|
|
|
|
আনন্দplus |
‘বাদশাহী আংটি’র এক্সক্লুসিভ কভারেজ
|
নতুন ফেলুদা পুরনো লখনউ
ভুলভুলাইয়া। গোমতীর তীর। ভোরের আজান। সব আগের মতোই।
শুধু শহরের গোয়েন্দাটা নতুন। দেখে এলেন ইন্দ্রনীল রায়। |
“কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্য লাগল ভুলভুলাইয়া ...ফেলুদা যে কেন বারবার পিছিয়ে পড়ছিল আর দেওয়ালের এত কাছ থেকে হাঁটছিল সেটা বুঝতেই পারছিলাম না... এর মধ্যেই বাবা বলে উঠলেন, ‘আরে, ফেলু কোথায় গেল?’ ...সত্যি তো! পিছনে ফিরে দেখি ফেলুদা নেই...”
‘বাদশাহী আংটি’, ১৯৬৬
৪৮ বছর পর, ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ইমামবড়াতে তখন পড়ন্ত বিকেল। পকেটে সেই সুপারির কৌটো নিয়ে ৪৫টা সিঁড়ি ধরে উঠে গেলেন আবির। দূরে তখন গোমতী নদীর দিক থেকে ভেসে আসছে আজান।ভুলভুলাইয়ার দেওয়ালেরও নাকি কান আছে, এমনটাই মনে করতেন নবাবরা। ইমামবড়াতে বাঙালি কিছু পর্যটক আবিরকে দেখেই দেওয়ালের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বলে উঠলেন, “ওই তো আবির। ওই তো নতুন ফেলুদা।”
সঙ্গে সঙ্গে ভুলভুলাইয়ার দেওয়ালে যেন প্রতিধ্বনিত হতে থাকল শব্দগুলো। পর্যটকদের কোলাহল শুনে অন্ধকার গলি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ নিমেষে বাঁ-দিকে ঘুরে গেল আবির।
কোথাওই তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। গেলেন কোথায় আবির?
লখনউ শহরের হজরতগঞ্জে, রেসিডেন্সিতে এ রকম প্রায়ই দেখা যাচ্ছে ফেলুদাকে। কখনও তস্য গলিতে তো কখনও হজরতগঞ্জে। আসলে অখিলেশ যাদবের লখনউতে শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁর গোয়েন্দাগিরি।
লাইটস্। ক্যামেরা। ‘বাদশাহী আংটি’।
“যব ছোড় চলে লখনউ নগরী...
তব হাল আদম পর ক্যয়া গুজরি”
ঠিক ৪৮ বছর আগে, ট্রেনে লখনউ থেকে হরিদ্বার যাওয়ার পথে এই গানটাই গুনগুন করে গেয়েছিল ফেলু।
ফেব্রুয়ারি ২০১৪-তে অবশ্য এই গানটা গাওয়ার সময় এখনও আসেনি। কারণ ফেলু সবে মাত্র লখনউতে নেমেছেন। হরিদ্বার যাবেন পরের মাসে।
গতবার ট্রেনে এলেও এ বার এলেন ইন্ডিগোর ফ্লাইটে। সেই সময় সঙ্গে ছিল তোপসে ও তার বাবা। এ বার রয়েছে ৭০ জনের ইউনিট।
এবং উপরের গানটা তখন নিজের মনে গুনগুন করে গাইলেও, আবির কিন্তু এই গানটা তুলছেন আমজাদ আলি খানের সরোদের তালে। “আমার কাছে একটা পেন ড্রাইভ আছে, যেটায় সেই সুরটা বাজিয়েছে আমজাদ। ওটা শুনেই আবিরকে গানটা তুলতে হবে,” শ্যুটিং শুরু হওয়ার আগে বলছিলেন সন্দীপ রায়। পরের দিন থেকে শ্যুটিং শুরু। চারিদিকে তখন শেষ মিনিটের ব্যস্ততা।
“আমার বিশ্বাস ছিল লখনউটা বেশ বাজে জায়গা... না আছে সমুদ্র, না আছে পাহাড়।” |
ইমামবড়ায় ‘ফেলুদা’ |
