থানার লক-আপে এক বন্দির মৃত্যু নিয়ে রবিবার দিনভর কংগ্রেস বিক্ষোভ দেখাল মুর্শিদাবাদের রানিনগরে। বিক্ষোভ দেখিয়েছে সিপিএম ও তৃণমূলও। রাজীব মোল্লা (২৬) নামে ওই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পুলিশের। তাঁর বাড়ির লোক ও কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, লক-আপে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁকে। দোষী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে এ দিন সকাল থেকে ডোমকল মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করা হয়। সকাল ১০টা থেকে প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা হয় রানিনগর থানার মূল ফটক। শেষ পর্যন্ত জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর ওই থানায় গিয়ে ঘটনার সময়ে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারকে ক্লোজ করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরে বিক্ষোভ ওঠে। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক প্রতিবেশীকে হুমকি ও গালাগাল দেওয়ার অভিযোগ ছিল পেশায় দিন মজুর রাজীবের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানাও বেরিয়েছিল। শনিবার স্থানীয় ডিগ্রি ঘোষপাড়ার বাসিন্দা রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সেই রাতেই কম্বল ছিড়ে দড়ি পাকিয়ে লক-আপের শৌচাগারে একটি লোহার পাইপের সঙ্গে লাগিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তারপরেই তাকে রানিনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাজীবকে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয় বহরমপুরের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পুলিশ দাবি করেছে, বহরমপুরে পৌঁছনোর আগে রাস্তাতেই মারা যান রাজীব।
রাজীবের বাড়ির লোকের বক্তব্য, তাঁর আত্মহত্যা করার কোনও কারণই ছিল না। রাজীবের স্ত্রী রেবাবিবি বলেন, “আমার স্বামী কেন আত্মহত্যা করতে যাবেন? শনিবার সন্ধ্যায় আমি লক-আপে গিয়ে তাঁকে দেখেও এসেছি। তখনও স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলেছেন। তার পরে তাঁকে পুলিশই মেরেছে।” মহকুমা কংগ্রেস সভানেত্রী সাওনি সিংহ রায়ের দাবি, “ওই যুবক আমাদের কর্মী ছিলেন। পুলিশই ওই যুবককে পিটিয়ে খুন করেছে। সে কারণেই সারা দিন ধরে বিক্ষোভ করা হয়েছে।” |
সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক সাজাহান আলি এবং তৃণমূলের মহকুমা সভাপতি মোহিত দেবনাথের বক্তব্য, দোষী পুলিশ অফিসারদের সাজার দাবিতেই তাঁরা এ দিন পথে নেমেছিলেন।
পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর অবশ্য বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, ওই যুবক আত্মহত্যাই করেছেন। তবে ওই ব্যক্তির বাড়ির লোকের দাবি, তাকে লক-আপে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। সে সময়ে থানায় যিনি কর্তব্যরত অফিসার ছিলেন, তাঁকে ক্লোজ করে তাই তদন্ত শুরু হয়েছে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই শাস্তি পাবেন।” |