অভিযানে নষ্ট ৬০ বিঘার পোস্ত গাছ
পোস্ত ও গাঁজার চাষ পুরোপুরি বেআইনি। তবু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই দুইয়ের চাষ চলে রমরমিয়ে। একদিনের তল্লাশি অভিযানেই প্রকাশ্যে এল সেই ছবি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলা আবগারি দফতর, সাধারণ প্রশাসন, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর এবং পুলিশ সম্মিলিত ভাবে আনন্দপুর থানার তোড়িয়া গ্রামে তল্লাশি চালায়। গ্রাম লাগোয়া মাঠে পৌঁছতেই সকলের চক্ষু চড়ক গাছ। আলু, ধান চাষের মতোই বিঘার পর বিঘা জমিতে শুধু পোস্ত গাছ! প্রায় ৬০ বিঘা জমির পোস্ত গাছ এ দিন নষ্ট করা হয়েছে। জেলা আবগারি সুপারিনটেনডেন্ট এ আহমেদ বলেন, “৬০ বিঘা জমির পোস্ত চাষ এদিন নষ্ট করা হয়েছে। বেআইনি পোস্ত চাষের বিরুদ্ধে ফের তল্লাশি চালানো হবে।”
জেলার বিভিন্ন এলাকাতেই প্রকাশ্যে চলে গাঁজা ও পোস্ত চাষ। এ দিনের অভিযানে আনন্দপুরে সেই চাষ নষ্ট করা হলেও ধরা পড়েনি কেউ। জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। আর সেই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন এই চাষ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মানুযায়ী যে জমিতে পোস্ত বা গাঁজা চাষ করা হয়েছে তার মালিক কে জানতে হবে। নাহলে কার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হবে? কাকেই বা গ্রেফতার করা হবে? জটিলতার কথা স্বীকার করে আবগারি সুপারিনটেনডেন্ট বলেন, “জমির প্রকৃত মালিক কে জানতে না পারলে কাকে ধরব। এ ব্যাপারে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর আমাদের কাছে জমির মালিকের নাম দিলে তবেই তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারব।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুর থানার তড়িয়া গ্রামে পোস্ত খেত। —নিজস্ব চিত্র।
ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজটি খুব সহজ নয়। কারণ, এ ক্ষেত্রে জমির মালিক প্রকাশ্যে আসবেন না। জমির দাগ নম্বর ধরে মালিকের নাম খুঁজে বের করা যায়। কিন্তু অফিসের সমস্ত তথ্য হাতড়ে তা বের করতে দীর্ঘ সময় লাগে। কারণ, এখনও এই দফতরের যাবতীয় তথ্য এখনও কম্পিউটারে নথিভুক্ত হয়নি। তাছাড়াও দফতরে কর্মী সঙ্কট রয়েছে। নাম পত্তন, শ্রেণি পরিবর্তনের কাজ করতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে। তার উপর এই কাজে দীর্ঘ সময় লাগবে। ধরপাকড় করতে গেলে নানা দিক থেকে চাপ আসার আশঙ্কাও রয়েছে। এই সব জটিলতার কারণেই বিভিন্ন সময়ে তল্লাশি হলেও কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। ফলে বেআইনি পোস্ত-গাঁজা চাষ বন্ধও করা যায়নি। আনন্দপুরে এ দিনের তল্লাশিতে নেতৃত্ব দেওয়া মেদিনীপুরের মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত বলেন, “পুলিশ ও ভূমি সংস্কার দফতর যৌথভাবে তদন্ত করে যাতে জমির মালিক খুঁজে বের করে ও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়, তা বলা হয়েছে।”
এই চাষ বন্ধ না হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হল অর্থ। এই চাষে চাষির নিজের কোনও টাকা খরচ হয় না। উল্টে জমি ভাড়া দেওয়ায় চাষিরা মোটা টাকা পান। আর চাষের যাবতীয় খরচ দেয় অসাধু ব্যবসায়ীরা। এই ব্যবসায়ীরাই এসে পোস্তর ফল থেকে আফিম বের করে নেয়। চাষ শেষে পোস্তও নিয়ে যায়। লাভের কথা ভেবেই গোয়ালতোড়, কেশপুর, শালবনি, সবংয়ের মতো ব্লকের বেশ কিছু গ্রামে অনেক চাষি বেআইনি এই চাষ করে থাকেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.