সান্দাকফুতে বরফ, জাঁকিয়ে ফিরল শীত
প্রেমের দিনে সাত সকালেই তুষারে ঢেকে গেল সান্দাকফু। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার হাত ধরে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’-র দিন ঠান্ডা ফিরল উত্তরবঙ্গে, সেই সঙ্গে তুষারপাতও। শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ দার্জিলিঙের সান্দাকাফুতে তুষারপাত শুরু হয়। প্রায় আধঘণ্টা ধরে তুষারপাত হওয়ায় রাস্তায় প্রায় ১ ফুট পুর তুষারের স্তর জমে যায়। এর আগে গত ১১ জানুয়ারি সান্দাকফু এবং টাইগার হিলে তুষারপাত হয়েছিল। এ দিন দিনভরই শৈলশহর দার্জিলিঙের তাপমাত্রা ছিল আড়াই থেকে তিন ডিগ্রির মাঝামাঝি। সন্ধ্যার পরে তাপমাত্রা আরও কমে যায়। হঠাৎ করে তুষারপাত এবং একধাক্কায় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রির কাছাকাছি নেমে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যদিও ‘প্রেম দিবসে’ বাধ সাধতে পারেনি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। দার্জিলিঙের পাকদণ্ডি পথেই সারাদিনের কুয়াশার আড়ালেই দেখা মিলেছে প্রেমিক-প্রেমিকাদের। বন্ধুদের দল বেঁধে রেস্তোরা থেকে চৌরাস্তায় হুল্লোড় করতেও দেখা গিয়েছে।
বৃষ্টিতে সুনসান বালুরঘাট শহরের রাস্তা। ছবি: অমিত মোহান্ত।
পশ্চিম হিমালয় থেকে উড়ে আসা পশ্চিমী ঝঞ্ঝায় ঠান্ডায় কাঁপছে সমতলও। শুক্রবার সকালে ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে ঘুম ভেঙেছে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহারের। বৃষ্টির সঙ্গে ছিল কনকনে উত্তুরে হাওয়াও। গত কয়েকদিন ধরে সমতলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির উপরেই ছিল। গরম জামাকাপড় আলমারিতে তুলে রেখেছিলেন অনেকেই। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জোরালো উপস্থিতে, ফের ভাজ ভাঙতে হয়েছে সেই পোশাকের।
এ দিন শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রির সামান্য বেশি। তুলনায় শীতের দাপট বেশি ছিল কোচবিহারে। সেখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি। মালদহ, রায়গঞ্জও বাদ যায়নি শীতের দাপট থেকে। একই রকম আমেজ ছিল সিকিমেও। শুক্রবার রায়গঞ্জের মোহনবাটি হাইস্কুলের আবহওয়া বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৫ ডিগ্রি। জেলার সর্বত্রই দিনভর আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। শুক্রবার দিনভর ব্যাপক ঠান্ডা ও ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে কোচবিহারের স্বাভাবিক জনজীবনও।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “সপ্তাহখানেক আগে একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার সঙ্গে শীতও প্রায় বিদায় নিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে ফের আরেকটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সিকিম এবং উত্তরবঙ্গের আকাশে এসেছে। তার ফলেই পাহাড়ে তুষারপাত এবং সমতলে বৃষ্টি শুরু হয়েছে শুক্রবার সকাল থেকে। তার জেরেই তাপমাত্রা এক লাফে অনেকটাই নেমে গিয়েছে। আরও তিনদিন এই পরিস্থিতি চলবে।”
বৃষ্টিভেজা জলপাইগুড়ি শহর। শুক্রবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
তাপমাত্রা হেরফের অবশ্য প্রেমের দিনের উন্মাদনা পালটে দিতে পারেনি। ঘন কুয়াশা এ দিন দুপুর বেলাতেও জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া জুবিলি পার্ক থেকে মাত্র ২০০ মিটারের মধ্যে থাকা তিস্তা নদীকেও আড়াল করে রেখেছিল। তার মধ্যেই বসে থাকতে দেখা গিয়েছে, প্রেমিক যুগলদের। কুয়াশা ঢাকা নদীতে নৌকা-ভ্রমণ হয়েছে তিস্তায়। ঠান্ডার হাত থেকে আড়াল পেতে নাকে মুখে মাফলার ঢেকে মধ্যবয়সীদের রাস্তায় চলাফরা করতে দেখা গেলেও জলপাইগুড়ির কদমতলা-ডিবিসি রোডে বাইকে চেপে হুশ করে দৃষ্টি রেখার বাইরে চলে গিয়েছে যুগলেরা। একই প্রেম-উদযাপন দেখা গিয়েছে শিলিগুড়িতেও। ঠান্ডার কামড়ে সরকারি-বেসরকারি দফতরের হাজিরা ছিল কম, হিলকার্ট রোডর ব্যস্ততাও অনান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কমই ছিল। যদিও শহর লাগোয়া মাটিগাড়ার সিটি সেন্টার কিংবা অনান্য শপিং মলে ভিড় উপচে পড়েছিল। ভিড়ের সিংহভাগই ছিল কমবয়সীদের। প্রেমের দিনে ফুলের চাহিদাও ছিল তুঙ্গে। দিনভরই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি চলেছে। শিলিগুড়ির বাসিন্দা ছাত্রী অর্পিতা চৌধুরী ফুলের দোকানের ভিড়ে ছিলেন। আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তনে অর্পিতাকে উচ্ছ্বসিতই দেখাল, বললেন, “দোকানে এসে দেখলাম সব ফুলই বৃষ্টিতে ভিজে যেন আরও তাজা হয়ে উঠেছে।” কোচবিহারের এনএন পার্ক, রসিকবিল, রসমতি ও খোলটা পর্যটন কেন্দ্রে যুগলদের ভিড় এ দিন দেখা গিয়েছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.