পড়ুয়াদের পোশাক ও অনুদান না মেলায় প্রধান শিক্ষককে ঘণ্টাখানেক তালাবন্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠল অভিভাবকদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুর্গাপুর ইস্পাতনগরীর মহিস্কাপুর এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। অভিভাবকদের অভিযোগ, পোশাক বাবদ যে অর্থ দেওয়ার কথা তার থেকে কম দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক অশোককুমার সিংহ। অশোকবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা মেনেই কাজ করেছেন।
প্রধান শিক্ষক জানান, যে সমস্ত পড়ুয়ারা স্কুলের পোশাক নেয়নি তাদের ৪০০ টাকা করে দেওয়ার কথা দিনকয়েক আগে অভিভাবকদের জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হিসেব করে দেখা যায়, হাতে যা আছে তাতে ২৫০ টাকা করে দেওয়া যাবে। সেই মতো ৫০ জন পড়ুয়াকে ২৫০ টাকা করে দেওয়া হয়। প্রধান শিক্ষকের দাবি, এরপরে হিসেব করে তিনি বুঝতে পারেন, বাকিদের ২০০ টাকার বেশি দেওয়া যাবে না। কিন্তু বৃহস্পতিবার সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে পাঠানো নির্দেশিকায় জানানো হয়, স্কুলের তহবিলে যে অর্থ আছে তা দফতরে ফেরত দিতে হবে। আগের ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার বেশ কিছু অভিভাবক পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ অর্থ নিতে হাজির হন। |
কিন্তু প্রধান শিক্ষক তাঁদের জানিয়ে দেন, নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আপাতত আর কোনও পড়ুয়াকে অর্থ দেওয়া যাবে না। কিন্তু অভিভাবকেরা দাবি তোলেন, টাকা দিতেই হবে এবং ২৫০ টাকা করে দিলে হবে না, পুরো ৪০০ টাকা করেই দিতে হবে। প্রধান শিক্ষক বলেন, “টাকা আত্মসাৎ করেছি, এই অভিযোগে তালা দিয়ে আমায় আটকে রাখা হয়। বোঝানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি।”
তবে প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ মানতে চাননি অভিভাবকেরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছামতো পোশাক ও অনুদান দিয়েছেন। অভিভাবকদের মধ্যে মিঠু চক্রবর্তী, মমতা চৌধুরী’রা জানান, স্কুল থেকে দেওয়া পোশাকের মধ্যে বেশ কিছু ইঁদুরে কাটা, কোনওটার বোতাম নেই। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি পুলিশের ভয় দেখান বলেও তাঁদের দাবি। তাঁদের আরও অভিযোগ, মিড-ডে মিলের রান্না করার সময় জ্বালানি হিসাবে পুরনো পাঠ্যবই ব্যবহার করা হয়। তাঁদের দাবি, বারবার প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করা হলেও তিনি কর্ণপাত না করায় বাধ্য হয়েই তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দেন। অভিভাবকেরা জানান, এ সব অভিযোগ তাঁরা মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুর ২ চক্রের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক অমিত ঘোষ বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। তবে লিখিত অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।” |