সম্পাদক সমীপেষু...
জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের সান্নিধ্যে কিছু দিন
‘মুক্ত মনের সেই আচার্যকে কুর্নিশ’ (৭-২) নিবন্ধটির প্রসঙ্গে ক’টি কথা বলতে চাই।
বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের অন্তর্গত গিরিডি শহরের সঙ্গে আচার্য জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সম্ভবত শহরের বারগাণ্ডাপাড়ার ‘ডোয়ার্কিন লজ’ বাড়িটি ছিল তাঁদেরই। সেখানকার এক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির কাছ থেকে শোনা, পঞ্চাশের দশকে জ্ঞানপ্রকাশ নিয়মিত গিরিডিতে যেতেন। ভদ্রলোকের সৌভাগ্য হয় কিছু দিন তাঁর কাছে তবলা শেখার।
আচার্য যখন গিরিডিতে থাকতেন, প্রতিদিন একনাগাড়ে ভোর চারটে থেকে ছ’ঘণ্টা রেওয়াজ করতেন। তাঁর কথানুযায়ী, তবলা বাজাবার সময় আচার্যের শরীরের কেবলমাত্র দু-হাতের আঙুল থেকে কনুই পর্যন্ত নড়ত। বাকি শরীরটি থাকত ঋজু, নিথর, ধ্যানমগ্ন।
স্বভাবতই গুরুর শিক্ষার প্রভাবে ওই ভদ্রলোক গানের আসরে তবলাবাদকের মাথা ঝাঁকানো বা অঙ্গভঙ্গি অশ্রদ্ধার চোখে দেখতেন।
প্রসঙ্গত, আচার্য জ্ঞানপ্রকাশের প্রভাবেই পঞ্চাশের দশকে কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুজোর সময় গিরিডির কালীমণ্ডা মণ্ডপে সারারাত্রিব্যাপী শ্লাঘনীয় সংগীত সম্মেলন হত।


এত মন্ত্রী কেন
সত্যিই বহু দফতরের কার্যত কোনও প্রয়োজন নেই। (‘এত মন্ত্রী কেন’, সম্পাদকীয়, ৩০-১২) আমাদের মুখ্যমন্ত্রী একটু খোঁজ নিলে জানতে পারবেন গুজরাত, বিহার কিংবা ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্যগুলিতে এত বিপুলায়তন মন্ত্রিসভা নেই।
উদাহরণ হিসেবে বলি, ক্রেতা সুরক্ষা, শিশুকল্যাণ, উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য ক্যাবিনেট মন্ত্রী রাখার যৌক্তিকতা আদৌ আছে কি? প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দফতর মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে রেখেছেন। এই দফতরগুলিও তো তিনিই নিজের হাতে রাখতে পারেন।


বিকেল কেন ভাল
সমরেশ মজুমদারের লেখা ‘বিকেলের মৃত্যু...’ (১-১৪) শীর্ষক নিবন্ধটি মনে প্রশ্ন জাগায়। প্রশ্নটি হল, বিকেল কেন ভাল? আসলে বিকেলের আলোর সঙ্গে ভোরের আলোর এক অদ্ভুত মিল আছে। যা আমাদের মনের মধ্যে এক মুক্তির ডানা মেলে দেয়। বেলার রোদ যেমন ভোরের আলোকে গ্রাস করে, তেমনই রাস্তার আলো বিকেলকে গ্রাস করে। সারা দিন ও সন্ধের কাজের চাপের ধকল কি আমাদের এখন আর সে ভাবে ভোরবেলাকে দেখতে দেয়?


