তমলুকের জয়িতা কেন পাঁশকুড়ায় গেল, জল্পনা
ঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী জয়িতা নায়েকের মৃত্যুতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে তদন্ত শুরু করল রেলপুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাঁশকুড়া ও ক্ষীরাই স্টেশনের মাঝে কাঁসাই রেল সেতুর কাছে রেল লাইনের ধার থেকে তমলুক শহরের শালগেছিয়া এলাকার বাসিন্দা জয়িতার দেহ উদ্ধার হয়। রাতে তাঁর বাবা কালীপদ নায়েক পাঁশকুড়ায় গিয়ে মেয়ের মৃতদেহ শনাক্ত করেন। তবে, ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় পরিজনরা শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।
শুক্রবার সকালে পাঁশকুড়া পুরসভার জদড়া ও বালিডাংরি এলাকার ওই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রেল লাইন বরাবর প্রায় দশ ফুট দূরত্বের একাধিক জায়গায় রক্তের আবছা ছাপ। পড়ে রয়েছে বাদামী রঙের কাচ ছাড়া চশমার ফ্রেমটিও। স্থানীয় বালিডাংরি গ্রামের প্রহ্লাদ কর বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে রেল লাইনের দিকে গিয়েছিলাম। তখন দেখি জিনসের প্যান্ট ও স্কুল ড্রেসের মত জামা পড়া একটি তরুণী মোবাইল কানে দিয়ে রেল লাইন ধরে পাঁশকুড়া থেকে ক্ষীরাই স্টেশনের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন।” তাঁর দাবি, সেই সময় তিনটি ছেলে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলছিলেন। এরপর ওঁরা আরও এগিয়ে যায়। প্রহ্লাদ বলেন, “শুক্রবার সকালে শুনি রেল লাইনের একটি মেয়ের দেহ পড়ে রয়েছে। পরে জানতে পারি ওই মেয়েটিই জয়িতা।” একই বক্তব্য স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল দাসের।
ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছে চশমা। —নিজস্ব চিত্র।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ৫টা ৪৫ মিনিট নাগাদ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া থেকে খড়্গপুরগামী একটি মালগাড়ির সামনে আচমকা একটিমেয়ে লাইনে চলে আসেন এবং গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়েন। বালিচক স্টেশনে ওই মালগাড়ির চালক এমনটাই জানান। পাঁশকুড়া জিআরপির ওসি কিরিটি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পাঁশকুড়া রেল স্টেশন থেকে খড়গপুরের দিকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে প্রথম রেল লাইনের দুটি ট্র্যাকের মাঝে লম্বা ভাবে ওই ছাত্রীর দেহ পড়েছিল। মৃতের মুখ ক্ষতবিক্ষত ছিল, ডান পা কাটা ছিল।” তিনি আরও বলেন, “মৃতদেহের কাছেই একটি ব্যাগ ও প্রায় দশফুট দূরে মোবাইল ফোন পড়েছিল।” উল্লেখ্য, জয়িতা উত্তর চব্বিশ পরগণার ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ছিলেন।
রেল পুলিশের দাবি অনুযায়ী, মালগাড়ির ধাক্কায় জয়িতার মৃত্যু হয়েছে। যদিও এলাকাবাসীর দাবি কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় কিছু ধন্দ থেকেই যাচ্ছে। কেননা, জয়িতার বাড়ি তমলুক হওয়া সত্ত্বেও কেন মেচেদা থেকে একাধিক স্টেশনে উজিয়ে সে পাঁশকুড়া গেল! কী ভাবেই বা পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে আরও আড়াই কিলোমিটার দূরে তাঁর দেহ উদ্ধার হল তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। এ দিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জয়িতা তাঁর মা’য়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর মাসি গীতশ্রী দাস। গীতশ্রীদেবী বলেন, “ওই সময় জয়িতা তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। কিন্তু বাবা বাড়িতে না থাকায় কথা বলতে পারেনি।” গীতশ্রীদেবীর দাবি, “ওই সময় জয়িতা তাঁর কলেজের এক সহপাঠীকে ফোন করে বিপদে পড়ার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পরে আর ওর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।”
জয়িতার বাবা কালিপদ নায়েক বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি মেয়ে কলেজে গিয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যায় আমার সঙ্গে ফোনে কথাও হয়। শুক্রবার বাড়ি আসার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবারই যে বাড়ি ফিরবে তা জানায়নি। কী করে যে কী হয়ে গেল বুঝতে পারছি না!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.