গল্পের শুরুতে লখনউ সম্বন্ধে এমনটাই বর্ণনা করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। পরে অবশ্য তাঁর মত বদলায়। “বাবার অসম্ভব প্রিয় ছিল লখনউ। প্রথম বার ‘বাদশাহী আংটি’, পরে ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’। বাবা দারুণ ভালবাসত লখনউকে,” শহরের বিভিন্ন লোকেশন দেখতে দেখতে বলছিলেন সন্দীপ।
এবং ভাল লাগার যথেষ্ট কারণও আছে। আওয়াধের রাজধানী যেন প্রতি মুহূর্তে তার রূপ বদলাচ্ছে।
সকালে যেখানে আজান, বিকেলে সেখানে ঠুমরি আর কত্থক, রাতে আওয়াধি খানাপিনা।
স্থানীয় লোকেরা বলেন, সকালে আজান, বিকেলে বেগম আখতার, রাতে কাবাবইয়ে হ্যয় লখনউ।
এবং উত্তর প্রদেশের রাজধানীতে অখিলেশ-মায়াবতী থাকলেও ৩০০ বছরের আগের সেই সময়টা যেন ছড়িয়ে আছে চারিদিকে।
“তিরিশ বছরে লখনউতে অনেক কিছু বদলে গিয়েছে, কিন্তু শহরের বেসিক মেজাজটা বদলায়নি। সেই ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’র পর এই আগের বছরই আমি রেকি করার সময় আবার লখনউতে আসি। লখনউয়ের ওল্ড ওয়ার্ল্ড চার্মটা যাওয়ার নয়। এই কাবাবের গন্ধ, দূর থেকে পুরনো হিন্দি গান, কচুরি-শিঙারা ভাজা, ঘোড়ার গাড়ি, চিকনের দোকান আজও অদ্ভুত একটা মেজাজ,” শ্যুটিংয়ের ফাঁকে বলছিলেন সত্যজিৎপুত্র।
বাবা কোনও দিন প্ল্যান করেনি ‘বাদশাহী আংটি’ বানানোর
একে ফেলুদা, তার পর ‘বাদশাহি আংটি’। প্রচণ্ড টেনশনে আবির চট্টোপাধ্যায়ও। টেনশন না হলে শ্যুটিং শুরুর আগের দিন রাত তিনটের সময় হোটেলের ঘরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় ‘ফেলুদা’র!
অত রাতে উঠে পাশের নাইট ল্যাম্পটা জ্বালিয়ে ‘বাদশাহী আংটি’র স্ক্রিপ্টটা আবার করে পড়েন। ভোর পাঁচটায় হুসেনগঞ্জ মসজিদ থেকে তখন আজানের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
“আজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন আরও কনসেনট্রেট করতে সুবিধা হচ্ছিল। হাজার হোক, এটা আমার ড্রিম রোল। কোনও বাঙালি ছেলের স্বপ্নের চরিত্র। সেই শ্যুটিংয়ের আগের রাতে ঘুম আসবে কী করে?” হাসতে হাসতে বললেন আবির।
গাড়িতে কথা বলতে বলতে তখন পুরো ইউনিট বড়া ইমামবড়া পৌঁছে গিয়েছেন। সন্দীপ রায় সিন বুঝিয়ে দিচ্ছেন আবিরকে। ক্যামেরাম্যান শীর্ষ রায় তখন টাঙ্গার পিছনে ওয়েল্ডিং করা রিক্শার উপর বসে তিনটে ক্যামেরা নিয়ে রেডি।
সে দিন ঐতিহাসিক ইমামবড়া এবং ভুলভুলাইয়ার সামনে যাত্রা শুরু নতুন ফেলুদার।
কিন্তু সত্যজিৎ রায় কি কোনও দিন ‘বাদশাহী আংটি’ করতে চাননি? “না করতে চাননি একদমই। কারণ বাবা শুরুই করেছিল ‘সোনার কেল্লা’ দিয়ে যেখানে লালমোহনবাবু উপস্থিত। তার পর আর এমন কোনও ফেলুদা করা সম্ভব ছিল না, যেখানে লালমোহনবাবু নেই”, উত্তর দেন সন্দীপ।
