ধ্বংসপ্রায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পাঠাগার |
উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যশালী প্রাচীন গ্রন্থাগারগুলির একটি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ প্রন্থাগার। ১৯৪৯-এ সাহিত্য পরিষদ ভবন গড়ে তোলা হয়। যদিও দার্জিলিং জেলার মহকুমা শহর হিসাবে বর্তমান শিলিগুড়ি শহরের সঙ্গে তখনকার শিলিগুড়ির আর্থ-সামাজিক অবস্থার আকাশ-পাতাল তফাত ছিল। অধিকাংশ জঙ্গলাকীর্ণ এই শহরের জনসংখ্যাও ছিল নিতান্তই কম। ফলে শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের মতো হাতে-গোনা এক-দু’টি স্কুলই গড়ে উঠেছিল। ইতিমধ্যে মহানন্দা দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। বর্তমানে শিলিগুড়ির এই প্রাচীন গ্রন্থাগারটি অযত্ন আর প্রশাসনিক অবহেলায় ধুঁকছে। সাত কাঠা জমিতে গড়ে উঠে ছয় দশকেরও বেশি সময় পথ চলা ঐতিহ্যবাহী এই ভবন পলেস্তারা খসে খসে জরাজীর্ণ অবস্থায় পৌঁছেছে। সর্বত্রই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। ফলে, নষ্ট হচ্ছে বহু দুর্মূল্য ও দুষ্প্রাপ্য নথি এবং বই। |
আরও বহু নষ্ট হওয়ার জন্য প্রহর গুনছে। বর্ষা কালে এই গ্রন্থাগার চালু থাকাকালীন পাঠকদের মাথায় জল ও পলেস্তারা খসে-পড়া নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। এই ভবনের ভিতরে বই রাখার আলমারি ও ঘরের আনাচে-কানাচে সর্বত্রই উইপোকাদের নিশ্চিন্ত বাস। শিলিগুড়িতে কর্মসূত্রে থাকার সুবাদে নিত্য এই পাঠাগার যাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছে। তাই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই দেখেছি গ্রন্থাগারের ভিতরের পরিবেশ কী স্যাঁতসেতে ও অস্বাস্থ্যকর। দেওয়াল ফুঁড়ে আগাছা এমন ভাবে জেঁকে বসেছে যে ভবনে চিড় ধরেছে।
কোনও কর্মী নিযুক্ত না-হওয়ায় বহু কাল ধরে এটি চলছে একজন মাত্র গ্রন্থাগারিক দিয়ে। ফলে, তিনি প্রাপ্য ছুটি নিলে গ্রন্থাগারটি বন্থ থাকে। বঞ্চিত হতে হয় পাঠক সাধারণকে। বর্তমানে কাগজ-কলমে গ্রন্থাগারের সদস্য সংখ্যা মোটামুটি ৪৪২৪ জন। দৈনিক খুব কম সংখ্যক পাঠকই এখানে বইপত্র পাঠের জন্য নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন। ফলে, গ্রাহক চাঁদার ভাঁড়ার প্রায় শূন্যে ঠেকেছে। ইতিমধ্যে বিল বকেয়া থাকায় কর্তৃপক্ষ গ্রন্থাগারের ফোন সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ এর মাত্র ১০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত তথ্যকেন্দ্র গ্রন্থাগার, অতিরিক্ত জেলা গ্রন্থাগার ও উদয়ন মেমোরিয়াল স্পোর্টস লাইব্রেরি সরকারি আনুকূল্যে ভালই চলছে।
সুদীর্ঘ বাম রাজত্বে স্থানীয় নেতা-মন্ত্রীরা ঐতিহ্যশালী এ গ্রন্থাগার ভবনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। তথাপি প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই জোটেনি। শিলিগুড়ির দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে। তৈরি হয়েছে উড়ালপুল থেকে সুইমিং পুল। কিন্তু অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্যশালী বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ গ্রন্থাগারটির ভাগ্যের শিঁকে ছেড়েনি। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বহুকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক পালাবাদল এসেছে। ১৭ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এই গ্রন্থাগারটি কাউন্সিলর তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের খাস তালুক। তাই নাগরিক সমাজ আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে এ বার হয়তো গ্রন্থাগারটি হৃত গৌরব ফিরে পাবে।
ঝন্টু বড়াইক, শিলিগুড়ি।
|
