|
|
|
|
মেঘ কাটতেই ঢল নামছে আনন্দ হাটে
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
এক দিকে লোকসঙ্গীত, নৃত্যানুষ্ঠান, বাউল গানের আখড়া। আর এক দিকে বেত, কাঠ, পাথর, লোহা দিয়ে তৈরি হরেক রকমের হাতের কাজ নিয়ে হাজির বহু হস্তশিল্পী। সালানপুরের মেলার মাঠে ঢুকলেই লোক শিল্প-সংস্কৃতির এমন মেলবন্ধন চোখে পড়বে। কারণ, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে চলছে মুক্তাইচণ্ডী আনন্দমেলা।
মুক্তাইচণ্ডীর এই মেলাকে ঘিড়ে সালানপুরে ‘আনন্দের হাট’ বসে যায়। ব্লকের ল’হাট ফুলবেড়িয়া সামডিহি, রাঙ্গাডাবর, আছড়া, হরিষাডি, বাসুদেবপুর, জেমারি, আলকুষা, বোলকুণ্ডা, এই গ্রামগুলির মাঝখানে অবস্থিত মুক্তাইচণ্ডী। গাছ-গাছালি ঘেরা ফাঁকা মাঠের উপরে একটি বড় টিলা রয়েছে। তার মাথায় রয়েছে মুক্তাইচণ্ডীর মন্দির। |
|
মুক্তাইচণ্ডী মেলায়। —নিজস্ব চিত্র। |
সেখানে দেবী কালী মূর্তি রয়েছে। এমনিতে মুক্তাইচণ্ডী এই শিল্পাঞ্চলে অন্যতম আকর্ষণীয় ভ্রমণকেন্দ্র বলে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই জনপ্রিয়তা আরও বাড়ে আনন্দমেলার সময়ে। দুপুর থেকে ভ্রমণার্থীরা মেলায় আসতে শুরু করেন। প্রায় মাঝ রাত পর্যন্ত মেলায় তাঁদের দেখা মেলে। এই বছরের মেলা কমিটির সভাপতি তাপস উকিল জানিয়েছেন, ১৯৬৪ সাল থেকে এই মেলা চলছে। এ বার ৫০ বছরে পড়ল। তাপসবাবু বলেন, “শিল্পাঞ্চলের উপকণ্ঠে এই মেলার আয়োজন করা হলেও কোনও ভাবে গ্রামীণ সংস্কৃতিকে অবহেলা করা হয়নি। আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা এই মেলায় এসে আনন্দ পেয়েছেন। মনোরঞ্জনের সব উপকরণই খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা।”
শুক্রবার এই আনন্দমেলার উদ্বোদন করেন বৃন্দাবনের ঋষি শ্রীধর কাঠিয়া বাবা। এর আগে মন্দিরের একটি নির্মিত তোরণের দ্বার উন্মোচন করা হয়। মেলা শুরুর আগে স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকার পথ পরিক্রমা করেন। মেলার মাঠে প্রতিদিনই থাকছে নানা ধরনের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী মান্না দে স্মরণে মেলার শেষ দিন অর্থাৎ কাল শুক্রবার বিশেষ গানের আসরের আয়োজন করা হয়েছে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। কলকাতার শিল্পীরা ওই দিন গান গাইতে আসবেন। মেলার মাঠ ঘুরে দেখা গেল, হাজারের কাছাকাছি দোকান পাট বসেছে। নাগোরদোলা থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োয়নীয় জিনিসপত্রসবই আছে এই আনন্দমেলায়। তবে প্রথম দু’দিনের বৃষ্টিতে মেলায় আসতে পারেননি ভ্রমণার্থীরা। মেঘ কেটে যেতেই মানুষের ঢল নামতে শুরু করেছে। রূপনারায়ণপুরের বাসিন্দা অদিতি মণ্ডলের কথায়, “ছুটির দিনে শীতের দুপুরে এই ভ্রমণকেন্দ্রে বেড়াতে এসে গ্রামীণ মেলার আনন্দ পেলাম।” |
|
|
|
|
|