এমনিতেই সন্দীপ রায়ের ইউনিটে এমন অনেকে রয়েছেন যাঁরা সত্যজিৎ রায়ের ইউনিটেও কাজ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম রমেশ সেন ও সুব্রত লাহিড়ি। “বাবু, মনে আছে সেই ‘শতরঞ্জ...’য়ের সময় ক্যামেরাটা এ দিকে বসিয়েছিলাম” বা “‘সোনার কেল্লা’র প্রথম দিনের শ্যুটিং হয়েছিল ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ লালকেল্লায় কুশলের সঙ্গে। আজ সেই চল্লিশ বছর পর আবার বড় ইমামবড়ার সামনে শ্যুটিং শুরু হল নতুন ফেলুদার” জাতীয় কথাবার্তা প্রায়ই শুনতে পাবেন এই ইউনিটে।
এ পি সেন রোড
|
ভুলভুলাইয়াতে আবির |
এর মধ্যেই প্রচুর বাঙালিও তখন এসে পড়েছেন শ্যুটিং দেখতে। “আমরা ছ’ জেনারেশন লখনউতে। ফেলুদার শ্যুটিং হবে, আর আমরা আসব না, এটা কী করে হয়!” বলছেন তাঁদেরই মধ্যে একজন।
এমনিতে লখনউতে প্রচুর বাঙালি থাকেন। হোটেলের টিভিতে প্রায় সব বাংলা চ্যানেল দেখানো হয়। এমনকী চারবাগ রেলওয়ে স্টেশনের সামনের রাস্তার নাম এ পি সেন রোড। স্টেশনের কাছে তাঁর বাড়িও রয়েছে। যদিও কেউই ঠিক লোকেশনটা বলতে পারলেন না। “শুনলাম একটা টিলার উপর বাড়িটা। শ্যুটিং থেকে একদিন ছাড়া পেলে অবশ্যই যাব দেখতে,” বলেন সন্দীপ রায়ের স্ত্রী ললিতা রায়। ওহ্, বলা হয়নি, স্টেশনের সামনের যে রাস্তাটার নাম এ পি সেন রোড, সেই ‘এ পি সেন’ হলেন অতুলপ্রসাদ সেন।
নস্ট্যালজিয়াতে বাঙালিকে হারাবে কে!
স্বপ্নের চরিত্রের কাজ শুরু
প্রথম সিন তখন সবে শুরু হবে। “ব্যস, এটাই মোমেন্ট অব ট্রুথ। বাঙালির ছবির ইতিহাসে বোধ হয় ঢুকে গেলাম। আমার স্বপ্নের চরিত্রের কাজ শুরু,” সানগ্লাস পরতে পরতে শট দেওয়ার আগে বলে গেলেন আবির।
ডান পাশে তখন আসাফ উদ্ দৌলার বানানো বড়া ইমামবড়া। সামনে রুমি দরজার নীচ থেকে ঘোড়ার গাড়ি করে লখনউ ঘুরছেন ফেলু আর তোপসে। এই হচ্ছে সিন।
“এ রকম একটা সেটিংয়ে শুটিং শুরু করতেই আমার ভীষণ এক্সাইটিং লাগছে। এই তোপসে, দ্যাখ ভাল করে। ভুলভুলাইয়াতে তোকে ছেড়ে দিলে আমি শিওর তুই আর বেরোতে পারবি না,” ইয়ার্কি মেরে তোপসেকে বলেন ফেলু। মাথা পেতে ফেলুর কথা মেনেও নেন তোপসে।
ফেলুদার বদলের সঙ্গে সঙ্গে এ বার তোপসেও নতুন। বাঙালির আর এক স্বপ্নের চরিত্রে অভিনয় করছেন সৌরভ দাস। সৌরভ বাটানগরের ছেলে। এর আগে ‘মা’ সিরিয়ালে অভিনয় করতেন। সৌরভের মা সেরিব্রাল হয়ে বিছানায়, কিন্তু ছেলের তোপসে হওয়ার খবরে মায়ের মুখের হাসি ভুলতে পারছেন না সৌরভ। ইমামবড়ার সিঁড়িতে বসে সেই গল্প বলার সময় তাঁর চোখে দু’ফোঁটা জলও দেখতে পেলাম।
প্রথম সিন শেষ। একটু স্বস্তি তখন ইউনিটের সবার চোখেমুখে। ললিতা রায় তখন ইউনিটের সবাইকে বলছেন হাততালি দিতে। প্রোডাকশন ম্যানেজার ব্যস্ত লাঞ্চের তোড়জোড় করতে। লখনউয়ে শ্যুটিং হবে আর কাবাব হবে না! তাই আবার হয় নাকি!