মালদহ-এনজেপি ব্রডগেজ লাইনে ‘মিলনগড়’ স্টেশন। পঁচানব্বই শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এ এলাকায় চল্লিশ হাজার জনসাধারণের বহির্যোগাযোগের একমাত্র ভরসা এই স্টেশন। প্রতিদিন কাজের সন্ধানে শত শত লোক ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয় স্টেশনের মাধ্যমে। দিনভর মাত্র তিন জোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেনই ভরসা এই স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের। ট্রেনের আগমন সম্পর্কে কোনও রকম আগাম তথ্য রেল কর্মীর থেকে পাওয়া যায় না ইচ্ছাকৃত ভাবে। টিকিট কাউন্টার খোলা হয় ও বন্ধ করা হয় তাঁদের মর্জিমাফিক। সন্ধের পর স্টেশনে কোনও রেলকর্মীর টিকিটিও দেখা যায় না। ইচ্ছাকৃত ভাবে প্লাটফর্ম চত্বর অন্ধকার করে রাখা হয় যাতে অসামাজিক কাজকর্ম চালাতে সুবিধা হয়। টিকিট কাউন্টার সংলগ্ন এলাকা বেআইনি দখলদার ব্যবসায়ীদের হাতে চলে গিয়েছে অনেক দিন আগেই। এমনকী যাত্রী চলাচলের জন্য রাস্তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্টেশনে পানীয় জল, শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। এতে অসুবিধায় পড়েন স্থানীয় মহিলারা। এলাকার সংখ্যালঘুরা চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য প্রায় সম্পূর্ণরূপে কাটিহার ও পূর্ণিয়ার ডাক্তাদের উপর নির্ভরশীল। দীর্ঘ দিনের দাবি থাকলেও আজ পর্যন্ত ‘হাটে বাজারে’ এক্সপ্রেসের স্টপ রেল কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করেননি। ফলে, রোগীদের নিয়ে চলাচল কষ্টকর হয়ে উঠেছে। মাননীয় রেলমন্ত্রীর নিকট আবেদন, আমরা মা মাটি মানুষের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই রেলস্টেশনের উন্নতির জন্য ব্যবস্থা করুন। আমাদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল সাধনে সচেষ্ট হন।
ফকরুদ্দিন মাস্টার, মালদহ।
|
বিএসএনএলের খেয়ালিপনার জন্য প্রতি দিন রেলওয়ে বুকিং থেকে শুরু করে ব্যাঙ্কের থেকে টাকা তোলা ও জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে যে ভাবে মানুষ লিঙ্ক ফেলিওর-এর বিড়ম্বনায় ভুগছেন তা মনে হয় বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের অজানা নয়। বিএসএনএল কর্তৃপক্ষেরও যেন কোনও হেলদোল নেই। শুধু তাই নয়, গ্রাহকদের নানা অভিযোগ সত্ত্বেও পরিস্থিতির উন্নতি তো দূরের কথা, তা যেন ক্রমশ খারাপের দিকে এগোচ্ছে। ভেবে দেখুন তো, যে সাত-সকালে রিজার্ভেশন কাউন্টারে দাঁড়িয়েছেন, দু’চার জনের পর আপনার পালা দেখা গেল লিঙ্ক ফেলিওর কতক্ষণ যে প্রতীক্ষায় থাকতে হবে আপনি নিজেও যেমন জানেন না, অন্য দিকে, ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে বা এটিএম-এ টাকা তুলতে বা জমা দিকে বা পাস বুক আপডেট করতে গিয়ে আমাকে বা আপনাকে যদি এই লিঙ্ক ফেলিওর বিড়ম্বনায় পড়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়, তখন স্বাভাবিক ভাবেই কি মনে হয় না, যে মানুষের প্রতি সরকারি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কোনও দায়বদ্ধতা নেই। আর তা নেই বলেই তারা এই ব্যবস্থার উন্নতিসাধন ঘটিয়ে মানুষের ক্ষোভ বিক্ষোভ প্রশমন করার জন্য তেমন ভাবে উদ্যোগী হন না কতৃর্পক্ষ। তাঁদের উদাসীনতা ও অপদার্থতার নজির মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য তারা লিংক ফেলিওর খেলায় মেতেছেন বা মানুষকে একটা চরম বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন প্রতিদিনই। বিএসএনএলের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, জনগণের স্বার্থেই লিঙ্ক ফেলিওরের অবসান ঘটিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করুন।
প্রণীতা সেন, জলপাইগুড়ি |