর বাড়ির নীচে ‘চিনিকল’ গুদামের সামনে একটি ছোট ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। তিনি জানান, ট্রাকটির ইঞ্জিন চালু অবস্থায় ছিল। চালকের আসনে বসে ছিল এক যুবক। আর পিছনের দিকে চার জন যুবক দাঁড়িয়ে এক মহিলাকে হাত ধরে ট্রাক থেকে নামাচ্ছিল বলে পুলিশকে জানান তিনি। ওই মহিলার পরনের কাপড় অবিন্যস্ত অবস্থায় ছিল এবং তিনি নিজেই তা ঠিক করার চেষ্টা করছিলেন বলেও জানান রাজেশ। তিনি আরও জানিয়েছেন, চার জনের মধ্যে এক জনকে তিনি চেনেন। তাঁকে দেখার পরেই ওই যুবকেরা এলাকা ছেড়ে চলে যায়। |
সেই ট্রাক। —নিজস্ব চিত্র। |
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, রাজেশ এই ঘটনার কথা এলাকার অন্য বাসিন্দাদের জানান। গুদামটির এক নিরাপত্তারক্ষী সতীশ তিওয়ারিও ওই ঘটনা দেখেছেন বলে বাসিন্দাদের জানান। এর পরেই অন্যদের সঙ্গে সকাল ন’টা নাগাদ রাজেশ এবং সতীশ চিৎপুর থানায় গিয়ে ঘটনাটি বলেন এবং অভিযোগ দায়ের করেন। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার(উত্তর) গৌরব শর্মা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরেই গণধর্ষণের মামলা শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগ দায়ের করার পরেই অভিযোগকারীদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান চিৎপুর থানার ‘ডিউটি’ অফিসার। গুদামেই সন্ধান মেলে ওই মহিলার। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় এবং পরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আর জি করে নিয়ে যাওয়া হয়। লালবাজার সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল থেকেই ট্রাকটির চালক রামমুরাল গুপ্তকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে পুলিশ এলাকার বেশ কয়েক জন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় আনে। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ দিকে পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাত পর্যন্ত তাঁরা নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। তদন্তকারীদের বক্তব্য, ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন এবং ভবঘুরে। তাই তাঁর সঙ্গে ঠিক কী হয়েছিল, তা জানতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিচ্ছে পুলিশ। পুলিশ ওই মহিলার পরিবারের সদস্যদেরও খোঁজ করছে। ওই মহিলাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও এ দিন ওই পরীক্ষা করা হয়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। |