হতবাক অঞ্জন
য়লা এপ্রিল হলে না হয় একটা কথা ছিল।
কিন্তু এ তো সবে ফেব্রুয়ারি।
তাই এপ্রিল ফুল করার কোনও কারণ নেই।
তবু হঠাৎ যখন অঞ্জন দত্তকে আনন্দplus থেকে ফোন করে জিজ্ঞেস করা হল ‘থ্রিল অ্যাট কলকাতা জংশন’ নামে কোনও হিন্দি ছবি পরিচালনা করেছেন কি না, উনি খানিকটা চমকে গেলেন।
কিছু ক্ষণ ভাবলেন। তাও চিনতে পারলেন না। কারণ সে নামের তো কোনও ছবি উনি পরিচালনা করেননি।
“পোস্টার বেরিয়ে গিয়েছে?” জিজ্ঞেস করলেন তিনি।
ইতিবাচক উত্তর শুনে প্রশ্ন করলেন কার ছবি রয়েছে সেখানে।
বলা হল নাসিরুদ্দিন শাহ্, কে কে মেনন এবং জিমি শেরগিল।
আচ্ছা, তা হলে কি এটা ওঁর পরিচালিত সেই ‘বিবিডি’ ছবি?
যেটা ২০০৭ সালে শু্যট করেছিলেন কলকাতায়?
“হতে পারে। আমি তো ওদের নিয়ে আর কোনও হিন্দি ফিল্ম করিনি। আমি কলকাতার বাইরে আছি। একটু ইন্টারনেট দেখে এ বিষয়ে কথা বলছি। আপনি বরং ছবির প্রযোজক জয় গঙ্গোপাধ্যায় বা সৌম্য গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলুন,” বললেন অঞ্জন।
ফোন করা হল জয়কে। উনিও খবরটা শুনে খানিক ক্ষণ চুপ। একটু খবর নিয়ে এ বিষয়ে কথা বলে জানাবেন বলে ফোন রেখে দিলেন।
মিনিট পাঁচ পর আবার ফোন। “হ্যাঁ, ওটা সেই একই ছবি,” বলেন জয়।
ছবি মুক্তি পাচ্ছে, তার নাম পাল্টে গিয়েছে। পোস্টার রিলিজ হয়েছে। কিন্তু পরিচালক বা আপনি কেউই কিছু জানেন না? ব্যাপারটা অদ্ভুত নয় কি? উত্তরে জয় বলেন, “আসলে ‘বিবিডি’ ছবিটা দাদা আর আমি মিলে মক্সি-র তরফ থেকে প্রযোজনা করি। ২০১০ নাগাদ সিনেমার ডিস্ট্রিবিউশন রাইটস বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল পারসেপ্ট-কে। ওদের বোধহয় কোনও সমস্যা ছিল। এর মধ্যে আমিও অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই। ‘শুকনো লঙ্কা’, ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ প্রযোজনা করি। আজ আপনার কাছে প্রথম শুনলাম যে ‘বিবিডি’ নতুন নামে মুক্তি পাচ্ছে। সত্যি এটা একটা প্লেজেন্ট সারপ্রাইজ! আবার আরও একটা মজার ব্যাপার হল, ওই একই দিনে ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-য়ের হিন্দি রিমেকটাও মুক্তি পাচ্ছে।”
কিন্তু সৌম্যর সঙ্গে কিছুতেই সোমবার ফোনে কথা বলা গেল না। একটা মেসেজ এল: ‘‘পরিবারের একটা বিয়ে নিয়ে খুব ব্যস্ত। মঙ্গলবার কথা বলি?”
