|
|
|
|
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি খড়্গপুর শাখায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করল খড়্গপুর ডিভিশনের কয়েক হাজার ঠিকা শ্রমিক। বুধবার সকাল থেকে ওই ডিভিসনের সিভিল ও লাইন সেকশনের ঠিকা শ্রমিকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিবছর নিয়ম করে জানুয়ারিতে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ে। তবে এবছর ফেব্রুয়ারি মাসের অর্ধেক শেষ হতে চলল। কিন্তু একাধিকবার ঠিকাদার সংস্থা ও রেল কর্তৃপক্ষকে মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। রেল সূত্রে খবর, রেল কর্তৃপক্ষ আজ, বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়্গপুর রেল ডিভিশনে ট্র্যাক মেরামতি, প্যাকিং, রেল লাইনের কাজ, প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ, শেড নির্মাণ, পেন্টার, পাইপলাইনের মতো সিভিল কাজে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ১০ হাজার ঠিকা শ্রমিক। এই শ্রমিকদের অধিকাংশই সিটু, আইটাক অথবা আইএনটিটিইউসি-র মতো শ্রমিক সংগঠনের সদস্য। এ দিন থেকে ওই তিনটি সংগঠনেরই শ্রমিকদের একাংশ ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ঠিকা শ্রমিকদের দাবি, সিভিল ঠিকা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৮৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২২০ টাকা ও লাইনের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ২০৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ টাকা করতে হবে। কিন্তু প্রতি বছরের মতো এবারও জানুয়ারি মাসে মজুরি না বাড়ায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, ঠিকাদার সংস্থাকে একাধিকবার সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা সত্বেও তারা আলোচনায় বসেনি। বাধ্য হয়েই ধর্মঘটের পথ বেছে নেওয়া হল।
এ দিন লাইন শ্রমিক তাপস কর ও সিভিল শ্রমিক অজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আমরা পাঁচ বার এই নিয়ে আলোচনায় বসেছি। কিন্তু ঠিকাদারদের অনেকেই হাজির না থাকায় সমস্যা রয়ে গিয়েছে। এর পর রেলের আধিকারিকেরা এবিষয়ে আলোচনায় বসার কথা বললেও কোনও কাজ হয়নি। আমাদের দাবি না মানা হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চলবে।” এ দিন আইটাকের দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে ঠিকাদার শ্রমিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি বিপ্লব ভট্ট বলেন, “শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দেওয়ার দাবিতে আমরা বারবার সরব হয়েছি। রেলের ডিআরএম-কে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও সমস্যার সমাধান হয় নি। তাই আমরা শ্রমিকদের এই ধর্মঘটকে সমর্থন করছি।” আইএনটিটিইউসি-র দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের খড়্গপুর ডিভিশনের ঠিকাদার শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক মহাদেব দাস বলেন, “শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি ঠিকাদার সংস্থা ও রেল কর্তৃপক্ষকে মানতে হবে। আমরা প্রথমে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চালাব বলে ঠিক করেছিলাম। তবে আলোচনার আশ্বাস পাওয়ায় আপাতত বুধবার একদিনের কর্মবিরতি পালন করছি।” যদিও রেলের এক ঠিকাদার উজ্বল সেনগুপ্তের দাবি, “রেল টেন্ডারের নতুন দর অনুযায়ী আমাদের টাকা দিচ্ছে না। পুরোনো দর অনুযায়ী কিছু টাকা কেটে রাখছে। ফলে আমরাও লোকসানের মুখে পড়েছি।” খড়্গপুরের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রেলের কাজকর্মে ঠিকাদার শ্রমিকদের ধর্মঘটের তেমন প্রভাব পড়েনি। তবে কর্মবিরতি দীর্ঘদিন চললে সমস্যা হতে পারে। ওই শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থার। তবে ঠিকাদারদের টেন্ডারের নতুন দর অনুযায়ী টাকা দিতে কোনও সমস্যা নেই। কাজ করে বিল জমা দিলেও টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|