|
|
|
|
দু’দিকে দুই উৎসব, ফাঁকা দুর্গাপুর হাট
বিপ্লব ভট্টাচার্য • দুর্গাপুর |
এক দিকে চলছে মাটি উৎসব। অন্য দিকে চলছে হস্তশিল্প বাজার। এই দুই মেলার মাঝে খাঁ খাঁ করছে দুর্গাপুর হাটে বসা হস্তশিল্প মেলা।
২০১২ সালে ১৩ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুর হাটের উদ্বোধন করেন। প্রায় ৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই হাটের নির্মাণ হয়। জমি দেয় আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)। সিটি সেন্টারের উল্টো দিকে পলাশডিহায় সেটি তৈরি হয়। দিল্লি হাটের পরেই এটিই দ্বিতীয় স্থায়ী হস্তশিল্প মেলা কেন্দ্র। শিল্পীদের তৈরি করা নানা সামগ্রী বিক্রির জন্য স্থায়ী স্টল বানানো হয়। লোকগানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য একটি মুক্তমঞ্চ তৈরি করা হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ‘চিলড্রেন্স কর্নার’ও তৈরি হয়। ঠিক হয়, বছরভর এখানে শিল্পীরা তাঁদের নিজেদের হস্তশিল্পের সামগ্রী নিয়ে বসবেন। কিছু দিন ছাড়া পনেরো দিনের মেয়াদে এখানে মেলা বসে। |
|
ক্রেতার দেখা নেই হাটে। সব্যসাচী ইসলামের তোলা ছবি। |
গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দুর্গাপুর হাটে হস্তশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। দুর্গাপুর মহকুমার ছাড়াও পূর্ব মেদনীপুর, কোচবিহারের মতো জেলা থেকে বিভিন্ন শিল্পী সামগ্রী নিয়ে এসেছেন। কিন্তু এ বার মেলায় বিক্রিবাটা তেমন নেই বলে জানান এখানে আসা বিভিন্ন শিল্পীরা। তাঁদের দাবি, দুর্গাপুর হাটের সামান্য দূরেই বসেছে হস্তশিল্প বাজার। আর পানাগড়ের বিরুডিহায় এখন চলছে মাটি উৎসব। ফলে, ক্রেতার ঢল নেই দুর্গাপুর হাটে। কোচবিহার থেকে পাটের বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে আসা আরতি বর্মণ জানান, এই মেলায় তিনি আগেও এসেছেন। বিক্রি খুব ভাল হয় না। কিন্তু এ বার অন্য বারের থেকেও খারাপ অবস্থা। তাঁর মতে, মহকুমার দু’জায়গায় দু’টি বড় মেলা চলছে। প্রায় একই সময়ে দু’টি মেলা চলায় দুর্গাপুর হাটে ক্রেতার সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। সঙ্গে আনা সামগ্রীর বেশির ভাগটাই ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন শিল্পীরা।
দুর্গাপুরের গাঁধী ময়দানে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে হস্তশিল্প মেলা। সেখানে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের শিল্পীরা এসেছেন। মেলা চলবে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পানাগড়ের বিরুডিহায় ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মাটি উৎসব। কাজেই, আপাতত দুর্গাপুর হাটের পরিবর্তে মানুষজন এই দু’জায়গাতেই যাচ্ছেন বলে মত দুর্গাপুর হাটের শিল্পীদের। কোচবিহার থেকে শীতলপাটির নানা সামগ্রী নিয়ে আসা নিরঞ্জন দে বলেন, “এ বার জানতাম না, এত কাছাকাছি দু’টি মেলা। জানলে হয়তো আসব কি না ভাবতাম।” একই মত পূর্ব মেদিনীপুরের পটশিল্পী নবীন চিত্রকরের। তিনি বলেন, “ঘরবাড়ি ছেড়ে এখানে এসেছি কিছু উপার্জনের জন্য। কিন্তু তা তেমন হল না।”
দুর্গাপুর হাটের ডেপুটি ডিরেক্টর মৌ সেন জানান, এই হাট বছরের অনেক সময়েই থাকে। তাই সাধারণ মানুষ এখন মাটি উৎসব ও হস্তশিল্প বাজারের দিকে ঝুঁকেছেন। তিনি বলেন, “হাটটি যাতে সুন্দর ভাবে চলে, আমরা সব দিক থেকে সে চেষ্টা করছি।”
|
|
|
|
|
|