কর্তব্যনিষ্ঠা, সিনসিয়ারিটি, পারফেকশন শব্দগুলো কানে এলে চোখে একটা লম্বা লোকের ছবি ভেসে ওঠে অজিত ভট্টাচার্য। ১৯৮১ সাল, আকাশবাণীতে আমি নতুন আমদানি। ডিউটি অফিসার হিসেবে ডিউটিরুমে কাজ, সম্প্রচারের খুঁটিনাটি তদারক এবং ভুল-ত্রুটিগুলো লিখিত ভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো ছিল আমাদের কাজ। প্রবীণ অজিতদা ছিলেন এ রকমই এক ডিউটি অফিসার। ডিউটি অফিসার হিসেবেই উনি রিটায়ার করেছিলেন। অজিতদা ডিউটিরুমে ঢোকার সময় দু’হাত জোড় করে কপালে ঠেকাতেন। কারণ বলেননি। প্রবীণ সহকর্মী মুকুল সেন চট্টগ্রামি উচ্চারণে বলেছিলেন, ‘ডিউটিরুমটা হল ম-অ-ন্দি-র।’
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
তখন দিল্লি থেকে প্রচারিত ইংরিজি খবরগুলো শুনে খবরের সারাংশ লিখে রাখতে হত। এই খবরগুলোর উপর কখনও কখনও অনুষ্ঠান পরিকল্পনা নির্ভর করত। অজিতদা পুরো খবরটাই শর্টহ্যান্ডে লিখতেন, পরে ইংরিজিতে পরিবর্তন করে নিতেন। শুধু এটুকু করার জন্যই নাকি শর্টহ্যান্ড শিখেছিলেন অজিতদা।
যখন আকাশবাণীতে ঢুকি, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, বাণীকুমার, শ্রীধর ভট্টাচার্য, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, ভি জি যোগ এঁদের চেয়ারে পাইনি, তবে ঘোষকদের নক্ষত্রমণ্ডলী দেখেছি। জানি না, বিখ্যাত ঘোষকদের বেশির ভাগের পদবি কেন ঘোষ ছিল। পার্থ ঘোষ, গৌরী ঘোষ, দিলীপ ঘোষ, শংকর ঘোষ প্রমুখ। অজিতদা বলতেন, এই যে ঘোষবৃন্দ, ঘোষণা জিনিসটা সোজা নয়, ঘষতে হয়, গলাটা ঘষামাজা করতে হয়, নলেজটাও ঘষতে হয়। আলুর দর ঘোষণা আর সাইক্লোন ওয়ার্নিং ঘোষণার তফাতটা বুঝতে হয়। অজিতদা দুঁদে ঘোষকদেরও ভুল ধরতেন এবং লিখতেন। ভুল না ধরতে পারলে মনে হত সে দিনের মাইনে নেওয়াটা জায়েজ হল না। এক দিন সারা ক্ষণ কান খাড়া করেও কোনও ভুল ধরতে না পেরে, ডিউটি শেষে পার্থ ঘোষকে বলেছিলেন, অ্যাই পার্থ, তোর কাছে হাত জোড় করে বলছি, একটা ভুল বলে দে মাইরি। তুই তো জানিস কী ভুল করেছিস। একটা ভুল বল, আমার চাকরিটা বাঁচা। ওঁর ধারণা ছিল, ফল্টলেস ব্রডকাস্টিং হতে পারে না। কিছু-না-কিছু ভুল হবেই। মজার ভুলও হত। গ্রামোফোন রেকর্ডের লেবেলে সব লেখা থাকত রোমান অক্ষরে। পল্লিগীতির শিল্পী শাসন গায়েন। লেবেলে লেখা, SASAN GAYEN। কেউ ঘোষণা করে দিলেন শ্মশান গায়েন। শুনেই অজিতদা মাথার চুল ছিঁড়লেন। ওই রেকর্ড বাজানোর আগে অ্যানাউন্সারদের পইপই করে বলে দিতেন, শ্মশান নয়, শাসন। শ্মশান বললে মেরে লাশ বানিয়ে দেব। ‘মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে’ এই বিখ্যাত সংলাপবীজের জন্মদাতা যে অজিতদাই, তা কেউ জানে না। এক হিন্দি গানটান না-শোনা বঙ্গসংস্কৃতিমান ক্যাজুয়াল অ্যানাউন্সার হিন্দি সিনেমার গান বাজিয়েছিলেন। ঘোষণায় ছিল, ‘এখন একটি হিন্দি ছায়াছবির গান শুনবেন, ছায়াছবির নাম ‘কাটিলো, কে কাটিলো?’ অজিতদা আবার চুল ছিঁড়লেন। গেল, আমার চাকরিটা গেল...। আসলে, সিনেমাটার নাম ছিল ‘কাতিলোঁ কে কাতিল’। রোমান অক্ষরে যা লেখা ছিল, সরল ঘোষক তা-ই পড়েছিলেন।
একটা গ্রামোফোন রেকর্ডের গান সাধারণত তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিট চলে। কোনও কোনও অ্যানাউন্সার রেকর্ডটা চালিয়ে দিয়ে টুক করে টয়লেট সেরে আসতেন, বা বাইরে এসে সিগারেটে ফটফট করে কয়েকটা টান মেরে নিতেন। এক দিন এক বিখ্যাত শিল্পীর গলায় রবীন্দ্রসংগীত। শোনা যাচ্ছে মাগি মরণ...মাগি মরণ...মাগি মরণ...‘সর্বনাশ হয়ে গেল’, আর্তনাদ করে অজিতদা ডিউটিরুম থেকে স্টুডিয়োর দিকে ছুটলেন। সদ্য সাবান-ধোয়া মসৃণ মেঝেতে পা পিছলে পড়ে গেলেন, আবার উঠে স্টুডিয়োতে ঢুকে স্টাইলাস সরিয়ে দিলেন। ঘরে ঘোষক ছিলেন না, রেকর্ডটা ট্র্যাকব্যাক করছিল। গানটা ছিল, ‘তোমার কাছে এ বর মাগি, মরণ হতে যেন জাগি গানের সুরে’। কিন্তু, ট্র্যাকব্যাকটা হচ্ছিল একটা বিচ্ছিরি স্পটে। অজিতদা রেকর্ডটাকে মরণ হতে জাগিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু পা-টাকে বাঁচাতে পারেননি। গোড়ালির জয়েন্ট ভেঙে গিয়েছিল, এর পর অফিসে আসতেন লাঠি নিয়ে, খুঁড়িয়ে।
অজিতদা রিটায়ার করার পরে নিজের ঘরটাকেও ডিউটিরুম ভাবতেন, ফোন পেতাম রেডিয়োটাকে উঠিয়ে দিবি তোরা, সকালবেলায় দরবারি কানাড়া বাজাচ্ছিস...। আসলে, রেডিয়োর অনুষ্ঠান শেষ হলে পরবর্তী অনুষ্ঠানের আগে একটু সময় থাকলে যন্ত্রসংগীত বাজানো হয়। সেই এক-দেড় মিনিট কী বাজল, অনেক সময় নজর দেওয়া হত না। অজিতদার সূক্ষ্ম কান সেটাও মেনে নিত না। বলতেন, শংকরকে গার্গল করতে বলিস, ওর গলাটা ধরে আছে মনে হয়। ওঁর পরিবারের লোকজন বোঝাত, তুমি রিটায়ার করেছ, ভুলে যাও কেন?
কিছু দিন পরের কথা। আমার প্রোমোশন হয়েছে। ডিউটিরুমে কাজে এসেছি। একটা ফোন। অজিতদা মারা গেছেন। সবাই স্তব্ধ। ঠিক সেই সময় একটা গান বাজছিল। মাধুরী চট্টোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘...কেন মন উদাস হয়ে থাকে, এ কথা বোঝাব কাকে...।’ এখানেই ট্র্যাকব্যাক। শোনা যাচ্ছে, ‘বোকাকে বোকাকে বোকাকে...’
কেউ ছুটে যাচ্ছে না।
৯০
সারা দেশে মোট যত কোটি
মোবাইল ফোন সংযোগ আছে ।
৭০০০০০০০
ক্রিস্টি-র নিলামে যত মার্কিন ডলারে
বিক্রি হল ফ্রান্সিস বেকন-এর আঁকা
ছবি ‘দ্য পোর্ট্রেট অব জর্জ ডায়ার টকিং’।
৬.১৬
যত মিটার লাফিয়ে সের্গেই বুবকার রেকর্ড ভেঙে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়লেন রেনঁ লাভিলেনি।
৪৫
ফ্লোরিডার পিত্‌জা-দোকানে যত ডলারে দেদার বিক্রি হচ্ছে অজগর-মাংসের টপিংওয়ালা ‘এভারগ্লেড্স পিত্‌জা’।


