সিপিএমকে বর্ধমানের মঙ্গলকোটে সভা করার অনুমতি দিল না প্রশাসন। আজ, রবিবার ওই সভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিমের। কিন্তু অনুমতি না মেলায় সভা বাতিল করে দিয়েছেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে তাঁদের চাপান-উতোরও শুরু হয়েছে। সভা বাতিল হয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে জেলা জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিও নিয়েছেন তাঁরা।
জেলা সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুনহাটের একটি বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্রের পাশের একটি জমিতে সভা করা হবে বলে ঠিক হয়েছিল। দিন কয়েক আগে সেই জমির ‘মালিক’ বিদ্যাসাগর পালের কাছ থেকে সভা করার অনুমতিপত্র নিয়ে প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হয়। তখন শুক্র বা শনিবার সভা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই দু’দিন জেলায় মুখ্যমন্ত্রী থাকার কারণে সভার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা যাবে না বলে পুলিশ জানায়। তাই রবিবার সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু শুক্রবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ দলের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদকের বাড়ি গিয়ে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি চিঠি দিয়ে জানান, ওই সভার জন্য প্রশাসন অনুমতি দিতে পারছে না।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের অভিযোগ, “নতুনহাটে যেখানে সভা হওয়ার কথা ছিল, সেই জমির মালিক প্রথমে অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের ৫০-৬০ জন দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে সেই অনুমতিপত্র তুলতে বাধ্য করে।
এর পরে আমরা অজয়ের চরে হাত-মাইক নিয়ে সভা করব বলে ঠিক করি। কিন্তু পুলিশ ও তৃণমূল যোগসাজশ করে সেখানেও আমাদের সভা করতে দিল না।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী। তাঁর দাবি, “সভায় লোক হবে না বলেই সিপিএম নিজেরাই জমির মালিককে দিয়ে আপত্তি তুলেছে। আর এখন আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নাটক করছে।”
কাটোয়ার মহকুমাশাসক মৃদুল হালদার বলেন, “পুলিশ ওই সভার জন্য ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র দেয়নি। সেই কারণে আমরাও সভার জন্য কোনও অনুমতি দিতে পারিনি।”
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজেকে ওই জমির ‘মালিক’ দাবি করে জনৈক বিদ্যাসাগর পাল সিপিএমকে সভা করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিই পরে প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জানান যে, ওই জমির আরও দুই অংশীদারের সঙ্গে কথা না বলেই তিনি অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই অংশীদারের আপত্তির কারণে তিনি অনুমতি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।
বিদ্যাসাগরবাবুর সঙ্গে শনিবার যোগাযোগ করা যায়নি। জেলা পুলিশের এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘সভার জন্য শংসাপত্র না দেওয়ার পিছনে কোনও চক্রান্তের কোনও ব্যাপার নেই। আমরা তো আগে কেতুগ্রাম-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় সিপিএমকে সভার অনুমতি দিয়েছি।”
|