অতলান্তিকের দুই পাড়ে হাত ধরে এগোচ্ছে ঝড়

১৫ ফেব্রুয়ারি
দু’টি আলাদা ঝড়। কিন্তু তারা এগোচ্ছে হাতে হাত ধরে। এই দু’জনের মধ্যে মিলও অনেক। এরাই আপাতত ঘুম কেড়ে নিয়েছে অতলান্তিকের দুই পাড়ে ব্রিটেন ও আমেরিকার। ব্রিটেনের উপকূলভাগ ডুবে গিয়েছে বন্যার জলে। আর আমেরিকার বিস্তীর্ণ এলাকা এখন বরফের চাদরে ঢেকে।
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, আলাদা আলাদা তৈরি হওয়া এই দু’টি ঝড়ই এখন মিশে গিয়েছে অতলান্তিকে। সম্প্রতি নাসার উপগ্রহ চিত্র থেকে এই চাঞ্চল্যকর তথ্যটি পাওয়া গিয়েছে। সেই ছবিই পরিষ্কার দেখিয়ে দিচ্ছে, কী ভাবে ওই দু’টি ঝড় হাত ধরে এগোচ্ছে।
জলোচ্ছ্বাস। শনিবার দক্ষিণ ইংল্যান্ডের সাসেক্সে। ছবি: রয়টার্স।
গত কয়েক দিন ধরে যে ঝড়-বৃষ্টি-তুষারপাতের দাপট চলছিল ব্রিটেন আর আমেরিকায়, তা কমার নামই নিচ্ছে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে কাল রাতে ব্রিটেনে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার হাত থেকে মুক্তি পেলেও গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে লন্ডনে। সেই সঙ্গেই বইছে ঠান্ডা কনকনে ঝোড়া হাওয়া। পুলিশ জানিয়েছে, মধ্য লন্ডনের হলবর্ন মেট্রো স্টেশনের বাইরে কাল রাতের দিকে একটি গাড়ির উপর একটি বহুতলের অংশ ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। গাড়িটিতে আরও দুই আরোহী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জন জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। অন্য ঘটনাটি ঘটেছে ইংলিশ চ্যানেলে।
এক হাজার চুরাশি জন যাত্রী নিয়ে একটি প্রমোদতরী ফিরছিল টিলবারির উপকূলে। মাঝ সমুদ্রে একটি বিশাল ঢেউ ধাক্কা মারে ওই জাহাজে। বিশালকার জাহাজটি তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক বয়স্ক যাত্রীর। বছর পঁচাশির ওই বৃদ্ধকে হেলিকপ্টার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াও হয়েছিল। কিন্তু সেখানে তিনি মারা যান। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জন যাত্রী আহতও হয়েছেন। তাঁদেরও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উপকূলবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার খবর এসেছে দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ার থেকেও। পুলিশ জানিয়েছে, কাল সন্ধ্যায় সেখানকার একটি রেস্তোরাঁয় হুড়মুড়িয়ে বন্যার জল ঢুকে পড়ে। পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল গিয়ে সেখান থেকে ৩২ জনকে উদ্ধার করেছে। রেস্তোরাঁর একতলাটি এখন পুরোপুরি জলের তলায় চলে গিয়েছে।
তুষার-বিনোদনে
মজেছেন স্কটল্যান্ডবাসী।
রাস্তা না কি নদী? চেনাই দায়।
ইংল্যান্ডের ওয়রসেস্টারে।
ব্রিটেনে স্বাভাবিক জনজীবন এখনও ভীষণ ভাবে ব্যাহত। স্কুলগুলিতে বেশ কিছু দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। উপকূল এলাকায় রেল পরিষেবা স্তব্ধ। ওয়েলস ও ইংল্যান্ডের উপকূলবর্তী এলাকার বহু বাড়িতে এখনও আলো নেই।
এর মধ্যেই রানির উইন্ডসর প্রাসাদের কাছে উদ্ধার কাজে হাত লাগাতে দেখা যায় উইলিয়াম ও হ্যারিকে। কিছু দিন আগেই বন্যা মোকাবিলা নিয়ে সরকারের সমালোচনা শোনা গিয়েছে রানির মুখে। আর কালই ড্যাশেটে এক হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে বালির বস্তা বিলিয়েছেন রাজপরিবারের দুই সদস্য। আজ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে সেই ছবি ফলাও করে বেরিয়েওছে।
আবহবিদেরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনের জন্য ওয়েলস ও দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের উপকূলবর্তী বেশ কয়েকটি এলাকার জন্য চূড়ান্ত বন্যা সতর্কতা জারি থাকবে। তবে আশার কথা এই যে, এই সপ্তাহান্তের পরে ঝড় আর বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা হলেও কমতে পারে। তবে বন্যার জল নামতে লেগে যাবে আরও কয়েক দিন।
মৃতের সংখ্যা বাড়ছে আমেরিকাতেও। গত দু’দিনের তুষার ঝড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫। বেশির ভাগ মৃত্যুই হয়েছে পথ দুর্ঘটনার ফলে। আহত ৩০ জন। আবহবিদেরা জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্ব আমেরিকা পেরিয়ে ওই ঝড় এখন কানাডার দিকে এগোচ্ছে। কিউবেকে ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জাতীয় সড়ক। আজ রাত ও কাল সকালে কানাডার একটা বড় অংশে ভারী তুষারপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।

ছবি: গেটি ইমেজেস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.