তৃণমূলের ঘরোয়া বিবাদে ফের স্তব্ধ কানোরিয়া জুটমিল
তৃণমূলেরই দু’টি শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে বিবাদের জেরে বুধবার সকাল থেকে বন্ধ হয়ে গেল ফুলেশ্বরের কানোরিয়া জুটমিলের উৎপাদন।
অন্যায় ভাবে শ্রমিকদের উপরে বাড়তি কাজের বোঝা চাপানো, ন্যায্য মজুরি না দেওয়া প্রভৃতি অভিযোগে সকাল থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জুট ওয়াকার্স-এর অনুমোদিত সংগঠনের সদস্যেরা। তাঁদের অভিযোগ, শ্রমিকদের উপরে যে অবিচার হচ্ছে তাতে মদত দিচ্ছে কারখানার আইএনটিটিআইসি অনুমোদিত কানোরিয়া জুট সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়ন। ওই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আবার আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি দোলা সেনের অনুগামী। বিক্ষোভকারীরা এ দিন সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদেরও দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখেন।
২০০৬ সাল থেকে বন্ধই হয়ে ছিল কানোরিয়া জুটমিল। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১১ সালের ২২ অগস্ট সেটি ফের খোলা হয়। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু নিজে গিয়ে কারখানা খোলার কথা ঘোষণা করেন। উৎপাদন চালু হয় ১০ সেপ্টেম্বর থেকে। বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, চালু হওয়ার পর থেকে এক দিনের জন্যও ঠিক ভাবে চলেনি কারখানাটি। তিনটি শিফট চালু হওয়ার কথা। কিন্তু এখনও দু’শিফট কাজ হচ্ছে। ১১০০ শ্রমিকের কাজ পাওয়ার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত কাজ পেয়েছেন মোটে ৭০০ জন।

আবার অনিশ্চয়তার মুখে শ্রমিকেরা। বুধবার ছবিটি তুলেছেন সুব্রত জানা।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সেখ মোজাম বলেন, “আমরা কর্তৃপক্ষের এই সব অত্যাচারের প্রতিবাদ করলেও সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়ন আমাদের সমর্থন করেনি।” তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের উপরে বাড়তি কাজ চাপাচ্ছেন। অতিরিক্ত শ্রমিকদের বসিয়ে দিচ্ছেন। এ দিন সকালে কয়েক জন শ্রমিককে বসিয়ে দেওয়া হলে বিক্ষোভ শুরু হয়।
সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলি পাল্টা বলেন, “কর্তৃপক্ষ জোর করে কাউকে বসিয়ে দেননি। কারখানায় যেমন চটের বরাত থাকে, তেমন হারেই শ্রমিকদের কাজ দেওয়া হয়। কারও দাবি-দাওয়া থাকতেই পারে। কিন্তু তার জন্য কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখানোর আমরা বিরোধী।” বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা কারখানা কর্তৃপক্ষকে হেনস্থাও করেছেন অভিযোগ করে তাঁর দাবি, “এই সবের মূলে রয়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি এই কারখানায় নতুন সংগঠন খোলার পরেই বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে।”
মোজাম অবশ্য কাউকে হেনস্থা করার কথা অস্বীকার করেছেন। শোভনদেব বলেন, “কারখানার ১১০০ শ্রমিকের মধ্যে ৯৪১ জন সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে আমাকে একটি চিঠি লেখেন। তার পরেই ২২ জানুয়ারি আমি ওখানে একটি ইউনিট খুলি। তবে এ দিনের বিক্ষোভে আমার কোনও হাত নেই। দীর্ঘদিনের বঞ্চনার প্রতিবাদে শ্রমিকেরাই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ করেছেন। আমিও চাই, উৎপাদন চালু হোক। তবে কর্তৃপক্ষকেও নমনীয় হতে হবে।” দোলা সেন আবার দাবি করেন, “কারখানায় কোনও সমস্যা নেই। সব অপপ্রচার। কর্তৃপক্ষ উৎপাদন শুরু করতে প্রস্তুত। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক তৎপরতা চলছে।” কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.