সহকর্মীর স্কুল পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠ মুর্হূতের ছবি মোবাইলে তুলে রেখেছিল বিএসএনএলের এক অস্থায়ী কর্মী। অভিযোগ, ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ছাত্রীটিকে তার সঙ্গে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করে সে। মানসিক চাপে ওই কিশোরী রেললাইনে আত্মহত্যা করতে গেলে এলাকার মানুষ তাকে বাঁচান।
পুরুলিয়া শহরের ঘটনা। কিশোরীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাতে পুলিশ শহরের বিএসএনএল দফতরের অস্থায়ী কর্মী অজয় কুমারকে গ্রেফতার করে। তবে, সহজে পুলিশের জালে পা দিতে চায়নি বছর পঁয়ত্রিশের অজয়। পুরুলিয়া শহরের গাড়িখানা এলাকায় পুলিশ বাড়ি ঘিরে ফেলেছে দেখেই বাড়ির ছাদে উঠে যায় অজয়। পুলিশ ছাদে উঠতেই সেখান থেকে লাফ দেয় সে। গিয়ে পড়ে নর্দমায়! অন্ধকারে তাকে ধরতে গিয়ে চোট পান এক পুলিশকর্মী। পুলিশ অজয়ের বিরুদ্ধে ‘প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সসুয়াল অফেন্সেস ২০১০’ আইনে মামলা করেছে। জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “যে মোবাইলটিতে সে ছবি তুলেছিল, সেটি খোঁজা হচ্ছে।” রবিবার ধৃতকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে তার এক দিনের জেল হেফাজত হয়।
একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাবাও বিএসএনএলের কর্মী। কাজের সুবাদে তাঁদের বাড়িতে অজয় কুমারের যাতায়াত ছিল। ছাত্রীটির পরিবারের দাবি, সেই সুযোগে ওই কিশোরীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে অজয়ের। ঘটনা সম্পর্কে এত দিন তিনি ও তাঁর স্ত্রী কিছুই জানতেন না বলে মেয়েটির বাবার দাবি। তিনি জানান, বুধবার মেয়ে টিউশন পড়তে বেরিয়ে বাড়ি না ফেরায় খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারেন পুরুলিয়া স্টেশনের দিকে সে গিয়েছে। গিয়ে দেখেন, লোকজন মেয়েকে ঘিরে রেখেছে। কিশোরীর বাবার অভিযোগ, “বাড়ি ফিরিয়ে আনার পরে মেয়ে জানায়, অজয় ওই ছবি তুলে তাকে ব্ল্যাকমেল কয়েকবার ওর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক রাখতে বাধ্য করেছিল। ফের চাপাচাপি করায় মেয়ে প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু, ওই ছবি অজয় ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেওয়ায় মেয়ে চাপে পড়ে আত্মহত্যা করতে রেললাইনের ধারে গিয়েছিল।” তাঁর আক্ষেপ, “অজয়কে আমরা বিশ্বাস করতাম। সে যে এ ভাবে আমাদের বিশ্বাসের মর্যাদা নষ্ট করবে, তা ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে।” অজয় বা তার পরিবারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিএসএনএলের পুরুলিয়া জেলা টেলিকম ম্যানেজার সুব্রত দাস বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। এ নিয়ে আর কী প্রতিক্রিয়া জানাব!” |