বল ভেবে খেলতে গিয়ে স্কুলের ছাদে পড়ে থাকা বোমা ফেটে জখম হল পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্র। বৃহস্পতিবার সকালে খানাকুলের পলাশপাই-২ পঞ্চায়েত এলাকার খুনিয়াচক জুনিয়র হাইস্কুলের ঘটনা। সংলগ্ন শান্তিমোহন রায় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা সিপিএমের খানাকুল জোনাল কমিটির সদস্য নীলরতন দলুই ওই বোমা রেখেছিলেন, এই অভিযোগ তুলে এক দল গ্রামবাসী এ দিন স্কুলে ঢুকে তাঁকে মারধর করে। তার পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বোমা রাখার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নীলরতনবাবু। চক্রান্ত করে তৃণমূলের লোকজনই তাঁকে মারধর করেছে এবং ফাঁসিয়েছে বলে তাঁর দাবি।
পুলিশ জানায়, স্কুলের ছাদে কী ভাবে বোমা এল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুষ্কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগে শান্তিমোহন রায় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুনিয়াচক গ্রামের বাসিন্দা, শেখ আনারুল নামে আহত ওই ছাত্রকে স্থানীয় নতিবপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। তার ডান চোখে আঘাত লেগেছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে দেখিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়ায় আনারুলকে এ দিনই কলকাতায় নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দু’টি স্কুল একই চত্বরে। এ দিন বোমা ফাটার ঘটনাটি ঘটে সকাল ১০টা নাগাদ। তখনও দু’টি স্কুল শুরু হয়নি। শিক্ষকরাও এসে পৌঁছননি। জুনিয়র হাইস্কুলের কিছু ছাত্র স্কুলের সামনের মাঠে ফুটবল খেলছিল। হঠাৎই বল ছাদে চলে যায়। বল আনতে যায় শেখ আনারুল, তার সহপাঠী শেখ সামাদ এবং অষ্টম শ্রেণির শেখ আরাফাজ। তার পরেই ওই বিপত্তি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আরাফাজ বলে, “গোল মতো দড়িতে জড়ানো জিনিসটা আনারুল ঠুকতেই ফেটে গেল। তা থেকে পাথরকুচির মতো কী সব ছিটকে বেড়িয়ে ওর চোখে লাগল। আমাদের হাতে পায়েও অল্প লাগল।” আনারুলের বাবা শেখ আশারথ বলেন, “স্কুলের ছাদে বোমা কী করে গেল সেটাই প্রশ্ন। ছেলের চোখটার ক্ষতি না হলেই মঙ্গল।”
শান্তিমোহন রায় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক নীলরতনবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূল দীর্ঘদিন ধরেই মারধরের হুমকি দিচ্ছিল। পরিকল্পিত ভাবে ছাদে বোমা রেখে এ বার আমাকে ফাঁসালো। মারধর করল। তৃণমূলের এই নোংরামিতে ছাত্রটির বড় কোনও বিপদ ঘটেনি এটাই রক্ষে।” খানকুলের তৃণমূল নেতা তথা খানকুল ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের অসিত সিংহরায় নীলরতনবাবুকে মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় তৃণমূল যুক্ত নয়। গ্রামবাসীরা সন্দেহের বশে ওই ঘটনা ঘটাতে পারে।” |