হানার খবর ফাঁস, দূষণে পার পেয়ে যাচ্ছে কারখানা
বিভিন্ন শিল্প-কারখানা দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারা অভিযানে যাচ্ছেন। কিন্তু দোষত্রুটি বিশেষ পাচ্ছেন না। তাঁরা ফিরে যাওয়ার পরে কারখানা ফের দূষণ ছড়াচ্ছে পুরোদমে। রহস্যটা কী?
অনুসন্ধানে পর্ষদ জেনেছে, অভিযানের খবর আগেই চলে যাচ্ছে শিল্প-কারখানাগুলির কাছে। ফলে দূষণ ছড়ানো সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিচ্ছে তারা। পর্ষদকর্তারা গিয়ে দেখছেন, সব মোটামুটি ঠিকই আছে। অভিযানের পালা চুকেবুকে যাওয়ার পরে ফের দূষণের পোয়াবারো। অর্থাৎ শিল্প-কারখানার দূষণ ধরে প্রতিকার করবে যারা, সেই পর্ষদেই দুর্নীতির দূষণ। পরিবেশবিদদের বক্তব্য, পরিবেশবিধি বলবৎ করার ক্ষেত্রে কর্মীর অভাব ও পরিকাঠামোর সমস্যা তো রয়েছেই। তার উপরে কর্মীদের একাংশের দুর্নীতির জন্য অভিযানের খবরও ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশবিধি রূপায়ণের চেষ্টা সফল হচ্ছে না। দূষণ চলছেই।
খবর ফাঁসের কথা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে তাঁদের দাবি, কর্মী ও পরিকাঠামোর অভাবটাই পরিবেশবিধি বলবৎ করতে না-পারার বড় কারণ। কী ভাবে গোটা দেশে পরিবেশবিধি রূপায়ণ করা যায়, তা নিয়ে চলতি মাসের শেষে সব রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে নিয়ে বৈঠক করবে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক।
সোমবার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক অনুষ্ঠানে জাতীয় সবুজ আদালতের সদস্য রঞ্জন চট্টোপাধ্যায় জানান, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, অনেক রাজ্যেই কর্মীর অভাবে নজরদারিতে ফাঁক থাকছে। নজরদারির সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ আইন আরও কঠোর করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
সুইডেন ও নরওয়ের পরিবেশ মন্ত্রকের অফিসারেরাও এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ওই সব দেশে কী ভাবে দূষণ-বিধি বলবৎ হয়, অতিথিরা তা ব্যাখ্যা করেন। তাঁরা জানান, তাঁদের পরিবেশ-কর্তারা শিল্প-কারখানায় হানা দিয়ে একটানা কয়েক দিন নজরদারি চালান। সরকারি স্তরে নজরদারির জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে পুরসভা পর্যন্ত পরিবেশ শাখা থাকে। সুইডেনের পরিবেশ দফতরের উপদেষ্টা ইলভা রেইনহার্ড বলেন, “নতুন প্রজন্মকে দূষণমুক্ত পরিবেশ দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
দূষণ নিয়ন্ত্রণে সুইডেন-নরওয়েতে নজরদারির এমন লাগাতার ব্যবস্থার ব্যাপারে এ দেশের পরিবেশবিদেরাও আগ্রহ প্রকাশ করেন। ত্রিপুরা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান মিহির দেব বলেন, “রাজ্যে ফিরে আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদেরও টানা নজরদারি চালাতে বলব।” পশ্চিমবঙ্গেও এই ব্যবস্থা চালু করা যায় কি না, পর্ষদের কর্তারা তা খতিয়ে দেখছেন।
তবে টানা নজরদারি চালালেই যে পরিবেশবিধি পুরোপুরি বলবৎ করা যাবে, অনেকে তা মনে করেন না। তাঁদের অভিযোগ, অনেক সময়েই দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ঘটে। দেশের নেতা ও মন্ত্রীরা এ ব্যাপারে সচেতন না-হলে পরিবেশবিধি কতটা রূপায়ণ করা যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে পরিবেশবিদদের। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন অফিসার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, “গঙ্গার দূষণের জন্য রাজ্যের বহু পুরসভা ও পঞ্চায়েত দায়ী। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি রাজনৈতিক কারণে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.