সংঘর্ষ-বিরতিতে ধাক্কা, ইউক্রেনে ফের নিহত ৭১

২০ ফেব্রুয়ারি
ক্তপাত থামার একটা ইঙ্গিত মিলেছিল। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যে সেই ক্ষীণ আশাটুকুও ফের নিভে গিয়েছে। নতুন করে উত্তপ্ত ইউক্রেনে আজ ফের প্রাণ গিয়েছে ৭১ জনের। নিহতদের মধ্যে ৭০ জনই সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারী। এক জন পুলিশ।
আসলে গত কাল থেকেই রাজধানী কিয়েভের মূল বিক্ষোভ কেন্দ্র ইনডিপেনডেন্স স্কোয়ার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে কালই মৃত্যু হয়েছিল ২৬ জনের। গুলি, বোমা, কাঁদানে গ্যাস, জ্বলন্ত টায়ারের ধোঁয়ায় ঢেকেছিল রাজপথ। আজ সেখানেই মারা যান আরও ৭১ জন। আহত প্রচুর। কাল আর আজ মিলিয়েই নিহতের সংখ্যাটা এখন ৯৭।
অথচ কিয়েভের সকালটা আজ শুরু হয়েছিল অন্য ভাবে। গতকালের সংঘর্ষের পরে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার জুজু দেখিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একই সুরে সুর মিলিয়েছিল আমেরিকাও। আজ এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক করার কথা ছিল কিয়েভে। মূলত সেই ভয়েই ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের সরকার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ-বিরতির কথা ঘোষণা করে। প্রেসিডেন্টের সেই প্রস্তাবে প্রথমে রাজিও হন বিরোধীরা। কাল সন্ধ্যায় অন্যতম বিদ্রোহী নেতা ভিটালি ক্লিটসকোর সঙ্গে আলোচনার পর সংঘর্ষ-বিরতি নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ। বলেছিলেন, “রক্তপাত বন্ধের উদ্দেশ্যে দু’পক্ষই সংঘর্ষ বিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বার সাধারণ মানুষের শান্তির জন্য আলোচনার রাস্তায় হাঁটার পালা।” সংঘর্ষ বিরতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও।
মৃতদেহের সারি। বৃহস্পতিবার কিয়েভের রাস্তায়। ছবি: এএফপি।
কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই ছবিটা পুরো উল্টে গিয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, কী এমন হল যে পরিস্থিতি ফের জটিলতর হয়ে উঠল? কেন পরপর মৃতদেহের সারিতে ফের ভরে উঠল ইনডিপেনডেন্স স্কোয়ার চত্বর? আন্দ্রে নামের এক বিক্ষোভকারী অবশ্য হাড় হিম করা একটা অভিযোগ এনেছেন। তাঁর দাবি, ঠান্ডা মাথায় সুপরিকল্পিত ভাবে বিদ্রোহীদের খুন করছে ইয়ানুকোভিচ সরকার। তাঁর ব্যাখ্যা, “আজ যাঁরা মারা গিয়েছেন, প্রত্যেকেরই হয় মাথায়, নয় ঘাড়ে, না হয় বুকে মাত্র একটি করে বুলেটের ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। পেশাদার খুনি ছাড়া এ ভাবে দূর থেকে বন্দুক চালিয়ে এক নিশানায় মানুষ মারাটা পুলিশের কাজ হতে পারে না। সরকার সংঘর্ষ-বিরতির কথা বলছে। অন্য দিকে ভাড়াটে স্নাইপার দিয়ে মানুষ মারছে।”
এই পরিস্থিতিতে এখন ফের রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হয়েছে ইউক্রেনে। আজ বিকেলে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় বিদেশমন্ত্রীরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছেন। আলাদা করে ইয়ানুকোভিচের সঙ্গে দেখা করেছেন জার্মানি, ফ্রান্স আর পোল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রীরাও। তবে বৈঠকগুলির ফল কী হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খুলছে না কোনও পক্ষই।
আজকের হামলার পরে অবশ্য চুপ করে বসে নেই বিক্ষোভকারীরাও। পাল্টা মার দিচ্ছেন তাঁরাও। কিয়েভের রাস্তায় আজও জ্বলেছে টায়ার। ধোঁয়ায় আকাশ কালো। বোমা-গুলির আওয়াজে কান পাতা দায়। আজ বিক্ষোভকারীদের হাতে এক পুলিশেরও মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের আরও বক্তব্য, প্রেসিডেন্ট ও তাঁর অনুগামীরা কোনও ভাবেই সংবিধানে বদল আনতে চান না। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হ্রাস করে সংবিধান বদলের দাবি বিরোধীদের দীর্ঘ দিনের। আর সেখানেই ইয়ানুকোভিচের প্রবল আপত্তি রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। একে রাশিয়ার সঙ্গে হাত মেলানো, তার উপর নিজের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার প্রবণতা। ইয়ানুকোভিচের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তালিকা কিন্তু দীর্ঘ হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীদের সব দাবিই অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর বক্তব্য, সরকার মানুষ মারার পক্ষে নয়। তাঁরা শান্তি চান। তা হলে আজ এত মানুষ মারা গেলেন কী করে? জুতসই জবাব দিতে পারেননি প্রেসিডেন্ট।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.