অনুব্রত ভাল ছেলে, শেষ পর্যন্ত যাব, বললেন মমতা
নিজস্ব সংবাদদাতা |
ফের বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি এবং দলের বিতর্কিত নেতা অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অনুব্রতকে এ বার সরাসরিই ‘ভাল ছেলে’ বলে উল্লেখ করে তাঁর জন্য ‘শেষ পর্যন্ত’ যাবেন বলে শনিবার দলের যুব ও ছাত্র কর্মশালায় মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাড়ুই-কাণ্ডে হাইকোর্টে যখন রাজ্য প্রশাসনকে নিয়মিত তিরস্কারের মুখে পড়তে হচ্ছে, সেই সময়েই ওই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুব্রতের পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী খোলাখুলি সওয়াল করায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক শিবিরের একাংশে।
দুর্গাপুরে এ দিন তৃণমূল ‘যুবা’, যুব ও ছাত্র পরিষদের কর্মীদের নিয়ে কর্মশালায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “কেষ্টর (অনুব্রত) মতো দু-একটি ভাল ছেলে আছে! ওর মতো ছেলে দরকার। ওর জন্য শেষ পর্যন্ত যাব! কেউ কেউ ওর পিছনে লাগে! কিন্তু ও ভাল সংগঠক।” অনুব্রতের মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহের ঘাটতি সংক্রান্ত অসুস্থতার কথাও এ দিন ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার চলাকালীন অনুব্রতের হুমকি নিয়ে বিতর্কের সময় বিধানসভায় দাঁড়িয়েও মুখ্যমন্ত্রী রক্ষা করেছিলেন শাসক দলের জেলা সভাপতিকে। |
হাইকোর্ট শুক্রবারই বলেছিল, পাড়ুই-কাণ্ডের তদন্তে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত অফিসার দরকার। তার আগে তিন জন আইপিএস-কে ওই তদন্তের ভার দিতে চাওয়া নিয়ে কথা হলেও ঐকমত্য হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত তদন্ত যে আর সম্ভব নয়, আদালতের পরোয়া না-করে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীই এ দিন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহম্মদ সেলিমের কথায়, “ভাল সংগঠক হলে পুলিশকে বোমা মারতে নির্দেশ দেওয়া যায়! বিরোধীদের ঘর জ্বালাতে বলা যায়! নির্দল প্রার্থীকে খুন করতে বলা যায়! এটা এখন বোঝা গেল!” তাঁর আরও কটাক্ষ, “এর আগে ধনেখালি-কাণ্ডে অসীমা পাত্র, ভাঙড়ে আরাবুল ইসলাম বা রায়গঞ্জে কলেজের ঘটনায় ছোট্ট ছেলে তিলক চৌধুরীদের পাশে উনি দাঁড়িয়েছেন। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, তৃণমূলের ভাল সংগঠক তাঁরাই, যাঁরা অপরাধ সংগঠিত করতে পারেন!”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মতে, “তৃণমূল নেত্রী যখন দলীয় মঞ্চ থেকে কিছু বলেন, তখনও কিন্তু তিনি মুখ্যমন্ত্রী। ফলে, পুলিশ-প্রশাসনের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা যায় যে, আমার অনুগত কাউকে গ্রেফতার করো না! আমার দলের নেতার জন্য আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করব! মানে, মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন না ব্যবস্থা নেওয়া হোক!” তাঁর আরও বক্তব্য, “মাথায় রাখতে হবে, সামনে লোকসভা ভোট। অনুব্রতের মতো নেতাদের গ্রেফতার করা হলে ওঁরা ওই জেলায় ভোট করবেন কী ভাবে?”
সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে গার্ডেনরিচের একটি সভায় তৃণমূল নেত্রী মন্তব্য করেছিলেন, “আমি গুন্ডা কন্ট্রোল করি।” ওই মন্তব্য নিয়ে সেই সময়ে নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানিয়েছিল বামেরা। সেই ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেই এ দিন সেলিম বলেছেন, “এখন বোঝাই যাচ্ছে, অপরাধীদের পাশে উনি আছেন! অথচ লাভপুরের নির্যাতিতা মেয়েটি বা মধ্যমগ্রামের হতভাগ্য পরিবারের বিচার পাওয়ার জন্য উনি শেষ বিন্দু পর্যন্ত লড়বেন বললে সকলে আশ্বস্ত হতেন।”
|
কেজরীবালকে নাগাড়ে আক্রমণ কংগ্রেস-বিজেপির,
খারিজ বিধানসভা ভাঙার সুপারিশও
সংবাদ সংস্থা |
মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ছাড়লেও বিরোধীদের আক্রমণ থেকে আপাতত নিস্তার নেই দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রিত্বে ইস্তফার পর ‘দায়িত্ব থেকে পালানোর’ অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি এবং কংগ্রেস। অরবিন্দকে আক্রমণ করে কংগ্রেস সাংসদ সন্দীপ দীক্ষিত বলেন, ‘‘কেজরীবালকে আমরা একটা সুযোগ দিয়েছিলাম। সেই সুযোগ নিতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। সরকার চালাতে তিনি কখনওই আগ্রহী ছিলেন না। দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যাওয়া তাঁর পুরনো অভ্যাস।’’ তবে অরবিন্দর বিধানসভা ভাঙার সুপারিশ এখনই কার্যকর হচ্ছে না দিল্লিতে। শনিবার সকালে তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠালেও বিধানসভা ভাঙা যে এখনই সম্ভব না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন উপ রাজ্যপাল নজিব জঙ্গ।
আপ সরকারের পতনের জন্য কংগ্রেস এবং বিজেপিকে দায়ী করে আপ নেতা প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘‘জন লোকপাল বিল পাশ করানো আমাদের প্রাথমিক কর্তব্য ছিল। কংগ্রেস এবং বিজেপি এক সঙ্গে বিলের বিরোধিতা করায় আমরা বিল পাশ করাতে পারিনি। এর পর সরকারে থাকার কোনও মানেই হয় না।’’ কংগ্রেস-বিজেপির আঁতাঁত যে দেশের দুর্নীতি মুক্ত হওয়ার প্রধান বাধা তা-ও বলেন তিনি। প্রশান্তের দাবি, ক্ষমতার অলিন্দে থাকার জন্য তৈরি হয়নি আপ। দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করাই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্যেই আগামী লোকসভা নির্বাচনে অরবিন্দ কেজরীবালের নেতৃত্বে লড়াই করবে আম আদমি পার্টি। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশ জুড়ে বিজেপি এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবে তারা। এ দিন বিজেপির তরফ থেকেও সরকার না গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজেপি নেতা হর্ষ বর্ধন বলেন, ‘‘সংখ্যাগরিষ্ঠ না হওয়ায় সরকার গড়তে চাই না আমরা। নতুন করে নির্বাচনে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই সরকার গড়তে চায় বিজেপি।’’
শুক্রবার কিরণ বেদীর টুইট নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অরবিন্দের পদত্যাগের পর তাঁর এই প্রাক্তন সহযোগী টুইট করেন ‘ইস্তফার কারণ কি লোকপাল না লোকসভা?’ এর পরই কিরণকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন আপ নেতারা। তাঁকে বিজেপি সদস্য বলে মন্তব্য করেন প্রশান্ত ভূষণ।
|
বন্দুক দেখিয়ে আবাসন থেকে দু’টি মোটরবাইক লুঠ
নিজস্ব সংবাদদাতা |
আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী ও এক বাসিন্দাকে বেঁধে রেখে দু’টি মোটরবাইক লুঠ করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার গভীর রাতে তেঘরিয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত সওয়া তিনটে নাগাদ তেঘরিয়া কলুপুকুরের একটি আবাসনে ঢোকে পাঁচ দুষ্কৃতী। সে সময় অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ওই আবাসনের বাসিন্দা অমিত মণ্ডল। তাঁকে এবং ওই আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী সন্তোষ সরকারকে জাপটে ধরে নিরাপত্তারক্ষীর জন্য নির্দিষ্ট ঘরে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তার পর বন্দুক-ভোজালি দেখিয়ে বেঁধে ফেলে আবাসনের নীচে গ্যারাজে রাখা দু’টি মোটরবাইকের তালা ভেঙে নিয়ে পালায়। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দুষ্কৃতীরা প্রথমে ওই আবাসনের পিছনের একটি আবাসনে ঢুকেছিল। সেখানকার রক্ষীকে বেঁধে ফেলে পাঁচিল টপকে এই আবাসনে ঢোকে তারা।
