বাবা-মায়ের বয়স বাড়ছে। অসুস্থতা নিত্য সঙ্গী। দেখভালের অসুবিধা। তাই তাঁদের হোমে রাখার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন দুই ছেলে। কিন্তু ৬৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের শেষ দিনগুলি একে অপরকে ছেড়ে কাটাতে চাননি গ্লেনিস এবং রয়স্টন স্মিথ। এক জনের বয়স ৮৮, অন্য জনের ৯১।
গল্পটা অনেকটা ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া হিন্দি ছবি ‘বাগবান’-এর মতোই। সেখানেও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন-হেমা মালিনী। কিন্তু চার ছেলে তাঁদের আলাদা রাখার বন্দোবস্ত করেছিল। প্রথমে তা মেনে নিতে বাধ্য হলেও পরে নিজেদের মতো করে থাকতে শুরু করেছিলেন দু’জনে। নতুন করে শুরু করেছিলেন জীবন। কিন্তু গ্লেনিস-রয়স্টনের পক্ষে তা হয়তো সম্ভব ছিল না তাঁদের বয়সের জন্য। তার উপর নানা রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। তাই একসঙ্গে থাকার জন্য সম্প্রতি চরম পথই বেছে নিলেন তাঁরা। মৃত্যু।
সকালে বাড়ির সামনের রাস্তায় দু’জনকে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে দেখে এগিয়ে এসেছিলেন পড়শিরা। দোতলার ঘরের জানলা খোলা দেখে মুহূর্তেই বুঝে গিয়েছিলেন ঠিক কী ঘটেছে। বাবা-মা যে এমন পদক্ষেপ করবেন তা এখনও মেনে নিতে পারছেন না মাইকেল। তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে এসেছে একটি সুইসাইড নোট। দুই ছেলের উদ্দেশে তাতে লেখা, “আমাদের ক্ষমা কোরো। তোমাদের বোঝা আর বাড়াতে চাই না। কিন্তু আলাদা থাকাটাও আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।” জানালেন, তিনি এবং তাঁর ভাই রিচার্ড মিলে বাবা-মাকে একটি হোমে পাঠানোর কথা ভেবেছিলেন বটে। তবে তাঁদের যাতে একসঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করা যায়, চেষ্টা করছিলেন তার জন্যও। মাইকেল-রিচার্ড ভাল ভাবেই জানতেন পরস্পরকে ছেড়ে থাকতে পারবেন না বাবা-মা। মাইকেলের কথায়, “বাবা প্রায়ই বলতেন মা আগে চলে গেলে তিনিও বেশি দিন বাঁচবেন না।” হয়তো ছেলেদের ভুল বুঝেছিলেন তাঁরা। অথবা, একসঙ্গে বাঁচার মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে বলেই হয়তো অন্য পৃথিবীতে পাড়ি দিলেন দু’জনে। |