সাদা-কালো দরজাটা খুলে দাঁড়ালেন বাড়ির মালকিন। বছর আটত্রিশের আকর্ষণীয় সুন্দরী। কিন্তু নজর চলে যেতে বাধ্য তাঁর পেছন দিকে। মাথার ঠিক পেছনেই ঝুলছে দু’টো বিশাল জিভ। মাথাগুলো দেখলে মাথা ঘুরে যাওয়ারই জোগাড়। যত ক্ষণ না তারা সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে, তাদের চেহারা আন্দাজ করা বেশ কঠিন। এদের এক জন ইতিমধ্যেই খবরের শিরোনামে। ব্রিটেনের সব চেয়ে বড় কুকুরের তকমাও তার ঝুলিতে। নাম ফ্রেডি। একই বাড়িতে তার সঙ্গে থাকে তার বোন ফ্লেয়ুর-ও। আর একা হাতে এদের দস্যিপনা সামলান যিনি সেই ক্লেয়ার স্টোনম্যান এদের সামনে রীতিমতো খুদে।
ফ্রেডি দু’পায়ে উঠে দাঁড়ালে ৭ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা হয়। দাদার থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই ফ্লেয়ুরও। মেয়ে গ্রেট ডেনের গড়পড়তা চেহারার থেকে বেশ বড় সে। থাবা থেকে কাঁধ অবধি তার উচ্চতা ৩২ ইঞ্চি।
নিজের চেয়েও বড় দু’টো কুকুরকে সামলান কী করে, প্রশ্ন করা হয়েছিল ক্লেয়ারকে। তাঁর সাফ জবাব, ওদের চেহারাগুলোই ও রকম। কিন্তু ওরা তো আসলে দু’টো বাচ্চা। গোড়ার দিকে ফ্রেডি মুখে তুলতেই চাইত না কিচ্ছুটি। ক্লেয়ারের কথায়, “সব রকম খাবার দিয়ে দেখেছি, লাভ হয়নি কিছুতেই। তার পর হঠাৎ গত বছর থেকে হুড়মুড়িয়ে বাড়তে শুরু করল ও।” |
খাবার নিয়ে ফ্রেডি-ফ্লেয়ুরের বাছ-বিচার অবশ্য এখন আর নেই। তবে মুখের সামনে কিছু ক্ষণ বাদে বাদেই ধরতে হয় হাড় ছাড়ানো মুরগির রোস্ট, পিনাট বাটার, সসেজ বা দুধ-চিনি দিয়ে বানানো কফি। এ তো গেল নিত্য দিনের খাবারের তালিকা। কিন্তু এর বাইরের ওদের আর একটা খুব পছন্দের খাবারও রয়েছে। মুচকি হেসে ক্লেয়ার জানালেন, তাঁর বাড়ির চোদ্দোটা সোফা ছিঁড়েখুঁড়ে সাফ করে দিয়েছে তাঁর প্রিয় পোষ্যরা। একই হাল হয়েছে তাঁর টেবিল, চেয়ার, জুতো এমনকী দেওয়ালেরও। এখন অবশ্য খাই-খাইটা একটু কমেছে। তাই ভরসা করে দেওয়ালে আবার নতুন করে প্লাস্টার করেছেন তিনি।
দিনের বেলা দস্যি দু’টোর পেছনে ছুটতে ছুটতেই কেটে যায়। রাত্তিরটা শান্তিতে ঘুমোতে দেয় তো? “হ্যাঁ তা দেয় তবে ওই খাটে শুয়ে আর ঘুমোনো হয় না,” জবাব স্টোনম্যানের। ভাই-বোন যে সোফায় ঘুমোয়, তার কাছেই একটা আর্ম চেয়ারে রাত কেটে যায় তাঁর। বস্তুত গত দু’বছর নিজের ঘরে রাতে শুতেই যাননি ক্লেয়ার। “ফ্রেডিটা আসলে মায়ের কোল ঘেঁষা ছেলের মতো। এখনও আমার কোলে বসার বায়না জোড়ে” জানালেন ফ্রেডি-ফ্লেয়ুরের গর্বিত মালকিন।
পোষ্যদের জন্য ছাড়াছাড়ি হয়েছে পুরুষসঙ্গীর সঙ্গেও। তাতেও কুছ পরোয়া নেহি! স্টোনম্যান প্রথম যাঁর সঙ্গে কিছু দিন ডেটিং করেছিলেন, এক দিন বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। ফ্রেডিকে দেখেই বলেন, ওটাকে এক্ষুনি চোখের সামনে থেকে সরিয়ে নিয়ে যাও। আর দেরি করেননি ক্লেয়ার। সোজা বাড়ির দরজা দেখিয়ে দিয়েছিলেন বন্ধুকেই। পরে অন্য এক জনের সঙ্গেও আলাপ হয়েছিল। গোড়াতেই জানতে চেয়েছিলেন, কুকুরদের পছন্দ করেন কি না। কুকুরদের দেখলেই ভয় লাগে, সেই ব্যক্তির জবাব শুনে সম্পর্কটা আর এগিয়ে নিয়ে যাননি ক্লেয়ার।
কিন্তু তা বলে জীবনসঙ্গী চান না, এমন নয়। দেশের সব চেয়ে লম্বা কুকুরের মালকিন যিনি, যে কেউ কি তাঁর সঙ্গী হতে পারবেন! “খালি একটু সাহসী হতে হবে, ওইটুকুই যা দাবি” গলায় এক বারই একটু হতাশা উঁকি দিল সাহসিনীর।
|
মানুষকে কামড়ে আতঙ্ক তৈরি করেছিল কুকুর। তাই তাকে আটক করেছে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর পুলিশ। থানায় ভালই আছে সে। |