দুর্গাপুর ঘুরে দেখা গেল, সাবেক বাজারে ছাড়ের রমরমা না থাকলেও শপিংমলগুলিতে জামাকাপড় থেকে ঘড়ি, গয়না সবেতেই আলাদা আলাদা ছাড় চলছে। পকেট ভর্তি থাকলেই হল। তাই প্রিয়জনকে পছন্দের জিনিস উপহার দেওয়ার এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না অনেকেই। যেমন, বছরের অন্য সময় যে ব্রান্ডেড সানগ্লাসের দাম হাজার টাকা সেটাই এখন মিলছে মাত্র ছ’শো টাকায়।
শহরের একটি বড় বিপণীতে গিয়ে দেখা গেল, সানগ্লাসে ২৫-৪০ শতাংশ, ঘড়িতে ২০ শতাংশ, জামাকাপড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় চলছে। সমস্ত বড় দোকানেই কমবেশি এরকমই নানা অফার চলছে। অনেকেরই উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ কলম। শহরের সিটিসেন্টার চত্বরের একটি বড় দোকানে প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে কলমের দামে। এছাড়া ১৮ ক্যারেট সোনা ও খাঁটি হীরের গয়নায় ২৫ শতাংশ ছাড় চলছে। ২৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে প্লাটিনামের গয়নাতেও, সঙ্গে রুপোর গয়নাতেও ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। কোথাও আবার একটির সঙ্গে অন্যটি মিলছে বিনামূল্যে।
|
ইস্পাত নগরীর এ-জোন থেকে সিটি সেন্টারের একটি শপিংমলে কেনাকাটি করতে এসেছিলেন অনিতা বসাক। তাঁর ইচ্ছে ভ্যালেন্টাইন ডে-তে একটি সুদৃশ্য ঘড়ি দেবেন প্রিয়জনকে। ঘড়ি কেনার পরে বললেন, “বছর সাতেক প্রেম করছি। প্রত্যেক বছর দু’জনেই দু’জনকে কিছু না কিছু উপহার দিই। কিছু একটা না দিলে মনটা খারাপ লাগে।” একটি নামী চশমার দোকানে সানগ্লাসে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় চলছে। সেখানে প্রিয়জনের জন্য সানগ্লাস কিনতে এসেছিলেন দুর্গাপুর বাজার এলাকার এক তরুণী স্নিগ্ধা কর্মকার। তাঁর যুক্তি, “কম দামে ব্রান্ডেড জিনিস পাচ্ছি। তাই পাড়ার দোকান ছেড়ে এখানেই এলাম।” অনেকে আবার ভিড় জমিয়েছেন গয়নার দোকানে। শহরের এক নামী গয়নার দোকানে দেখা মিলল বিধাননগরের তরুণ দম্পতি দীপঙ্কর ও ঈশিকার সঙ্গে। দু’জনেই বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। দীপঙ্কর জানালেন, ঈশিকাকে উপহার দেবেন বলে পছন্দের জুয়েলারির খোঁজে এসেছেন।
কিন্তু শুধু উপহার দিলেই কী হবে, সারাদিন দু’জনে ঘোরাফেরা করতে গেলে পেটের ইঞ্জিনেও তো তেল ঢালতে হবে। অনেক রেঁস্তোরাতেও তাই নানারকম লোভনীয় ছাড়া এবং প্যাকেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিটি সেন্টারের একাধিক রেঁস্তোরায় খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, লাঞ্চ বা ডিনারের প্যাকেটে আকর্ষণীয় ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এমনই একটি রেেঁস্তারার কর্মী জানালেন, অনেকেই সারাদিন প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুড়ে বেড়ানোর পরিকল্পনা করে বেরোন। পার্কে ঘুরে দুপুরের লাঞ্চ সেরে বিকেলে সিনেমা দেখে, শপিংমলে ঘুরে রাতে ফের রেস্তোঁরায় পেটপুজো সেরে বাড়ি ফেরা। সেকথা মাথায় রেখেই লাঞ্চ ও ডিনারে এমন ছাড়ের বন্দোবস্ত। মন্দিরে পুজো দিতে ছাড় না থাকলেও ভিড় ছিল সেখানেও। প্রেমিক-প্রেমিকাদের বক্তব্য, ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদ না পেলে কি কোনও ভাল কাজ হয়?
প্রেমের দিনটাকে বিশেষ করে তুলতে বিভিন্ন পার্ক, শপিংমল, রেঁস্তোরাগুলিও নিজেদের সাজিয়েছে। রঙবেরঙের বেলুন, রকমারি আলোর সাজে ঝলমলে হয়ে উঠেছে তারা। লম্বা লাইন ছিল মাল্টিপ্লেক্সেও।
এছাড়া অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশি টহল ছিল। পুলিশের হাজিরা ছিল পার্কের আশপাশেও। |