ওই আবাসনের বাসিন্দা, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার চাকুরে অমিত জানিয়েছেন, নাইট ডিউটি সেরে তিনি সাধারণত ভোর পাঁচটা নাগাদ বাড়ি ফেরেন। কিন্তু শুক্রবার অফিসে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় এক বন্ধুর মোটরবাইকে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন। এর পর তিনিই সন্তোষ সরকার নামে ওই নিরাপত্তারক্ষীকে ডাকেন। অমিত বলেন, “সন্তোষবাবু আবাসনের গেট খোলার পরেই পিছন থেকে পাঁচ দুষ্কৃতী ঝাঁপিয়ে পড়ে আমাদের জাপটে ধরে নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে আমাদের ঢুকিয়ে দেয়।” তাঁরা চেঁচামেচি করলে বন্দুক ও ভোজালি দেখিয়ে চুপ করতে বলে দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েক মাসে বাগুইআটি-তেঘরিয়া এলাকায় একের পর এক মোটরবাইক চুরি হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি ঘটনায় অবশ্য চোরাই মোটরবাইক উদ্ধারও করা হয়েছে। কিন্তু কেন ওই এলাকায় পর পর মোটরবাইক চুরি হচ্ছে, কোন কোন চক্র ওই চুরির সঙ্গে জড়িত, তা নিয়ে এখনও বিশদে জানতে পারেননি তদন্তকারীরা।
|
তেতাল্লিশ বছর পর শিল্ড মহমেডানের
নিজস্ব সংবাদদাতা |
ইতিহাস গড়লেন সঞ্জয় সেনের মহমেডান। তেতাল্লিশ বছর পর আবার আইএফএ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়ে। মুক্তি যুদ্ধের বছরে শেষ ঐতিহ্যের শিল্ড ঢুকেছিল মহমেডানে। এ বার সেই বাংলাদেশকে হারিয়েই দেশের মান রক্ষা করলেন পেন-লুসিয়ানোরা। উৎসবে মাতলেন যুবভারতী উপস্থিত সাদা-কালোর সমর্থকরা।
টানটান উত্তেজনার ম্যাচে প্রতি মুহূর্তই ছিল নাটকীয় উপাদানে ঠাঁসা। বিরতির আগেই শেখ জামাল ধানমন্ডিকে এগিয়ে দেয় সনি নর্ডি। মেহরাজ সমতা ফেরান। নির্ধারিত সময়ের ম্যাচ শেষ হওয়ার দশ মিনিট আগে জোড়া লালকার্ড দেখে বেরিয়ে যান ধানমন্ডির সেরা বিদেশি সনি নর্ডি এবং মহমেডানের সেরা ডিফেন্ডার লুসিয়ানো সাব্রোসা। তারপরও প্রায় চল্লিশ মিনিট দশ বনাম দশের লড়াই। ১-১ অবস্থায় টাইব্রেকার এবং শেষ পর্যন্ত সাডেন ডেথে ম্যাচের নিষ্পত্তি। লুই ব্যারেটোর বদলে নামা কিপার নাসিম আখতারের দুরন্ত পারফরম্যান্সের জন্যই এ দিন চ্যাম্পিয়ন হল মহমেডান।
বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসা মহমেডান কোচ বহু অঘটনের সাক্ষ্মী। কিন্তু সঞ্জয় সেন জীবনে কখনও ট্রফি জেতেননি। ফাইনালে উঠেছেন, কিন্তু ট্রফি থেকে বারাবার দূরে থেকে গিয়েছেন এবং বেশ কয়েকবার তাঁকে ট্রফি থেকে ছিটকে দিয়েছে টাইব্রেকারই। আর শনিবার শিল্ডে সেই টাইব্রেকারই ট্রফি জয়ের স্বাদ এনে দিল বাংলার সঞ্জয়কে। |
ওয়েলিংটন টেস্ট জয়ের দিকে এগোচ্ছে ভারত
সংবাদ সংস্থা |
দুর্ধর্ষ বোলিং করে কিউয়িদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর, দ্বিতীয় দিনেই ধবন-রাহানেদের চওড়া ব্যাটে ভর করে রানের পাহাড়ে ভারত। সেঞ্চুরি করলেন আজিঙ্ক রাহানে।
শনিবাসরীয় বেসিন রিজার্ভে সারা দিন দাপটের সঙ্গে ব্যাট করলেন ভারতীয়রা। ধবন-রাহানেদের স্ট্রাইক রেট ছিল চোখে পড়ার মতো। সাউদি-ওয়েগনারদের নাজেহাল করে আগাগোড়া চারের উপর রান রেট রেখে যায় টিম ইন্ডিয়া। ২৪৬ রানের বড়সড় লিড নিয়ে প্রথম ইনিংস শেষ করে ভারত। জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই উইকেট হারায় কিউয়িরা। জাহিরের প্রথম ওভারেই আউট হয়ে ফিরে গেছেন পিটার ফুলটন। দিনের শেষে নিউজিল্যান্ড ২৪/১। |
শুক্রবার ২ উইকেটে ১০০ রানে দিন শেষ করার পর শনিবার আবার একই গতিতে ব্যাট করা শুরু করেন ধবনরা। মাত্র দু’রানের জন্য তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি ফস্কালেন ধবন। সাউদির বলে ৯৮ রানে আউট হন তিনি। তবে ধবন সেঞ্চুরি ফস্কালেও ওয়েলিংটনে জীবনের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করলেন আজিঙ্ক রাহানে। তাঁর সঙ্গে কোহলি ও ধোনির পার্টনারশিপই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। কোহলি ৩৮ ও ধোনি ৬৮ রান করেন। শেষ দিকে চালিয়ে খেলে ভারতকে ৪০০-এর গণ্ডি পার করান জাডেজা ও জাহির। ৪৩৮ রানে শেষ হয় ভারতের প্রথম ইনিংস। মিডল অর্ডারের সাফল্যের দিনে অবশ্য যথারীতি ব্যর্থ রোহিত শর্মা। এ দিনও শূন্য রানে বোল্ড হন তিনি। নিউজিল্যান্ডের হয়ে বোল্ট, সাউদি ও ওয়েগনার তিনটি করে উইকেট নেন। |