বিচারাধীন আবাসিকদের সঙ্গে একই বাড়িতে অনাথ ও ভবঘুরে কিশোরদের রাখার কারণেই কোরক হোমে সমস্যার সূত্রপাত। এমনটাই মনে করছে রাজ্য হোম পর্যবেক্ষণ কমিটি। রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের কোরক হোমে বুধবার কমিটির সদস্যরা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের পরে, হোমের পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কমিটির সদস্যরা। এ দিন সমাজকল্যাণ দফতরের দফতরের যুগ্ম সচিব নবগোপাল হীরার নেতৃত্বে দুই সদস্যের দল হোম ঘুরে দেখেন।
গত ১৪ ফ্রেবুয়ারি গভীর রাতে ২২ জন বিচারাধীন কিশোর হোমের তালা ভেঙে তিন কর্মীকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশের বাসিন্দাও ছিল। পরে অবশ্য ৬ জন হোমে ফিরে আসে। হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও একজন আবাসিক কিশোরের খোঁজ মিলেছে। যদিও, পালিয়ে যাওয়া ৮ বাংলাদেশি কিশোরের খোঁজ মেলেনি। এ দিন হোমে এসে ফিরে আসা কিশোরদের সঙ্গেও কথা বলেছেন কমিটির সদস্যরা। কমিটির এক সদ্যসের কথায়, “পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার পিছনে হোম কর্মীদের ভূমিকা রয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে।”
এ দিন বেলা আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হোমের সুপারের দফতরে কয়েক দফায় বৈঠকের পরে, কমিটির সদস্য বিধান ভট্টাচার্য বলেন, “হোমে বিচারাধীন কিশোর এবং অনাথ শিশুদের একই বাড়িতে রাখার জন্য সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়াও পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। মনে হচ্ছে, অনেক আগে থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল ওই আবাসিকরা। সব দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”
ঘটনার দিন কোন পথে বন্দিরা পালিয়েছে, কোন দরজার তালা ভাঙে সে সবও খুটিয়ে দেখেছেন কমিটির সদস্যরা। প্রায় দশ ফুট উঁচু হোমের সীমানা পাঁচিলও যথেষ্ট নিরাপদ নয় বলে কমিটি মনে করছে। দেওয়ালের উপরে কাঁটা তার লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে হোমের কর্তারা জানান, বিচারাধীন কিশোর এবং অনাথ, ভবঘুরে শিশু কিশোরদের জন্য পৃথক আবাসন জরুরি। প্রচুর কর্মীপদ শূন্য। বিচারাধীনদের কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা নেই বলেও তাঁরা কমিটির সদস্যদের জানিয়েছেন। সাফাইকর্মী না থাকায় আবাসিকরা নিজেরাই সাফাইয়ের কাজ করে বলে অভিযোগ। হোমে নিজস্ব চিকিৎসকও নেই বলে কমিটিকে জানানো হয়। ৫০ জনের কিন্তু কখনও ৭০ জনের কম শিশু কিশোর থাকে না হোম পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্য বিধানবাবু জানান, কোরক হোমেরও কর্মী ও পরিকাঠামো সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। |