গাড়ির ইএমআই-ও দিতে পারছেন না লেখক। এমন সময় আচমকা দেখা পুরনো বন্ধু অর্ক (দেবদূত ঘোষ)-র সঙ্গে। সে রাহুলকে বলে প্রাণতোষ দয়াল দীনবন্ধু (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়)-র কথা। যে মানুষের সব স্বপ্ন পূরণ করতে পারে অলৌকিক ভাবে। শর্ত একটাই, চুক্তিবদ্ধ হতে হবে দয়ালের সঙ্গে। প্রথমে এড়িয়ে গেলেও শেষ মেশ দয়ালের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় রাহুল।
এ বার কি সে মসৃণ জীবনের সন্ধান পাবে? না কি জড়িয়ে পড়বে কোনও জটিল আবর্তে? দয়ালরূপী ‘মেফিস্টোফিলিস’ রাহুলের স্বাভাবিক জীবনটাই ছিনিয়ে নিয়েছে? জানতে হলে ছবিটা দেখতে হবে।
অবশ্য ছবিটা দেখার আর একটা কারণ হতে পারে প্রাণতোষ দয়াল দীনবন্ধু। মানে তার ভূমিকায় অভিনয় করা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। নাটকীয় আগমন, আধিভৌতিক বাতাবরণ, ভয় ও ভরসা মেশানো কন্ঠস্বর এক কথায় কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় অসাধারণ। নিজের নিজের চরিত্রে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ও যথাযথ। কোথাও একটুও চড়া দাগ নেই। একটি প্রধান চরিত্রে রাইমা সেন-ও দারুণ। রাহুলের সাংবাদিক বন্ধু তৃষার চরিত্রে পাওলি দাম স্বাভাবিক।
তবু কোথাও একটু খামতি থেকে গেল। অরিজিৎ বিশ্বাসের গল্প ও চিত্রনাট্য ঠিকই ছিল। সমস্যা হয়ে গিয়েছে সংলাপে। প্রধান তিনটে চরিত্র বাদ দিয়ে বাকিদের সংলাপ আরও স্মার্ট হতে পারত। সেই ত্রুটি শোধরানোর জায়গা ছিল সম্পাদনায়। প্রথমার্ধে সেটা টানটান হলেও, দ্বিতীয়ার্ধে শিথিল। কলকাতা হোক কি উত্তরবঙ্গ শীর্ষ রায়ের সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ভাল। বিশেষ করে পর্দায় ছায়ার উপস্থিতি বা মাঝেমাঝে হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরার ব্যবহার আলাদা ভাবে প্রশংসাযোগ্য। সংলাপের মতোই আর একটা দুর্বল জায়গা সঙ্গীতের ব্যবহার। ব্যাকগ্রাউন্ড সঙ্গীতের এত দরকার ছিল না। পরমব্রতের গাওয়া ‘অরণ্যরাত’ বাদে বাকি গানগুলো বেমানান। এর আগেও অরিন্দম গোয়েন্দা গল্প নিয়ে কাজ করেছেন। তাই এই থ্রিলারটা আরও বেশি করে জমে যেতে পারত। |