মরণফাঁদ
আমি একজন ষাটোর্ধ্ব নাগরিক। শহরের রাস্তায় যখনই পায়ে হেঁটে বার হই, তখনই সচেষ্ট থাকি প্রতিটি পদক্ষেপে রাস্তা দেখে চলার। কারণ, এক বার হোঁচট খেলে এবং পড়ে গেলে আমার সমূহ বিপদ। কোন দিক দিয়ে কখন গাড়ি, অটো রিকশা বা স্কুটার চলে আসবে বা পথের এবড়োখেবড়ো পাথরে ধাক্কা লাগবে, তা বুঝতেই পারি না।
বিশেষ করে, কলকাতা বা সল্টলেক, যেখানে যেখানে মেট্রো রেলের স্টেশনগুলি নির্মাণ হচ্ছে, সেখানে যখন পৌঁছই, তখনই একদম ‘মস্তিষ্ক অন্ধকার’ হওয়ার অবস্থা। এখন যখন শহর জুড়ে শত শত আলোকস্তম্ভ লাগানো হচ্ছে, তখন এই বিশেষ জায়গাগুলোর কথা কেন ভাবা হচ্ছে না? কাজ চলাকালীন অস্থায়ী ভাবেও আলোকস্তম্ভ লাগানো চলে না কী?
তা ছাড়া, মেয়েদের শালীনতা রক্ষার জন্য তো এখন প্রচুর বিক্ষোভ চলছে। কিন্তু ঘটনা হল, এই জায়গাগুলি মেয়েদের শালীনতা হানির পক্ষে ও ছিনতাইবাজদের জন্য অতি উপযুক্ত জায়গা। আর তার পাশাপাশি, আমাদের মতো বয়স্ক ও বয়স্কাদের সুরক্ষার জন্য কি একটু ভেবে দেখা উচিত নয়?


মহিলাদের জন্য?
আমি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা-খড়্গপুর রুটের নিত্যযাত্রী। আমি মহিলা কামরাতেই যাতায়াত করি। কিন্তু বাস্তব সত্য এই যে, ট্রেনের মহিলা কামরা এখন সর্বসাধারণের কামরায় পরিণত হয়েছে। অনেক মহিলা দাঁড়িয়ে যাতায়াত করেন আর পুরুষ যাত্রীরা দিব্যি সিটে বসে পায়ের ওপর পা তুলে যাতায়াত করেন। অনেকে আবার মালপত্র নিয়ে ট্রেনের দরজার একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। তার ফলে, ওঠানামা করতে খুব অসুবিধে হয়। এ ভাবে ওঠানামা বিপজ্জনকও বটে। অনেক সময় ট্রেনে ওঠার আগেই ট্রেন ছেড়ে দেয়। অনেক মহিলাই প্রতিবাদ করেন কিন্তু তা কাজে দেয় না। রেল কর্তৃপক্ষ মাঝে মাঝে কড়া চেকিংয়ের ব্যবস্থা করেন কিন্তু তা নিয়মিত নয়। সন্ধে বা রাত্রির ট্রেনে মহিলাদের কাছে মহিলা কামরার চেয়ে সাধারণ কামরাই বেশি নিরাপদ। আমি ট্রেনের সমস্ত মহিলা যাত্রীর পক্ষ থেকে রেল কর্তৃপক্ষকে মহিলা কামরায় পুরুষ যাত্রীর যাতায়াত বন্ধ করার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি।


সব ভোট একসঙ্গে
পশ্চিমবঙ্গে ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোট হল, আবার ২০১৪ সালে লোকসভার ভোট, ২০১৫ সালে মিউনিসিপ্যালিটির ভোট এবং ২০১৬ সালে বিধানসভার ভোট। প্রতিটি নির্বাচনে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হয়। অশান্তি, দ্বন্দ্ব-বিবাদ, তিক্ততা, হানাহানি, মৃত্যু। তা ছাড়া নির্বাচনবিধি চালু হয়ে গেলে প্রতিটি নির্বাচনের সময় প্রায় দু-আড়াই মাস সব রকম সরকারি উন্নয়ন সম্পূর্ণ রূপে স্তব্ধ হয়ে যায়। পাঁচ বছর অন্তর সব ভোট যাতে একই সঙ্গে একই সময়ে হয়, সে জন্য সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করি।


ধর্মতলায় জল নেই
ধর্মতলা পশ্চিমবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র। সভা, মিছিল ও নানা প্রয়োজনে মানুষ এখানে আসেন। কিন্তু এখানে রাস্তার ধারে পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। রোদে হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দুর্ভোগের একশেষ। অগত্যা পথচারীদের পয়সা দিয়ে ভেজাল ঠান্ডা পানীয়, আখ ও ফলের রস, নুন লেবুর শরবত খেতে হচ্ছে। এই সব অস্বাস্থ্যকর পানীয় খেয়ে অসুস্থ হওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা থেকে যায়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.