|
|
|
|
রাজ কলেজের শিক্ষিকাকে পুনর্বহালের নির্দেশ কোর্টের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও বর্ধমান |
রাজ কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তারকেশ্বর মণ্ডলকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই শিক্ষিকাকে অবিলম্বে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে কোর্ট।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি গিরীশচন্দ্র গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ অবিলম্বে ওই শিক্ষিকাকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই শিক্ষিকার আইনজীবী রাজর্ষি হালদার জানান, তাঁর মক্কেলকে কলেজ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এ দিন তাঁকে পুনরায় কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৪ মার্চ আবার এই মামলা হাইকোর্টে উঠবে। তখন তারকেশ্বরবাবুকে আদালতে হাজির হয়ে জানাতে হবে যে, কেন তাঁকে জেলে পাঠানো হবে না।
পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে ওই শিক্ষিকার বাবা জানিয়েছিলেন, গত বছরের ২৬ জুলাই তাঁর মেয়েকে চিঠি পাঠিয়ে তারকেশ্বরবাবু জানান যে আগামী ২৬ অগস্ট তাঁকে বহিস্কার করা হবে। এরপরে ওই শিক্ষিকা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ওই নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ নিয়ে এলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই স্থগিতাদেশ নিতে অস্বীকার করে বলে দাবি করেন ওই শিক্ষিকার বাবা। অভিযোগে তিনি আরও জানিয়েছিলেন যে, গত ৩ সেপ্টেম্বর তাঁর মেয়ে কলেজে গেলে তারকেশ্বরবাবু তাঁকে হাজিরা খাতায় সই করতে ও ক্লাস করতে বাধা দেন। সেই নিয়ে বাদানুবাদের সময়ে তারকেশ্বরবাবু ওই শিক্ষিকাকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন বলেও অভিযোগ করা হয়। এরপরে পুলিশ তারকেশ্বর মণ্ডলকে গ্রেফতার করলে তিনি কয়েক দিন জেল হাজতে ছিলেন।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষিকা কলেজে আংশিক সময়ের শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করতেন। মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ অস্বীকার করে তারকেশ্বরবাবু জানিয়েছিলেন, ওই শিক্ষিকা ঠিকমতো ক্লাস করেন না এবং উনি হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের কপি দেখাতে পারেননি। এ দিন তারকেশ্বরবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “হাইকোর্ট আমাকে ভর্ৎসনা করেছে, এ রকম খবর পাইনি। তবে গতকাল আমাকে চিঠি দিয়ে হাইকোর্টে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও শুনানি হয়নি। আমাকে রেজিস্টারে সই করে চলে যেতে বলা হয়েছিল। আমার হয়ে হাইকোর্টে যা বলার আমার আইনজীবী বলবেন।” তিনি আরও বলেন, বিসিএ বিভাগের আংশিক সময়ের ওই শিক্ষিকাকে ছাত্রদের অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন অধ্যক্ষ বরখাস্ত করেছিলেন। তারপরে ওই শিক্ষিকা আদালতে গিয়েছিলেন। গত ২৬ অগাস্ট হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ওই বরখাস্তের আদেশ স্থগিত রাখতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই চিঠি প্রায় একমাস পরে কলেজে এসেছিল। কিন্তু তারপর থেকে ওই শিক্ষিকা একবারও কাজে যোগ দিতে চাননি এবং তাঁর সঙ্গে তিনি দেখা করেননি বলে জানিয়েছেন তারকেশ্বরবাবু।
ওই শিক্ষিকার বাড়িতে গিয়ে তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। শিক্ষিকার বাবা বলেন, “আমার মেয়ে খুবই অসুস্থ। তার পক্ষে কথা বলা সম্ভব নয়। তবে আজকে হাইকোর্ট কী রায় দিয়েছে, তা আমি এখনও জানি না। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আমার পক্ষে এখন কোনও মন্তব্য করা সম্ভব নয়।” |
|
|
|
|
|