দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে ট্রেনের তলায় ঝাঁপ, মালদহে মৃত তিন
দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে ট্রেনের তলায় ঝাঁপ দিলেন এক মহিলা। শনিবার সকালে মালদহের লক্ষ্মীপুর গ্রামের এই ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান অপর্র্ণা মণ্ডল (২৭) ও তাঁর দুই মেয়ে চার বছরের রিজা ও দেড় মাসের জুলি। ঘটনার পরেই রেল পুলিশ এবং রতুয়া থানায় খবর দেওয়া হলেও, প্রায় ৭ ঘণ্টা শ্রীপুর ও কুমারগঞ্জ রেল স্টেশনের মাঝে ওই রেল লাইনের ধারে দেহগুলি পড়ে ছিল বলে অভিযোগ। সন্ধ্যা ৬টার পরে রেল পুলিশ মা এবং দুই মেয়ের দেহ উদ্ধার করে। মালদহের জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “বিষয়টি নিয়ে রেল পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। রেল পুলিশ তদন্ত করছে।”
ঘটনার পরে লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের না হলেও, মৃতার মা এবং দাদার দাবি, পরপর দুই মেয়ে হওয়ার কারণে শ্বশুরবাড়িতে ক্রমাগত গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে অর্পণাদেবীকে। তাঁদের অভিযোগ, তাঁকে মাঝে মধ্যে মারধরও করা হতো। বেশ কয়েকবার বাপের বাড়িতেও পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এ দিন সকালেও তাঁকে মারধর করে শ্বশুর বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তের পরে রেল পুলিশ সূত্রে অবশ্য ঘটনাটিকে আত্মহত্যার বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে দীর্ঘক্ষণ তিনটি দেহ রেল লাইনের ধারে পড়ে থাকায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। মালদহ টাউন স্টেশনের রেল পুলিশের ইন্সপেক্টর বিশ্বজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মালদহ স্টেশন থেকে ঘটনাস্থল অনেকটা দূরে হওয়ায় অফিসারদের পৌঁছতে সময় লেগেছে।”
ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন?
প্রত্যক্ষদর্শী নুরুল ইসলাম, সুভাষ মণ্ডলেরা বলেন, “আমরা মাঠে কাজ করছিলাম। সকাল সাড়ে ১টা নাগাদ হঠাৎ দেখলাম একজন মহিলা কোলে একটি শিশু ও আরেকটি শিশুর হাত ধরে রেললাইনের দিকে যাচ্ছেন। উল্টোদিক থেকে একটি মালগাড়ি আসছিল। ওই মহিলাকে চিৎকার করে আটকানোর চেষ্টা করি। কিন্তু পারলাম না। আমাদের চোখের সামনে ওই মহিলা প্রথমে বড় মেয়েকে মালগাড়ির নীচে ছুড়ে ফেললেন। তারপরে নিজে কোলের মেয়েকে নিয়ে ঝাঁপ দিলেন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত বছর আগে ইটাহারে ঠিলবিল গ্রামের অপর্ণার সঙ্গে রতুয়ার ঝগড়াপাথার গ্রামের অরবিন্দ মণ্ডলের বিয়ে হয়। বিয়ের তিন বছরের মধ্যেই প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। দেড় মাস আগে দম্পতির আরও একটি মেয়ে হয়। তারপরেই তাঁর উপরে অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়ে বলে অভিযোগ পরিজনেদের।
রতুয়ার ঝগড়াপাথার গ্রামের বাসিন্দা জাকির শেখ বলেন, “সকালে চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি, অরবিন্দ ওঁর স্ত্রীকে মারছে। পরে অপর্ণাকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেও দেখেছি।” গ্রামে গিয়ে দেখা গেল অরবিন্দ মণ্ডলের বৌদি ঘরের কাজে ব্যস্ত। বৌদি টুম্পাদেবীর কথায়, “কিছু বলতে পারব না।আমরা আলাদা থাকি। অরবিন্দ পাশের ঘরে থাকে।” অরবিন্দকে অবশ্য এ দিন বাড়িতে পাওয়া যায়নি।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.