বিরিয়ানিতে লখনউকে হারিয়ে দেবে কলকাতা
অর্ডার দেওয়া হল শামি কাবাব, গলৌতি কাবাব আর পরোটা। এখানকার পরোটার সঙ্গে কলকাতার পরোটার কোনও মিল নেই। এটা অনেকটা রুমালি রুটিকে অল্প ভাজলে যা হবে তাই।
টেবিলে সন্দীপ রায়ের পাশে বসে তাঁর ছেলে সৌরদীপ রায়। এই প্রথম বার শ্যুটিংয়ে ছবি তুলছেন তিনি। একেবারেই শখে।
“ও কমার্স শেষ করেছে। এই ফিল্মে ছবি তুলছে কিছু। এখনও জানি না, ও ডিরেকশনে ইন্টারেস্টেড কি না,” পাশ থেকে স্নেহভরা গলায় বলেন ললিতা রায়।
লখনউ শহরের আভিজাত্যের মতো কিন্তু কিছু জিনিস যেন সেই আগের মতোই রয়েছে। প্রধান অভিনেতা, পরিচালক এখানে এক হোটেলে রয়েছেন, বাকি পুরো ইউনিট অন্য হোটেলে। সৌরদীপও অন্য হোটেলে টেকনিশিয়নদের সঙ্গে।
“কিছু জিনিসের ধারাবাহিকতা থাকা উচিত। বাবার শ্যুটিংয়ে আমিও সব সময় টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে থাকতাম। কোনও দিন বাবা অ্যালাও করেননি ওঁর সঙ্গে একই হোটেলে থাকতে। সৌরদীপও সেটাই করছে। সেটাই নিয়ম,” বলেন সন্দীপ রায়।
এর মধ্যেই হাজির কাবাব।
“আবির, কাবাব তো হল, একটু বিরিয়ানি খাবে না কি?” প্রশ্ন করলেন সন্দীপ রায়।
এমনিতে কলকাতায় বিরিয়ানি শুরু হয়েছিল ওয়াজেদ আলি শাহ-কে মেটিয়াবুরুজে পাঠানোর পর থেকে। তাঁর খানসামাদের হাতেই যাত্রা শুরু কলকাতার বিরিয়ানির।
কিন্তু লখনউয়ের বিরিয়ানি দেখে হতাশ হলেন ফেলু থেকে শুরু করে বাকি সবাই। “ধুর্ ধুর্, এটা কোনও বিরিয়ানিই নয়। বিরিয়ানিতে হাসতে হাসতে লখনউকে হারিয়ে দেবে কলকাতা,” বলেন আবির। |
পরিচালক সন্দীপ রায় |
‘তোপসে’-সৌরভ দাস |
|
“টাঙ্গায় উঠে ফেলুদা গাড়োয়ানকে বলল, ‘হজরতগঞ্জ’।
আমি শুনে বললাম, ‘সেটা আবার কোন জায়গা?’
‘এখানকার চৌরঙ্গি...”