১০৬০০০
যত হেক্টর চাষজমি আছে
ইংল্যান্ডের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ-এর।
২৯৩০০০
মিনিট-প্রতি যতগুলো স্টেটাস আপডেট হয় ফেসবুক-এ। মিনিট-প্রতি কমেন্ট পোস্ট হয় ৫১০টি,
গড়ে ১৩৬০০০ ছবি
আপলোড হয়।

১১০০০
পর্বতারোহীদের মাউন্ট এভারেস্টে
ওঠার ‘লাইসেন্সিং ফি’ কমিয়ে
মাথাপিছু যত মার্কিন ডলার করার
সিদ্ধান্ত নিল নেপাল প্রশাসন।
এত দিন দিতে হত ২৫০০০ ডলার।

৪০০
সোচি-তে শীতকালীন অলিম্পিকে
কৃত্রিম তুষার তৈরি করতে যতগুলো
তুষার-কামান ব্যবহার করছেন কর্তৃপক্ষ।



সী


চৌ
ধু
রী
মেরে বেছে বেছে... ভোটে জিতিয়েছে। খুঁত নেই তার কাজে।
হুমকি দিয়েই থেমে থাকেনি সে। নেমেছে যুদ্ধসাজে।
শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি, তবু সে ‘কাজ’-এর লোক।
যত ভাল কাজ, গিন্নি জানেন ‘কেষ্ট’ সংগঠক।
আইনবাবুর ছদ্মবেশে জনাকয়েক গোঁয়ার
‘লঙ্কাকাণ্ড’ করায় দেশে নিন্দাবাদের জোয়ার
যুক্তিতে নয়, পাত্তা পেতে
ভরসা তাদের ‘পেপার স্প্রে’-তে
পার্লামেন্টকে কেউ বলেছেন কীসের যেন খোঁয়াড়?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.