রক্ষীদের মারধর, হোম থেকে
পালাল ২২ জন আবাসিক
লপাইগুড়ির একটি সরকারি হোম থেকে শুক্রবার গভীর রাতে উধাও হয়ে গেল ২২ জন আবাসিক। তবে, ‘কোরক অবজারভেশন অ্যান্ড জুভেনাইল হোম’ থেকে পালিয়ে যাওয়া ওই কিশোরদের মধ্যে তিন জনকে শনিবার সকালে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে তাদের তুলে দেওয়া হয় হোম কর্তৃপক্ষের হাতে। পলাতকদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি।
হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, পালানোর সময় দরজার তালা ভাঙার আওয়াজ পেয়ে বাধা দিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন হোমের জনা কয়েক প্রহরী। ওই কিশোররা তাদের রীতিমতো মারধর করে দরজা ভেঙে পালিয়ে যায়। তাদের প্রহারে গুরুতর জখম হয়েছেন হোমের তিন কর্মী। জপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে আপাতত তাঁরা চিকিৎসাধীন।
ওই হোমের দোতলায় ৩১ জন আবাসিক থাকে। শুক্রবার রাত পৌনে দু’টো নাগাদ হইচই শুনে দোতলায় উঠে গিয়েছিলেন গোপাল মণ্ডল নামে এক হোম-কর্মী। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে গোপালবাবু বলেন, “আবাসিকরা তালা ভাঙছে দেখে আমি এগিয়ে যাই। কিন্ত ততক্ষণে তারা তালা ভেঙে আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। গলায় গামছা পেঁচিয়ে আমার মোবাইলটা ছিনিয়ে নেয়।” গোপালবাবুর চিৎকারে বিশ্বজিৎ পাল এবং খোকন দাস নামে আরও দুই কর্মীও এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু জনা কুড়ি কিশোরের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেননি তাঁরা। তাদের পিছু ধাওয়া করে অন্য কর্মীরা জানান, করলা নদী সাঁতরে অন্ধকারে হারিয়ে যায় ওই কিশোরেরা।
হোমের আবাসিক পালানোর ঘটনায় উদ্বিগ্ন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা জেলা প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে রিপোর্ট তলব করেছেন। মন্ত্রী বলেন, “জলপাইগুড়ির ওই হোম নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। ওই ঘটনায় দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকার জানান, হোমে আপাতত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আশপাশের থানাগুলিকেও সতর্ক করা হয়েছে। জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক বিজয় রায় বলেন, “ওই কিশোররা কেন এমন মরিয়া হয়ে হোম থেকে পালাল তা ভেবে দেখার মতো। যে তিন জনকে উদ্ধার করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা হচ্ছে, হোমে তাদের ঠিক কী ধরনের অসুবিধা হচ্ছিল।” এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশও। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “ওই ছেলেগুলির খোঁজে লাগোয়া এলাকায় খোঁজ চলেছে।”
জলপাইগুড়ির রেসকোর্স পাড়ার ওই হোম থেকে আবাসিক পালানোর ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। হোম সূত্রের খবর, গত তিন বছরে সেখান থেকে অন্তত ১২ জন পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বার বার ওই হোম থেকে ছেলে-পালানোর ঘটনা ঘটছে কেন? হোম সুপার তাপস দাসের দায়সারা জবাব, “দল বেঁধে এ ভাবে কেন পালাল তা এখনই বলা সম্ভব নয়।” তবে হোমের আবাসিকদের একাংশের দাবি, কর্তৃপক্ষের ‘দুর্ব্যবহার’ আবাসিকদের ক্রমেই ‘বেপরোয়া’ করে তুলেছে। তাদের থাকা-খাওয়া নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগের পাহাড় জমেছে বলেও ওই আবাসিকদের দাবি।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.