লাঞ্চ ব্রেকের পর আর কয়েকটা সিনের পর বিকেল ৫টায় প্যাক আপ। ঠিক হল সবাই মিলে লখনউয়ের ‘চৌরঙ্গি’ হজরতগঞ্জে গিয়ে কফি খাওয়া হবে।
এমনিতে হজরতগঞ্জ লখনউয়ের সিটি সেন্টার হলেও তার একটা অন্য বিশেষত্ব রয়েছে।
যেহেতু সব বাড়ি এখানে দেড়শো বছরের পুরনো, তাই এলাকাটা অন্য ভাবে হেরিটেজ জোনে কনভার্ট করে ফেলেছিলেন তখনকার মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই ওই অঞ্চলের সাইন বোর্ড ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট করা হয়েছিল। এমনকী কোকা কোলা-র সাইনবোর্ড হলেও তাতে লাল রং দেখবেন না। দেখবেন সাদা-কালো। সেটা এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক থেকে সিসিডি সবার সাইনবোর্ডেই একই অবস্থা। “এমনকী বাটা-টাও কালো। এ বড় অদ্ভুত জিনিস দেখলাম,” বলেন সন্দীপ রায়।
এই দেখতে দেখতেই আবির গেলেন কফি অর্ডার করতে। প্ল্যান ছিল কফি হাউজে বসে খাওয়ার। কিন্তু শেষে জিতল ক্যাফে কফি ডে।
এখানে আসার পর থেকে লোকের মুখে শুনছি, লখনউ এসে কফি হাউজে না গেলে ট্রিপটাই ইনকমপ্লিট থাকবে। এক সময় ফিরোজ গাঁধী থেকে অটল বিহারী বাজপেয়ী থেকে কইফি আজমি সবাই আসতেন সেই কফি হাউজে। কিন্তু সেই ঐতিহাসিক কফি হাউজের মেনুতে আজ ‘চিলি চিকেন’ আর ‘গোবি মাঞ্চুরিয়ান’। যা দেখে আবির বলেই ফেললেন, “লখনউতে মেনু কার্ডে গোবি মাঞ্চুরিয়ান!
ভাবা যায়। সো সো স্যাড।”
এটা কিন্তু ব্যোমকেশের মতো চশমা পরে ড্রয়িং রুমে কেস সল্ভ করা নয়
এই মুহূর্তে ফেলু আর তোপসে রয়েছেন লখনউতে। আর কিছু দিনের মধ্যেই এসে পড়বেন ভেঙ্কটেশ ও সুরিন্দর ফিল্মস প্রযোজিত ‘বাদশাহী আংটি’র বাকি চরিত্ররা। এই ছবিতে বনবিহারীবাবুর চরিত্রে আছেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। ডা. শ্রীবাস্তবের ভূমিকায় অভিনয় করছেন ভরত কল। ধীরুকাকা হলেন বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী এবং গণেশ গুহ-র চরিত্রে রয়েছেন রজতাভ দত্ত।
“সবাই এসে গেলে বেগম আখতারের সমাধি দেখতে যাব। বাবুদা, তোমাকেও কিন্তু যেতে হবে,” পরিচালক সন্দীপ রায়ের কাছে আবদারই করে ফেলেন ‘ফেলু’।
কফির আড্ডা শেষ হতে না হতেই পরের দিনের শ্যুটিংয়ের প্ল্যান শুরু হয়ে গেল।
পরের দিন প্রচুর স্টান্টস করতে হবে আবিরকে। বাইকের উপর থেকে লাফ, টুণ্ডে কাবাবির গলিতে ছোটা।
“আবির, স্টান্টগুলো মন দিয়ে করো। এর আগে ব্যোমকেশ হয়ে চশমা চোখে শাল গায়ে দিয়ে ড্রয়িং রুমে বসে কেস সল্ভ করে দিতে। কিন্তু ফেলুদা একটু অন্য রকম,” হাসতে হাসতে বলেন সন্দীপ।
আবিরও পরিচালকের কথা শুনে হেসে ফেলেন।
এর মধ্যে আবিরই ঠিক করলেন আবার একবার ভুলভুলাইয়া দেখে আসবেন।
“ওটা আর একটু দেখে আসি। ‘বাদশাহী আংটি’র শ্যুটিং করছি। ভুলভুলাইয়া বারবার ঘুরে আসার মধ্যে একটা থ্রিল আছে,” বলে সে দিকে এগিয়ে যান আবির।
অনেকক্ষণ চোখে চোখে রাখার পরও ডান দিকে ঘুরেই ‘ভ্যানিশ’ হয়ে গেলেন তিনি।
হাজার হোক ফেলুদা তো।
বাদশাহী আংটি’র রহস্য সমাধানে যে তিনি বারবার ভুলভুলাইয়াতেই ফিরে যাবেন, তাতে আর আশ্চর্য কী! |
ছবি: ইন্দ্রনীল রায়। |
|
|
|
|
|