স্বামীর সঙ্গে আত্মীয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণে গিয়েছিলেন মহিলা। সেখান থেকে ফেরার পথে রাস্তা আটকে, স্বামীকে হাত-পা বেঁধে মাঠে ফেলে, মহিলাকে রাস্তার পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল একই বাড়িতে নিমন্ত্রিত দুই যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে বর্ধমানের কাঁকসায় ওই ঘটনার পরে, মহিলার স্বামী কোনও মতে বাঁধন খুলে লাগোয়া গ্রামে খবর দিলে, বাসিন্দারা গিয়ে দু’জনকে
ধরে ফেলেন। পরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
এই ঘটনায় পুলিশ প্রথমে ধর্ষণের অভিযোগ নিতে চায়নি বলে অভিযোগ করেছে সিপিএম। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই অভিযোগে তারা পানাগড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধও করে। আধ ঘণ্টার অবরোধের জেরে যানজটে ভোগান্তি হয় যাত্রীদের। সিপিএমের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “গণধর্ষণের মামলা দায়ের হয়েছে। দুর্গাপুর হাসপাতালে ওই মহিলা ও অভিযুক্ত দু’জনের ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসার পিয়ারিগঞ্জ গ্রামে বুধবার দুপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণ ছিল কাছাকাছি গ্রামের বাসিন্দা ওই দম্পতির। লাগোয়া বেলডাঙা আদিবাসীপাড়ার সুকুমার মুর্মু ও শিবা মুর্মুও গিয়েছিল সেখানে। বছর পঁয়তাল্লিশের ওই মহিলার স্বামীর অভিযোগ, সন্ধ্যায় তাঁরা সাইকেলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। ফেরার রাস্তায় পড়ে বেলডাঙা গ্রামটি। গ্রামের কিছুটা আগে রাস্তায় হাজির হয় ওই দুই যুবক। তারা প্রথমে তাঁর কাছে পাঁচ হাজার টাকা চায়। সঙ্গে টাকা নেই জানানোয় মহিলার স্বামীকে একপ্রস্ত মারধরের পরে পিছমোড়া করে হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে মাঠে ফেলে দেয়। তার পরে তাঁর স্ত্রীকে খানিকটা দূরে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
মহিলার স্বামী জানান, কোনও রকমে হাত-পায়ের দড়ি খুলে তিনি বেলডাঙায় ছুটে গিয়ে গ্রামবাসীকে ঘটনার কথা বলেন। গ্রাম থেকে জনা আটেক যুবক তাঁকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। রাস মুর্মু, সুনীল সরেন, সুমন মাড্ডি নামে ওই যুবকদের দাবি, “গিয়ে দেখি, জঙ্গল থেকে মহিলাকে মারতে মারতে নিয়ে আসছে শিবা ও সুকুমার। আমাদের দেখে মহিলা কাঁদতে কাঁদতে গোটা ঘটনা বলেন।” দুই যুবককে গ্রামে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। দেওয়া হয় চড়থাপ্পড়ও। খবর যায় কাঁকসা থানায়। পুলিশ রাতেই ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শিবা মুর্মু আদতে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। কয়েক বছর বেলডাঙায় শ্বশুরবাড়িতে রয়েছে। ওই দম্পতি পিয়ারিগঞ্জে যাঁর বাড়িতে নিমন্ত্রণে গিয়েছিলেন, সেই আত্মীয় বলেন, “অভিযুক্তেরাও আমাদের আত্মীয়। কিন্তু তারা যে কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে শুনছি, কড়া শাস্তি হওয়া উচিত।”
|