ছাদ থেকে ধাক্কা ছাত্রকে, ধৃত ১৩
দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃতীয় বর্ষের ‘দাদা’দের বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির নরসিংহপুরে একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজে শনিবারের ওই ঘটনায় পুলিশ তৃতীয় বর্ষের ১৩ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে।
জখম ছাত্র সুদেব পাল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মালদহের ইংরেজবাজার এলাকার বাসিন্দা সুদেবকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল শনিবার রাতেই। রবিবার সকালে তাঁকে বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই ছাত্রের মেরুদণ্ডে আঘাত লেগেছে। আপাতত উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই তাঁর। দ্রুত অস্ত্রোপচারের জন্য ওই ছাত্রকে রবিবার রাতে বর্ধমানের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন পরিবারের লোকেরা। এই ঘটনার জন্য সুদেবের পরিবার কলেজ হস্টেলে র্যাগিংয়ের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে। জখম ছাত্রের দাদা জয়দেব পাল বলেন, ‘‘কলেজে র্যাগিং হত বলে বাড়িতে ভাই অনেক বার বলেছে। কিন্তু, এই ভাবে খুন করার চেষ্টা হবে ভাবিনি।”
ডোমকলের এসডিপিও অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রের অভিযোগের ভিত্তিতে তৃতীয় বর্ষের ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিকল্পিত ও সংগঠিত ভাবে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়েছে।’’ একই সঙ্গে ওই পলিটেকনিক কলেজের ‘অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি’ দ্রুত বৈঠকে বসে রবিবারই ধৃত ১৩ জন ছাত্রকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগেই কড়া এই পদক্ষেপ কেন, জানতে চাইলে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা তথা অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির সভাপতি প্রসেনজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে এর আগেও আমরা নানা রকম অভিযোগ পেয়েছি। তাই এ দিন আর দ্বিধা না রেখে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভলিবল খেলায় তৃতীয় বর্ষের কাছে হেরে যান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা। তার পর থেকেই দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের ‘দাদারা’ টিটকারি দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রেরা প্রতিবাদ করায় শনিবার রাতে দু’পক্ষের গণ্ডগোল বাধে। কলেজ কর্তৃপক্ষ হস্টেলে এসে মধ্যস্থতা করেন। তখনকার মতো অশান্তি মিটলেও বেশি রাতে ফের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রেরা হামলা চালান বলে অভিযোগ। দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রের অভিযোগ, “প্রায় প্রতি রাতেই দাদারা এসে র্যাগিং করে। শনিবার রাতেও ওরা একসঙ্গে দরজা ভেঙে আমাদের উপরে চড়াও হয়। আমরা যে-যার মতো পালিয়ে যাই। কয়েক জন মারও খায়।” হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সুদেব কোনও রকমে বলেন, “খেলায় জিতে দাদারা র্যাগিং করছিল। রাতে ওই ঘটনার প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর ওরা চড়াও হয়। আমাকে লাথি মেরে হস্টেলের ছাদ থেকে ফেলে দেয়।” তৃতীয় বর্ষের ছাত্ররা গণ্ডগোলের কথা মানলেও ঠেলে ফেলার অভিযোগ মানতে চাননি। তাদের বক্তব্য, “গণ্ডগোলটা দু’পক্ষের মধ্যে। ওই ছাত্র অন্ধকারে পালাতে গিয়ে নিজেই পড়ে গিয়েছে।”
বছর দেড়েক আগে এই কলেজেরই এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল শৌচাগারে। নেশা করতে গিয়ে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ। এ দিনের ঘটনার পর ফের কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় কিছু বাসিন্দা বলেন, “ওই কলেজে প্রায়ই ছেলেরা নেশা করে গোলমাল করে। বলেও লাভ হয় না। আমরাও তিতিবিরক্ত হয়ে পড়ে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.