‘থ্রিল’ যেন আরও বাড়তেই থাকে।
মঙ্গলবার সকালে সৌম্যর সঙ্গে যোগাযোগ হল। উনি অনুরোধ করলেন পেন অ্যান্ড ক্যামেরা ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার মেহমুদ আলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে। “এ বিষয়ে উনি মতামত দিতে পারবেন। ওরা ছবিটা ডিস্ট্রিবিউট করছে,” বলেন সৌম্য।
মেহমুদ আলির কাছ থেকে জানা গেল যে ‘বিবিডি’ ছবিটির ‘নেগেটিভ রাইটস’ উনি কিনেছেন ২০১৩-র নভেম্বরে। “প্রথমে ছবিটির প্রযোজক ছিল মক্সি এন্টারটেনমেন্ট। পারসেপ্ট ছিল প্রেজেন্টার। মক্সি হ্যাজ ক্লিয়ার্ড পারসেপ্টস মানি অ্যান্ড সোল্ড দ্য নেগেটিভ রাইটস টু মি। আমি কোনও ঝামেলায় যেতে চাই না। তাই নতুন টাইটেলের কথা ভাবলাম। ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ টাইটেলটা হিট করেছে। তাই ভাবলাম কেমন হয় ‘থ্রিল অ্যাট কলকাতা জংশন’ দিয়ে দিলে? সেটাই আপাতত রেখেছি,” মেহমুদ জানান।
তবে সে টাইটেলই যে থাকবে, এমনটাও নয়। “শুক্রবারের মধ্যে ঠিক করব যে টাইটেলটা ‘থ্রিল অ্যাট কলকাতা জংশন’ থাকবে, নাকি ‘কলকাতা জংশন’ টাইটেলটা আমি পেতে পারব,” বলেন তিনি।

ছবিতে নাসিরুদ্দিন-কে কে মেনন
আর ট্রেলরটা? “ওটা আমার কনসেপ্ট। ‘রং দে বসন্তী’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বানিয়েছি। সবাই তো এখন ব্যস্ত। আমি একটা টিমকে দিয়ে ট্রেলরটা বানিয়ে ফেললাম,” বললেন নতুন প্রযোজক।
তা এত সব করলেন, কিন্তু পরিচালকের সঙ্গে কোনও কথা বললেন না? “শুক্রবারের পরে কথা বলব। ঠিক করেছি একটা প্রোমোশনাল ভিডিয়ো শু্যট করব।”
মেহমুদের পুরো প্ল্যানটাই অঞ্জন দত্তকে শোনানো হল। “আমি ট্রেলরটা দেখেছি। আরও ভাল হতে পারত। ‘থ্রিল অ্যাট কলকাতা জংশন’ নামটা আমার বেশি পছন্দের,” বলছেন পরিচালক।
এত কিছু ‘থ্রিলিং’ সব ঘটনা হয়ে গিয়েছে অন্তরালে। এটা নিয়ে তাঁর কোনও বক্তব্য নেই? “ছবিটা ২০০৭য়ে শ্যুট করেছি। ভাল লাগছে এটা শুনে যে এত দিন পর ছবিটা মুক্তি পাবে। যে সময়ে দাঁড়িয়ে এই ছবিটা বানিয়েছিলাম, তখন ‘কহানি’ হয়নি। ‘নো ওয়ান কিলড্ জেসিকা’ হয়নি। চাঁদপালঘাট, কুমোরটুলিতে শু্যটিং করেছিলাম। নাসির, কে কে, জিমি, সন্ধ্যা মৃদুল, সোনালি কুলকার্নি, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত কী দারুণ অভিনয় করেছিল। ছবিটায় একটা ট্র্যাক আছে যেখানে একটা নাইটক্লাবে একটা ঘটনা ঘটে এবং এক উঠতি অভিনেতা সেই ঘটনার সাক্ষী হয়। তখনও কলকাতাকে ব্যাকড্রপ রেখে এত সিরিয়াস একটা থ্রিলার বানানো হয়নি। মাই ফিল্ম ওয়াজ ওয়ে অ্যাহেড অব ইটস টাইম। মানুষ যদি সেটা মনে রেখে ছবিটা দেখেন, তা হলে আমার ধারণা ওটা ভাল লাগবে...”
অঞ্জন বলেন।

সিনেমার পোস্টারে
কিন্তু এই যে পরিচালক হিসেবে নিজে সম্পূর্ণ ভাবে ধোঁয়াশায় আছেন, সেটা? “আমার সঙ্গে আলোচনা করে এ সব করলে ভাল হত। এত পুরনো ব্যাপার যে এই নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে চাই না। আমাদের দেশে পরিচালকদের যা কনট্র্যাক্ট থাকে, তাতে ছবি কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার পর সব রাইটস দিয়ে দিতে হয় পরিচালককে। যদি আমি ছবির লাইন প্রোডিউসর বা এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসর হতাম, তা হলে হয়তো একটা কথা বলার জায়গা থাকত। এখানে তা নেই। আগে অন্যান্য পরিচালকদের সঙ্গেও এ রকম ঘটনা হয়েছে বলে শুনেছিলাম। কিন্তু এই প্রথম আমার সঙ্গে এমন হল,” জানাচ্ছেন অঞ্জন।
তা হলে যে পরিচালককে বলা হয় ‘ক্যাপ্টেন অব দ্য শিপ’? হাল-মাস্তুল কোনওটাই তো পরিচালকের হাতে থাকে না! মেহমুদ অবশ্য বলেছেন অঞ্জনের সঙ্গে কথা বলবেন। ছবিটা যে ভাবে রয়েছে, সেখানে আর কোনও কাটাছেঁড়া করবেন না। কিন্তু যদি না করেন? খানিক ক্ষণ চুপচাপ থেকে অঞ্জন বলেন, “আমি শুধুমাত্র এটুকুই প্রে করতে পারি ওরা যেন ছবিটাতে না হাত দেয়। আই ক্যান ওনলি অ্যাপিল টু দেয়ার গুড সেন্সেস...”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.