৩ বছরেও মেলেনি বিচার, আজ প্রতিবাদ
সে দিনটাও ছিল ভ্যালেন্টাইন ডে। মাধ্যমিকের আ্যডমিট কার্ড হাতে পেয়েছিল ছেলেটি। রাত্তিরে রোজকার মতো দিদিকে আনতে সাইকেল নিয়ে স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিল। তার পর সাইকেলের রডে দিদিকে বসিয়ে বাড়ির পথে অ্যাডমিট কার্ড আনার গল্প শোনাচ্ছিল। পথে এক দল মদ্যপ দুষ্কৃতী ঘিরে ধরে তাদের। দিদিকে বাঁচাতে গিয়ে খুনই হয় ছেলেটি। সে দিন বেসামাল দুষ্কৃতীদের সে বোঝাতে পারেনি, তারা একে অপরের ‘ভ্যালেন্টাইন’ নয়, ভাই-বোন।
বারাসত স্টেশনের কাছে সেই ঘটনার পরে তিন বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু রাজীব দাস হত্যাকাণ্ডের বিচারপর্ব এখনও সেই তিমিরেই। কখনও বিচারক নেই, কখনও বা আইনি জটিলতায় থমকে কাজ। আজ, শনিবার সে সব নিয়েই প্রতিবাদসভা হবে বারাসতের বাণীকণ্ঠনগরে। মৃত্যুর আগে ছুরিকাহত রাজীবকে নিয়ে সে দিন যে বন্ধুরা বারাসত থেকে কলকাতার হাসপাতালে ছুটে বেড়িয়েছিল সেই রাজীব দে, অভিজিৎ শীল, যাদব দাসরাই সভার উদ্যোক্তা। রাজীবের খুনে অভিযুক্ত তিন জন এখন জেলে।
বেদনার স্মৃতি। ভাই রাজীবের ছবি হাতে রিঙ্কু দাস। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
কিন্তু আদালতে তাদের দোষ প্রমাণ এখনও হয়নি। কেন এত দেরি? সেই নিয়ে ক্ষোভ চেপে রাখছে না মৃত কিশোরের বন্ধুরা। রাজীব দে বলেন, “কিন্তু ও তো আমাদেরই বন্ধু। আমরা ওকে ভুলব কী করে? ওর ছবি নিয়ে পাড়াতেই প্রতিবাদসভা করব।” রাজীবের মৃত্যুর পরে ফেসবুক-এর মাধ্যমে একজোট হয়ে বারাসতে মোমবাতি মিছিল করেছিল স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা। অ্যাডমিট কার্ডে রাজীবের যে ছবিটি ছিল, সেটাকে বড় করে বাঁধিয়ে পরিবারকে দিয়েছিল তারাই। এখন বাড়িতেও রাজীবের স্মৃতি বলতে ওই ছবিটুকু।
দেওয়ালে টাঙানো সেই ছবিটা নামিয়েই পরিষ্কার করছিলেন রিঙ্কু। রাজীবের দিদি। শুক্রবার সকালে সেই কাজের ফাঁকেই বললেন, “ভাইয়ের বন্ধুরা এসেছিল। শনিবার ওরা প্রতিবাদসভা করবে বলল। ছবিটা চাইল। তাই পরিষ্কার করছি।”
আর কিছু বলবেন? ছলছল চোখ দু’টো সামলে মুখটা ঘুরিয়ে নিলেন। দোষীদের শাস্তির কী হবে? আর নিজেকে সামলাতে পারলেন না। ক্ষোভ উগরে দিলেন, “তিন বছরেও বিচার শেষ হল না। পুলিশ-সিআইডি-আদালত করতে-করতে আমরা ক্লান্ত।” রিঙ্কু বলে চলেন, “বাবা-মা অসুস্থ। ওই ঘটনার পর আমিও সচরাচর বেরোই না। সবাই খুনিদের শাস্তির দিনটার দিকে তাকিয়ে।”
রাজীব হত্যাকাণ্ড নিয়ে নাটক-সিনেমা-সিরিয়াল, কী হয়নি! কিন্তু বিচারপর্ব চলছেই! মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি শান্তময় বসু বলেন, “প্রথম দিকে আসামি পক্ষের হয়ে কোনও আইনজীবী লড়তে না চাওয়ায় দেরি হয়।” মামলাটি প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাসে চলছে। সেখানে সম্প্রতি বিচারক ছিলেন না। “বৃহস্পতিবারে নয়া বিচারক এসেছেন। ফের মামলার কাজ শুরু হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.