ইউরো নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ
প্লাতিনি বনাম ইংল্যান্ড-জার্মানি
ড্র ঘোষণা হতেই ইউরো ২০১৬ নিয়ে শুরু হয়ে গেল বিতর্ক। যার এক দিকে উয়েফা প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনি আর অন্য দিকে ফুটবল বিশ্বের মহাশক্তিধর ইংল্যান্ড, জার্মানি। ১৯৯৬ থেকে ইউরোর ফাইনাল ১৬ দলের হলেও এ বার ফর্ম্যাটে বদল এনে তা ২৪ দলের করা হয়েছে। এই নিয়েই যত অশান্তি।
ইংল্যান্ড মিডিয়া প্লাতিনিকে রীতিমতো তুলোধোনা করে ছেড়েছে। এমনও বলা হয়েছে গোটাটাই রাজনৈতিক উদ্দেশে করা। ইংরেজ মিডিয়ার অভিযোগ, এ বছর ফুটবল বিশ্বকাপের পর প্লাতিনি ফিফা প্রেসিডেন্টের পদে লড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বললেও আগে-ভাগেই প্রস্তুতিটা সেরে রাখছেন। ২৪ দলের ফর্ম্যাট করে, ইউরোয় বেশি দেশকে খেলার সুযোগ করে দিয়ে বিভিন্ন দেশের ফুটবল সংস্থাকে খুশি করাটাও প্লাতিনির সেই পরিকল্পনারই অঙ্গ।
শুধু ফর্ম্যাটেই নয় ম্যাচের সম্প্রচারেও বদল আনার কথা বলেছেন উয়েফা প্রেসিডেন্ট। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তাহে দুই বা তিন দিনের বদলে ইউরোর বাছাই পর্ব হবে ছ’দিন। সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবার। যা নিয়েও প্রবল আপত্তি তুলেছে ইংল্যান্ড আর জার্মানি। তাদের মতে, টিভি সম্প্রচার থেকে আসা বিপুল অর্থের কথা ভেবে উয়েফা এত ঘন ঘন ম্যাচে রাজি হয়ে গেলেও এতে টুর্নামেন্টের মান খারাপ হবে। তা ছাড়া ক্লাব ফুটবলের চাপ সামলে এক বছরেরও বেশি (২০১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৫ নভেম্বর) চলা উয়েফা কোয়ালিফায়ারে খেলতে গিয়ে ফুটবলাররা ক্লান্তির কোপে পড়বেন।

মিশেল প্লাতিনি। বিতর্কের কেন্দ্রে।
প্লাতিনি অবশ্য কড়া ভাষায় সব সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছেন, “ইংল্যান্ড আর জার্মানির মতো বড় ফুটবল সংস্থা এই ফর্ম্যাটের বিরুদ্ধে। কিন্তু উয়েফার ৫৪ সদস্যের মধ্যে ৫১টা দেশই এই টুর্নামেন্ট সমর্থন করেছে। যে কোনও গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন যে দিকে থাকে সেটাই করা হয়। এমনকী ইংল্যান্ড আর জার্মানির মতো দেশ সমর্থন না করলেও।” প্লাতিনির ‘এক্সপ্যানিওসিজম’ পরিকল্পনার সমালোচকদের মধ্যে সবচেয়ে কড়া জার্মানির কোচ জোয়াকিম লো-কেও এক হাত নেন তিনি। বলেন, “ওঁর যখন এতটাই আপত্তি তখন টুর্নামেন্টে না খেললেই পারতেন। বেশির ভাগ সদস্যই যেটা সমর্থন করেছেন, সেটাই করা হয়েছে।”
আয়োজক দেশ হিসেবে ফ্রান্স সরাসরি ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করায় বাকি ২৩টি স্থানের জন্য লড়াই ৫৩টি দেশের। যেখানে তিন বারের চ্যাম্পিয়ন স্পেন, জার্মানির পাশাপাশি উয়েফা স্বীকৃতি দেওয়ার পর প্রথম এই টুর্নামেন্টে নামা জিব্রাল্টারও থাকবে। প্লাতিনি যে জন্য বলছেন, “আমরা ২৪টা খুব ভাল দল পাব কোয়ালিফায়ার থেকে। তাই এই টুর্নামেন্টটা সফল হতে পারে। বুঝতে পারছি টিমগুলোর উপরে অনেক চাপ থাকবে। খুব শক্তিশালী ক’য়েকটা টিম আছে। তবে পাঁচ-ছ’টা বড় টিমের খুব বেশি চিন্তার কিছু নেই। ১৬টা দলের মতো (আগের ফর্ম্যাট) এ বারের ২৪টা দলও ভাল হবে।”
এফএ বা ডিএফবি-র মতো ফুটবল সংস্থার সমালোচনায় পাত্তা না দিয়ে উয়েফা প্রেসিডেন্ট এক লহমায় আন্তর্জাতিক ফুটবলের চেহারা বদলে দেওয়ার চেষ্টায় মজে আছেন। শুক্রবার বা মঙ্গলবারের বদলে বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুটবলারদের লড়াই প্রত্যেক দিন ৮-১০টা ম্যাচে দেখার সুযোগ পাবেন দর্শকরা। কিন্তু এর মধ্যেও বিশ্বের ফুটবল মহলে একটা প্রশ্ন কিন্তু উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে বিভিন্ন টুর্নামেন্টের চাপ সামলে কোয়ালিফায়ারের মান বজায় রাখা যাবে তো? ১৫ মাসের কেয়ালিফায়ারের পর তৃতীয় স্থানে থাকা টিমের প্লে-অফ চলবে, তার মধ্যেই আবার আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলির চাপও থাকবে। তারপরও ক্লাব ম্যানেজাররা ফুটবলারদের থেকে সেরাটা বের করে নিতে পারবেন তো? না সেখানেও থাবা বসাবে চোট-আঘাত?
ইউরো ২০১৬ কোয়ালিফায়ার্স
গ্রুপ ‘এ’ চেক প্রজাতন্ত্র, আইসল্যান্ড, কাজাখস্তান, লাটভিয়া, নেদারল্যান্ডস, তুরস্ক
গ্রুপ ‘বি’ অ্যান্ডোরা, বেলজিয়াম, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, সাইপ্রাস, ইজরায়েল, ওয়েলস
গ্রুপ ‘সি’ বেলারুশ, ম্যাসিডোনিয়া, লুক্সেমবুর্গ, স্লোভাকিয়া, স্পেন, ইউক্রেন
গ্রুপ ‘ডি’ জর্জিয়া, জার্মানি, জিব্রাল্টার, পোল্যান্ড, আয়ার্ল্যান্ড, স্কটল্যান্ড
গ্রুপ ‘ই’ ইংল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া, সান মারিনো, স্লোভেনিয়া, সুইৎজারল্যান্ড
গ্রুপ ‘এফ’ ফারো দ্বীপপুঞ্জ, ফিনল্যান্ড, গ্রিস, হাঙ্গেরি, উত্তর আয়ার্ল্যান্ড, রোমানিয়া
গ্রুপ ‘জি’ অস্ট্রিয়া, লিচেস্টাইন, মলদোভা, মন্টেনেগ্রো, রাশিয়া, সুইডেন
গ্রুপ ‘এইচ’ আজারবাইজান, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ইতালি, মাল্টা, নরওয়ে
গ্রুপ ‘আই’ আলবেনিয়া, আর্মেনিয়া, ডেনমার্ক, পর্তুগাল, সার্বিয়া




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.